logo
আপডেট : ১৩ নভেম্বর, ২০২৩ ১১:১০
ধরা পড়ছে প্রচুর সামুদ্রিক মাছ, জেলেপাড়ায় স্বস্তি
পটুয়াখালী প্রতিনিধি

ধরা পড়ছে প্রচুর সামুদ্রিক মাছ, জেলেপাড়ায় স্বস্তি

জেলেদের জালে ধরা পড়ছে পোয়াসহ প্রচুর সামুদ্রিক মাছ

পায়রা বন্দরসহ কলাপাড়া উপকূলঘেঁষা সাগরের গভীর-অগভীর এলাকা ও মোহনায় প্রচুর পোয়াসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ ধরা পড়ছে। জেলেরা অপেক্ষাকৃত কম সময় এবং কম খরচে এই মাছ ধরতে পারছে। হাজার হাজার খুটা জেলেসহ ট্রলার মালিকরা এ কারণে অনেকটা স্বস্তিতে রয়েছেন। সাগরে মাছ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পরে কমবেশি ইলিশের পাশাপাশি পোয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ প্রচুর পরিমাণে ধরা পড়ায় জেলে পরিবারে স্বস্তি ফিরেছে।

 

এ বছর কলাপাড়া উপকূলে গোটা মৌসুমে তেমন ইলিশ ধরা পড়েনি। শতকরা ৬০-৭০ ভাগ ট্রলারমালিকসহ জেলেরা লোকসানের কবলে পড়েছেন। ধার-দেনায় জর্জরিত হয়ে আছেন তারা। এরপর আবার পড়েন অবরোধের কবলে। কিন্তু ইদানীং কাক্সিক্ষত ইলিশ না পেলেও প্রচুর পরিমাণে মিলছে পোয়া মাছ। পাশাপাশি অন্যান্য সামুদ্রিক মাছও মিলছে।

 

কলাপাড়ার খাজুরা সৈকত থেকে কুয়াকাটা-গঙ্গামতি-কাউয়ার চর পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ২৪ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ১০ হাজার খুটা জেলে রয়েছেন। যারা মৌসুমেও ইলিশের দেখা পাননি। সাগরের এক-দেড় কিমি দূরে অগভীর এলাকায় এরা জাল পেতে মাছ ধরে জীবিকা চালায়। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পরে এরা ভয়াবহ ইলিশের সংকটে পড়েন। বলতে গেলে পুঁজিবাট্টা হারাতে বসেছিলেন তারা। অবশেষে নভেম্বরের এ কয়দিনে প্রচুর পোয়াসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরা পড়ায় তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। কম-বেশি ছোট সাইজের ইলিশও মিলছে।

 

গঙ্গামতির বাসিন্দা খুটা জেলে মোহাম্মদ হাসান জানান, এ কয়দিনে প্রচুর পোয়াসহ ডান্ডি, লইট্টা, পাঙ্গাশ, ফাহা, ফাইলসা মাছ পাচ্ছেন। প্রতিদিন একশ থেকে দেড়শ কেজি মাছ পাচ্ছেন তারা। পাশাপাশি ১৫-২০ কেজি ইলিশ মাছও মিলছে। তিন সাইজে মাছ বিক্রি করেন তারা। বড়টা ৩০০, মাঝারি ২০০ ও ছোটটা দেড়শ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি করছেন। দৈনিক দুইবার জাল টানেন তারা। হাসানের দেয়া হিসাবে ১৫-২০ হাজার টাকা করে প্রত্যেক খুটা জেলে এ কয়দিনে লাভে রয়েছেন। একেকটি নৌকায় ৫০-৭০ হাজার টাকা লাভ করেছেন তারা। রয়েছেন এসব জেলেরা ফুরফুরে মেজাজে।

 

মহিপুর বন্দর মৎস্য ব্যবসায়ী ও আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন আহম্মেদ মাসুম জানান, অবরোধের পর এ কয়দিনে শুধু মহিপুরে কমপক্ষে আটশ মণ পোয়া মাছের আমদানি হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ তো আছেই। ইলিশও কম-বেশি ছিল। মোটকথা মাছের আমদানিতে জেলেরা অনেক স্বস্তিতে রয়েছেন। এ ছাড়া আলীপুর মৎস্য বন্দর, কুয়াকাটা, ধোলাইর মার্কেট, আশাখালী, চাপলী, ব্যুরোজালিয়াসহ বিভিন্ন ছোট-বড় মোকামে বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছের ব্যাপক আমদানি হয়েছে।

 

সিনিয়র কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, এ বছর এই অবরোধের পরে এখানকার সাগর ও নদ-নদীতে বরাবরের চাইতে তিনগুণ বেশি পোয়াসহ সামুদ্রিক মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে।

 

এটি একটি ভালো দিক উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা জানান, পোয়া মাছের ৬০-৬৫টি প্রজাতি রয়েছে। এই অঞ্চলে ৮-৯টি প্রজাতি ধরা পড়ছে। এ ছাড়া সামুদ্রিক অন্যান্য মাছও প্রচুর ধরা পড়ছে। ফলে জেলেরা যেমন স্বস্তিতে রয়েছেন, তেমনি স্থানীয় বাজারে মাছের সরবরাহ বেড়েছে। দামও সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে বলে জানান, মৎস্য কর্মকর্তা।

 

ভোরের আকাশ/নি