logo
আপডেট : ৫ নভেম্বর, ২০২৩ ১৫:৫৪
সীতাকুণ্ডে অপরূপ সৌন্দর্যের সহস্রধারা
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

সীতাকুণ্ডে অপরূপ সৌন্দর্যের সহস্রধারা

ক্যাপশন: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ছোট দারোগারহাটের সহস্রধারা ঝরনায় পর্যটকদের সমাগম

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ২নং বারৈয়াঢালা ইউনিয়নস্থ ছোট দারোগারহাট জাতীয় উদ্যান অসংখ্য পর্যটকদের সমাগম ও দর্শনার্থীদের পদভারে মুখর হয়ে উঠেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মাধুর্যে অপার সমৃদ্ধি, জীববৈচিত্রে ভরপুর সহস্রধারা লেক ও ঝরনায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে পর্যটকদের আনাগোনা।

 

উপজেলার বারৈয়াঢালা ইউনিয়নস্থ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন ছোট দারোগারহাটের পূর্ব দিকে পাহাড়ে রয়েছে সহস্রধারা লেক ও ঝরনা। পূর্বদিকে রেললাইন অতিক্রম করে পাহাড়ি দুর্গম পথ হেঁটে প্রায় আড়াই কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেই দেখা দিবে সহস্রধারা প্রকল্পের বাঁধ। গাছ-গাছালির অপরূপ সৌন্দর্য আর নানা পাখির কলকাকলিতে মুখরিত বাঁধের সৌন্দর্যে হেঁটে আসার ক্লান্তি মুহূর্তেই দূর হয়ে যায়। বাঁধের বাম পাশে গাছগাছালিতে ঢাকা হাজার বছরের প্রাচীন লবণাক্ষ মন্দির। ডানপাশে রয়েছে পানি ব্যবস্থাপনা সমিতি ও সিএমসির অফিস। হ্রদে রয়েছে হস্তচালিত দুটি নৌকা।

 

স্থানীয় বাসিন্দা ডা. কমল কদর ভূঁইয়া বলেন, বাঁধের উপরে উঠলে দেখা যাবে ৩ দিকে পাহাড়ঘেরা বিশাল নয়নাভিরাম হ্রদ। মূলত সহস্রধারা ঝরনার পানি আটকে রাখতে সৃষ্টি করা হয়েছে এ কৃত্রিম লেক। ঝরনার শীতল পানিতে নিজেকে ভিজিয়ে নেয়ার পাশাপাশি সহস্রধারার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা।

 

অভিনেতা মো. সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, চারপাশে পাহাড়ের সবুজ শ্যামল পরিবেশ সহস্রধারাকে করেছে নয়নাভিরাম।

 

পূর্ব লালানগরের বাসিন্দা মো. জিয়াউল হক আরিফ বলেন, পাহাড় আর সমুদ্র বরাবরই আকৃষ্ট করে ভ্রমণপ্রেমীদের। সীতাকুণ্ড উপজেলা পাহাড় আর সমুদ্রে অপরূপ। নয়নাভিরাম সহস্রধারা ছাড়াও সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়, বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক, ভাটিয়ারি লেক, আকিলপুর ও গুলিয়াখালী সী-বিচের মতো দৃষ্টিনন্দন স্পটগুলো প্রতিনিয়ত আকৃষ্ট করছে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। সীতাকুণ্ডকে দেশ-বিদেশে মর্যাদার আসনে তুলে ধরতে পর্যটন স্পটগুলোর রয়েছে বিশেষ ভূমিকা।

 

উপজেলার দক্ষিণ রহমতনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লক্ষণ চন্দ্র দে বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপার সমৃদ্ধি আর জীববৈচিত্র্যে ভরপুর সহস্রধারায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে পর্যটকদের আনাগোনা। দর্শনার্থীদের কাছে সহস্রধারা ঝরনাসহ জাতীয় এ উদ্যান খুবই আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। তবে পর্যটকদের অসতর্কতায় ঘটছে দুর্ঘটনাও। সম্প্রতি লেকের পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে নড়াইল জেলার লোহাগাড়া উপজেলা থেকে আগত পর্যটক সোহানুর রহমান। যা খুবই দুঃখজনক ঘটনা।

 

পর্যটন স্পটগুলোতে দুর্ঘটনাকালীন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে উপজেলায় একটি ডুবুরি টিমের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার মো. নুরুল আলম দুলাল।

 

জাতীয় উদ্যান ব্যবস্থাপনা কমিটির অফিস সূত্রে জানা যায়, পর্যটকদের আনন্দ দেয়া ছাড়াও শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ২ হাজার কৃষক এ হ্রদের পানি কৃষিকাজে ব্যবহার করে। দর্শনার্থীদের কাছে সহস্রধারা ঝরনাসহ জাতীয় এ উদ্যানকে আরো আকর্ষণীয় করতে বন বিভাগের (ইউএসএইড) ক্রেল প্রকল্পের আওতায় নেয়া হয়েছে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প। নির্মাণ করা হয়েছে পিকনিক স্পট, বিশ্রামাগার ও টয়লেট। হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন।

 

ভোরের আকাশ/মি