সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের কাগজে-কলমে যে ধারণ ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে সেখানে ধারন ক্ষমতার চেয়ে প্রায় পাঁচ গুন বেশি হাজতি ও কয়েদি বন্দি আছেন। বন্দিদের খাবারের সমস্যা না হলেও ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বিপুল পরিমাণ বেশি বন্দি থাকায় স্বাভাবিকভাবে থাকার কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।
তবে সেসময়ে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বড় করে ও বেশি ভবন নির্মাণ করে কারাগার তৈরি হওয়ায় বন্দিদের থাকতে খুব বেশি সমস্যা হচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগার কতৃপক্ষ।
সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার মোহাম্মদ ইউনুস জামান জানান, সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারটি ৩৩২ জন পুরুষ ও ২০জন নারী বন্দি (হাজতি ও কয়েদি) মিলে মোট ৩৫২ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন হলেও এখানে এখন পর্যন্ত মোট আসামি ও কয়েদি মিলে বন্দি আছে ১৭৫৬ জন। এর মধ্যে নারী বন্দি আছেন ৬২ জন। এই ১৭৫৬ বন্দির ভিতরে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি আছেন ৩৫৪ জন। এর মধ্যে নারী কয়েদি আছেন ৯জন। মোট বন্দির মধ্যে ৫৩ জন নারীসহ হাজতি আছেন মোট ১৪০২ জন। যারা বিভিন্ন মামলায় জেল হাজতে রয়েছেন।
যা হিসেব করলে দেখা যায় ধারণ ক্ষমতার (ধারণ ক্ষমতা ৩৫২ জন) চেয়ে বন্দির (বন্দি আছেন ১৭৫৬ জন) সংখ্যা প্রায় পাঁচগুণ (৪.৯৮৮) বেশি।
কারা কতৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, জেলা কারাগারে বন্দিদের জন্য মোট ৭টি ভবন রয়েছে। এর মধ্যে তিন তলা ভবন দুটি, দুইতলা ভবন একটি ও একতলা ভবন রয়েছে চারটি। যে ভবনগুলোতে বন্দিরা থাকছেন।
কারাগারের জেলার মোহাম্মদ ইউনুস জামান বলেন, বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি বন্দি আছেন। তারা সবাই ওয়ারেন্টের প্রেক্ষিতে বা কোনও না কোনও মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে এসেছেন। আমাদের কাজ হলো যারা এখানে আসবেন তাদের দেখাশোনা করা, ভালো রাখা ও ভালোর পথে আনার চেষ্টা করা।
তিনি আরও বলেন, বন্দি কয়েকগুণ বেশি হলেও আমাদের দায়িত্ব পালনে কোনও সমস্যা হচ্ছেনা। আমাদের যথেষ্ট জনবল রয়েছে। আরও কয়েকশত বন্দি আসলেও আমাদের দায়িত্ব পালনে সমস্যা হবেনা। এ ছাড়াও যেহেতু বন্দি হিসেব করে নিয়মানুযায়ী খাবার দেওয়া হয় তাই বন্দিদের খাবারের কোনও সমস্যা নেই। তবে থাকার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা তো হবেই।
সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের সুপার এ.এস.এম কামরুল হুদা বলেন, সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে ধারন ক্ষমতা ৩৫২ জনের হলেও সেই সময়ে যে ভবনগুলো করা হয়েছিল সেখানে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি বন্দি থাকতে পারেন। আমাদের এখানে কমবেশি ১৫০০ এর মতো বন্দি প্রায় সবসময়ই থাকে। যার ফলে সেরকম কোনও সমস্যা হয়না। তবে এই মুহুর্তে বন্দি তার চেয়ে একটু বেশি। তবে তাতেও সমস্যা হচ্ছেনা জানিয়ে তিনি বলেন, বন্দি দুই হাজারের উপরে গেলে একটু সমস্যা হবে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু বন্দি বেশি তাই স্বাভাবিকভাবেই বন্দিরা ওতোটা রিলাক্সে থাকতে পারেন না। তবে খাবারের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হয়না। কারণ ব্রিটিশদের সময় থেকেই বন্দিদের ডায়েটের (খাবারের) নিয়ম হলো- বন্দি যতজন থাকবেন ততজনের ওপরে নিয়মানুযায়ী যে যতটুকু খাবার পান তার ওপরে গুণ করে খাবার দেওয়া হয়।
যে কয়জন বন্দি থাকবেন তারা একেকজন সরকারি নিয়মানুযায়ী যে খাবার পাওয়ার কথা সেই অনুযায়ীই যতজনই থাক ততজনেরই খাবার রান্না হবে এবং প্রত্যেকে সঠিক ও সমান খাবার পাবেন। ফলে বন্দি বাড়লেও খাবারে কোনও সমস্যা নেই।
ভোরের আকাশ/নি