দিনাজপুরের বিরামপুর বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে। এর ফলে কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ কয়েকটি সবজির দাম ৩০-৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে অর্থাৎ অর্ধেকে নেমেছে।
সোমবার সকালে সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে শীতকালীন শাকসবজি ওঠায় দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। উপজেলায় অবস্থিত কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন গ্রামীণ হাটবাজারসমূহে পর্যাপ্ত শাকসবজির আমদানি হচ্ছে। কৃষকরা তাদের জমি থেকে সরাসরি বাজারে নিয়ে আসছেন সবজি। আবার অবরোধের কারণে পাইকারেরা সবজি পাঠাতে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছেন বলেও জানা গেছে। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকেরা। বিরামপুর নতুন বাজার, কাটলা, কেটরা, মুকুন্দপুর, হাবিবপুর বাজারের কয়েকজন সবজি ব্যবসায়ী ও কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
নতুন বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী দিলবার বলেন, শীতের নতুন সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে। এতে দাম কমে আসছে। আবহাওয়াজনিত বড় কোনো সমস্যা না হলে সবজির দাম আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।
উপজেলার বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, ১ সপ্তাহ আগে মানভেদে বেগুনের কেজি ছিল ৮০ টাকা। এখন বেগুনের কেজি ২০-৩০ টাকা। এ ছাড়া শিমের দাম ৮০ থেকে কমে এখন ৪০ টাকা, ৬০ থেকে ৭০ টাকার প্রতি পিস ফুলকপি ২৫-৩০ টাকা, ৫০-৬০ টাকার করলা, ধুন্দল, ঝিঙে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি মুলা ৩০ টাকা ও পেঁপে ২৫-৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মরিচের কেজি ১০০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৭০-৯০ টাকা।
বাজার করতে আসা জাকিয়া আক্তার আঁখি নামের এক ক্রেতা বলেন, বাজার করতে এসে স্বস্তি পাচ্ছি। কিছুদিন আগেও সবজির দাম আকাশছোঁয়া ছিল। এখন প্রতিটি সবজি কম দামে পাচ্ছি। ৮০ টাকার বেগুন ২০ টাকায় কিনলাম। দাম কমে যাওয়ায় আমাদের মতো সাধারণ মানুষের উপকার হলো।
তিনি আরো বলেন, বাজারে টমেটো, গাজর ও বরবটির মতো বেশকিছু সবজির দাম এখনো বেশি। দেশে ৪-৫ দিন আগে আমদানি করা আলু প্রবেশ করেছে। এতে দেশি আলু দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমেছে। আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে।
সবজির দামে স্বস্তি এলেও পেঁয়াজের বাজারে এখনো অস্থিরতা বিরাজমান। নতুন পেঁয়াজ বাজারে না আসার আগ পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনাও কম বলে জানান ব্যবসায়ীরা। খুচরায় দেশি পাতা পেঁয়াজের কেজি এখন ৫০-৬০ টাকা। আর মানভেদে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম এখন ৯০-১০০ টাকা।
কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা আলম বলেন, আগে যখন দাম বেড়েছিল, তখন মানুষ কম সবজি কিনেছেন। এখন সাধারণ ক্রেতারা ভিড় করছে দোকানে। আগাম ফসল তোলায় এখনো কিছু কিছু সবজির ক্ষেত্রে কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছে না।
বাজারে শিম বিক্রি করতে আসা কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে কিছু শিম ৬০-৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। গত বছর দেড় বিঘা জমিতে ৬০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করি। এবার লাখের মতো বিক্রি হবে বলে আশা করছি।
বিরামপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার জাহিদুল ইসলাম ইলিয়াস বলেন, এবার উপজেলায় সবজির চাষাবাদ ভালো হয়েছে। কোনোরকম রোগবালাই নেই। বাজারে সব এলাকা থেকে সবজি আসার কারণে সবজির দাম কমে গেছে।
ভোরের আকাশ/নি