ভোক্তাদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ সংশোধন এবং ভোক্তাদের কল্যাণের কথা চিন্তা করে পৃথকভাবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে ক্রেতা সুরক্ষা আন্দোলন ভলান্টারি মুভমেন্ট কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস বাংলাদেশ-সিআরবি।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২৩ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত ৫ম সিআরবি কনজিউমার এ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব দাবি জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিদ্যমান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ভোক্তাদের অধিকারকে তেমন কোন গুরুত্বই দেয়া হয়নি। ভোক্তারা নানাভাবে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আইনে নানা ত্রুটি থাকায় ভোক্তারা আইনি ব্যাবস্থা নিতে গিয়ে অনেক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ সমস্যা সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ সংশোধন করা প্রয়োজন।
তারা আরও বলেন, এত কোটি ভোক্তাদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষায় কোন পৃথক মন্ত্রণালয় না থাকা আসলেই লজ্জাকর। বর্তমানে ব্যবসায়ীদের জন্য নিয়োজিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি ক্ষুদ্র অধিদপ্তরের মাধ্যমে ভোক্তাদের অধিকার নিয়ে কিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও এটিও প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য। আর ভোক্তাদের জন্য সবকিছুর ভার দেয়া হয়েছে ব্যবসায়ীদের উপর যা কখনো কাম্য নয়। তাই তাদের অধিকার সুরক্ষায় পৃথক একটি মন্ত্রনালয় গঠন করতে হবে।
সিআরবি এর মহাসচিব এবং সেলফ এইড ফাউন্ডেশন এর প্রধান নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতা ডিজাইনার কে.জি এম সবুজ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিআরবি এর সভাপতি ও সেলফ এইডের চেয়ারম্যান আ হ ম কামরুজ্জামান।
তিনি বলেন, দেশে আজ খাদ্য পন্যের দাম নাগালের বাহিরে। সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করলে সিন্ডিকেটের হাত থেকে এই দাম রক্ষা পাবে না। বরং দিনদিন জনগনের ক্রয়ক্ষমতার বাহিরে চলে যাবে।
অনুষ্ঠানে ভোক্তাদের অধিকার আদায়ে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, শোভনছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো: নুরুল আলম (নুরু)। তিনি বলেন, দেশ আজ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে গড় আয়ু বাড়ছে, কিন্তু হাসপাতালের দিকে তাকালে দেখবেন রোগীদের অসংখ্য ভিড়। এর মূলেই রয়েছে খাদ্যে ভেজাল। এই খাদ্য ভেজাল দূর করতে না পারলে আমাদের অগ্রগতি আসবে না। খাদ্যে ভেজাল দূরীকরণে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
অনুষ্ঠানে ভোক্তাদের সেবাদানে বিশেষ অবদান রাখায় দেশের দেশের আট বিভাগের ১০ টি শ্রেণি-পেশার পেশাজীবিকে কনজিউমার এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। পাশাপাশি ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে অবদানের জন্য সিআরবি এর ৫ জন স্বেচ্ছাসেবীকে পুরস্কৃত করা হয়।
এছাড়া অনুষ্ঠানে, বিশ্ব-নিরাপদ খাদ্য দিবস এর স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবী, কনজিউমার এক্টিভিস্ট এবং দেশের ৪৩টি জেলা, উপজেলা ও মহানগরে সিআরবি এর কমিটির সদস্যরা অংশ নেন।
উল্লেখ্য, স্বেচ্ছাসেবী জাতীয় ভোক্তা ও মানবাধিকার সংগঠন সেলফ এইড ফাউন্ডেশনের ভোক্তা অধিকার সচেতনতা ও গবেষণা প্রকল্প “কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস বাংলাদেশ-সিআরবি" ২০০৭ থেকে ক্রেতা সচেতনতায় কাজ করে আসছে।
ভোরের আকাশ/নি