গাজীপুরের শ্রীপুরে পাইকারি কাঁচা বাজারে শীতের আগাম সবজি আসতে শুরু করেছে। তবে অবরোধের কারণে গত কয়েক দিনের তুলনায় পাইকারি বাজারে সবজির আমদানি অনেক কম। এর ফলে চাহিদা বেশি থাকায় দামও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি সবজির আমদানি আছে, কিন্তু পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বেশি নিচ্ছে। এর ফলে চড়া মূল্যে কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে। সরেজমিন রোববার সকালে শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা পাইকারি কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়েছে। পাইকারি বাজারের তুলনায় প্রায় দেড়গুণ দামে সবজি বিক্রয় করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। এমন অভিযোগ করছে সাধারণ ক্রেতারা। শীতের শুরুতে শ্রীপুরের বিভিন্ন কাঁচা বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। সবজির পাশাপাশি বেড়েছে পেঁয়াজ, রসুন ও কাঁচামরিচের দাম। এতে বিপাকে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
বাজারদর সহনশীল রাখতে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পণ্যবাহী যানবাহনের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বাড়তি উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। যেকোনো অজুহাতে যাতে আবারো বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী না হয় সে জন্য স্থানীয় প্রশাসন তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর ইউএনও তরিকুল ইসলাম।
মাওনা চৌরাস্তা পাইকারি কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী জলিল মিয়া জানান, গত কয়েকদিনের তুলনায় রোববার সবজি কম এসেছে। তবে দাম একটু বেশি থাকলেও সেটা সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রয়েছে। আর এসব সবজি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসে। তবে স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত সবজিও বাজারে রয়েছে।
কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার জানান, শীতের শুরুতে কাঁচামালের ঘাটতি না থাকলেও বিএনপির ডাকা অবরোধের কারণে বেশি ভাড়া দিয়ে মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, রংপুর, ঠাঁকুরগাঁও থেকে শ্রমিক মজুরিসহ আনুষাঙ্গিক সব খরচ মিলিয়ে একটু বেশি পড়ে যায়।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে পাইকারি দরে কেজি প্রতি ফুলকপি ৭০-৮০ টাকা দরে, শিম ১৫০-১৬০ টাকা দরে, মুলা ৪০-৫০ টাকা দরে, বাঁধাকপি ৬০-৭০ টাকা দরে, লাউ প্রতিটি ৮০-১০০ টাকা দরে, ধনিয়া পাতা ২০০-২৫০ টাকা দরে, লাল শাক ৬০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও বাজারে অন্য সবজি যেমনÑ পটল কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, পেঁপে কেজিপ্রতি ৩০-৪০ টাকা, বেগুন কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, শসা কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ কেজিপ্রতি ২০০ টাকা, চিচিঙ্গা কেজিপ্রতি ৭০ টাকা, কচু কেজিপ্রতি ১০০ টাকা, লেবু ২০ টাকা হালি, কাঁচা কলা ৫০ টাকা হালি, আলু কেজিপ্রতি ৭০ টাকা, পেঁয়াজ (দেশি) কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা, পেঁয়াজ (ইন্ডিয়ান) কেজিপ্রতি ১২০ টাকা, বরবটি কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা আটিঁ, টমেটো ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা ব্যবসায়ী আবু মূসা বলেন, আমরা তো পাইকারি বাজার থেকে এনে সবজি বিক্রি করছি। সব খরচ বাদ দিয়ে তা খুচরা বাজারে বিক্রি করতে হয়। তাই সবজির প্রকারভেদে কেজি প্রতি সর্বনিম্ন ৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা বেশি লাভে বিক্রয় করছি।
শ্রীপুর থানার ওসি আবুল ফজল মো. নাসিম জানান, পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলে সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে আমরা প্রস্তুত। আমরা পণ্যবাহী পরিবহনকে স্কট দিয়ে আন্তজেলা যোগাযোগ নিশ্চিত করার ব্যবস্থা রেখেছি। এছাড়াও পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে যৌথ টহল জোরদার করা হচ্ছে।
শ্রীপুর ইউএনও তরিকুল ইসলাম জানান, কয়েকদিন আগে থেকেই শীতকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে। তাই বাজার একটু চড়া রয়েছে। তাছাড়া সবজি পচনশীল পণ্য হওয়ায় দ্রব্যমূল্য কিছুটা ওঠানামা করছে। তবে অন্যান্য সবজির দাম কম রয়েছে। কাঁচাবাজারে সবজির দাম স্বাভাবিক রাখতে মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।
ভোরের আকাশ/মি