logo
আপডেট : ২২ অক্টোবর, ২০২৩ ১০:৩৭
কঠোর হস্তে মোকাবিলা করবে আওয়ামী লীগ
নিখিল মানখিন

কঠোর হস্তে মোকাবিলা করবে আওয়ামী লীগ

নিখিল মানখিন: পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মারমুখী অবস্থানে রাজনৈতিক মাঠে ফের সংঘাতের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে এই মুহূর্তে ‘সর্বোচ্চ’ গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির এই মহাসমাবেশের বিপরীতে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ।

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি ইতোমধ্যে ‘ মরণ কামড়’ দেয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে। আর তা কঠোর হস্তে মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সংঘাতের শঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। চলতি বছরের নভেম্বরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান। সম্প্রতি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান এ কথা বলেন।

 

তিনি বলেন, চলতি বছরের নভেম্বরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করছে নির্বাচন কমিশন।

 

নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, ‘সব দলের অংশগ্রহণ কিন্তু আমাদের ওপর নির্ভর করে না। দলের অংশগ্রহণ করা নির্ভর করে দলের সিদ্ধান্ত, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর। এতে আমাদের এখতিয়ার নাই। তবে আমরা নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করব বলে জানান মো. আনিছুর রহমান।

 

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রগুলো বলছে, সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচন করার প্রশ্নে বিএনপিকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগ। নানা কৌশলে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর চাপের তীব্রতা বাড়ানো হবে। বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সরকার ও আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দিক থেকে যৌথ পরিকল্পনা করছে।

 

সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কয়েক দিন ধরে যে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করেছে, তা অব্যাহত থাকবে। বিএনপির যেসব নেতা লোক জমায়েতে ভূমিকা রাখেন এবং কর্মীদের ওপর যাদের প্রভার রয়েছে এসব নেতাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। অন্যদিকে ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে কড়া পাহারাও বসানো হবে।

 

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, বিএনপিকে চাপে রাখতে ২৮ অক্টোবরেই বড় সমাবেশ থাকবে আওয়ামী লীগের এখন পর্যন্ত সেই নির্দেশনা আছে। তবে এর বাইরেও প্রয়োজন হলে ‘সতর্ক পাহারা’ এর নামে মিছিল হতে পারে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো ঢাকায় একটি বড় সমাবেশ করবে। এর বাইরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্ক পাহারার ব্যবস্থাও রাখা হতে পারে।

 

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, বিএনপিকে চাপে রাখতে ২৮ অক্টোবরেই বড় সমাবেশ থাকবে আওয়ামী লীগের এখন পর্যন্ত সেই নির্দেশনা আছে। তবে এর বাইরেও প্রয়োজন হলে ‘সতর্ক পাহারা’র নামে মিছিল হতে পারে। কাল রোববার নাগাদ কর্মসূচি চূড়ান্ত হতে পারে। তবে শেষ মুহূর্তে কর্মসূচি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের জন্য বিএনপির নেতা-কর্মী যারা আসবেন, তাদের দলটি ঢাকায় রেখে দিতে পারে। এরপর লাগাতার সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান ঘেরাও কর্মসূচি দিতে পারে। ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত বড় কিছু করার লক্ষ্য বিএনপির। এ পরিস্থিতিতে বিএনপিকে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ করতে দেয়া ঠিক হবে কি না, এই আলোচনাও আছে সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে। তাদের কেউ কেউ গত বছরের ১০ ডিসেম্বরের মতো সড়কে সমাবেশের অনুমতি না দেয়ার পক্ষে।

 

শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বার কাউন্সিলের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন এবং আইনজীবী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি, জামায়াত এবং আরো অনেকেই মাঠে নামতে চায়। আন্দোলন করুন, আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। কিন্তু তারা যদি আবার ওই রকম অগ্নিসন্ত্রাস, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করে আমরা কিন্তু ছেড়ে দেব না। এটা বাস্তবতা বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

 

২৮ অক্টোবর বিএনপির পরিণতি ১০ ডিসেম্বরের মতো হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গত শুক্রবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর বেগম জিয়া দেশ চালাবেন বলে দম্ভোক্তি করেছিল বিএনপি।

 

১০ ডিসেম্বরের মতো ২৮ অক্টোবরও তাদের একই পরিণতি হবে। শুধু চিন্তা করছি কোথায় গিয়ে খাদে পড়বে। ১০ ডিসেম্বর গোলাপবাগের গরুর হাটের খাদে পড়েছিল, এটা কোথায় যায় সেটা দেখার অপেক্ষায়।’

 

ভোরের আকাশ/নি