শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার চরসেন্সাস ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ডবাসীর চলাচলের একমাত্র রাস্তাটির বেহাল দশা। এর ফলে দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
নরসিংহপুর খায়ের পট্টি আশরাফ বেপারিকান্দী স্কুল হয়ে মালেক বেপারি বাড়ি ও মনা বেপারি বাড়ি হয়ে আবুল শেখের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি এখনো পাকা হয়নি। ওই রাস্তাটি প্রতিদিন প্রায় ১০-১২ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি দেখে মনে হয় হাল চাষ করার জমি। কর্দমাক্ত রাস্তা দিয়ে চলাচলে এলাকাবাসীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজের ছাত্র ছাত্রীসহ শিশু শিক্ষার্থী ও পথচারী এবং মসজিদের মুসল্লিদের চলাচলে দুর্ভোগের শেষ নেই।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী। এ রাস্তা দিয়ে চরসেন্সাস ইউনিয়ন, বালারহাট, হরিণা ফেরিঘাট, নরসিংহপুর, খায়েরপট্টি হয়ে নদীর পাড় পর্যন্ত যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি। তাছাড়াও ভেদরগঞ্জ থেকে অল্প সময়ে ফেরিঘাট যেতে কয়েক হাজার মানুষ এই পথে চলাচল করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সবাই মিলে একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার, প্রশাসন, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো কাজ করেননি। তাই ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তফা বেপারি বলেন, সামান্য বৃষ্টিতে কিছু কিছু এলাকায় হাঁটু পর্যন্ত কাদা হয়ে যায়। এছাড়াও পাশের মাঠের সব ফসল এই রাস্তা দিয়ে বাড়ি নিতে হয়। এই রাস্তা দিয়েই কৃষি পণ্য বাজারজাত করা হয়। আমাদের এ কষ্ট কবে দূর হবে তার কোনো ঠিক নেই।
স্থানীয় দারুসসুন্নাত ছালেহীয়া দানীয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মো. এরশাদ আলী বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। তাদের চলতে খুবই সমস্যা হয়। জরুরি সেবার কোনো গাড়ি বা যেকোনো গাড়ি গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না। হিন্দু বা মুসলিম কেউ মারা গেলে কাদার কারণে সৎকার, দাফন-কাফনে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। অতি প্রাচীন রাস্তাটি পাকাকরণ এখন সময়ের দাবি।
চরসেন্সাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার বালা বলেন, আমার নির্বাচনী ইশতেহার ছিল এই রাস্তাটি করে দেয়া। তবে এখনো করে দিতে পারিনি। মাত্র দুই কিলোমিটার রাস্তাটি পাকা না হওয়ায় দীর্ঘদিন দুর্ভোগে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। এলাকাবাসী এই রাস্তা দিয়েই মাঠ থেকে জমির ফসল ঘরে তোলেন।
এ ছাড়াও স্থানীয় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও পণ্যসামগ্রী কেনাকাটা করতে যাতায়াত করতে হয় এলাকাবাসীকে। জনদুর্ভোগ ও বিড়ম্বনার অবসান ঘটাতে রাস্তাটি পাকা করা প্রয়োজন। তিনি রাস্তাটি পাকা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হবে।
ভোরের আকাশ/নি