logo
আপডেট : ১৫ নভেম্বর, ২০২৩ ১১:০০
সময়সূচি মানে না ডাক্তার, রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

সময়সূচি মানে না ডাক্তার, রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঈশ্বরগঞ্জ

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত রোগী আসে সুচিকিৎসার আশায়। কিন্তু চিকিৎসার বদলে ভোগান্তিই বেশি পোহাতে হচ্ছে বলে জানায় রোগীরা। কেননা ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ডাক্তার আসা-যাওয়া করে তাদের মনমতো। নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী সময়ে তারা হাসপাতালে আসেন। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডাক্তারের অপেক্ষায় থাকতে হয় রোগীদের। সরকারি নিয়মের কোনো বালাই নেই তাদের কাছে। তারা সরকারের চাকরি করবে কিন্তু সরকারের দেয়া নিয়ম মানতে নারাজ।

 

জানা যায়, সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার আসার সময়সূচি শুরু হয় সকাল ৮টা থেকে। টিকিটের দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে থাকার পর আবারও ডাক্তার রুমের সামনে গিয়ে ডাক্তার আসার অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায় রোগীদের। কখনো কখনো বেলা ১১.০০ বাজলেও ডাক্তারশূন্য থাকে কয়েকটি কক্ষ।

 

সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালের বোর্ডে লেখা রয়েছে অফিস সময়সূচি ‘সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যতিত সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। জরুরি বিভাগ সার্বক্ষণিক খোলা’। কিন্তু সকাল ৮.৪০ মিনিটে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারে টিকিট বিক্রেতা ও ডাক্তারের দরজার সামনে বেশ কয়েকজন রোগী বসে আছে। এ সময় একজন ডাক্তারও হাসপাতালে আসেনি। টিকিট কাউন্টারে ডাক্তার আসার সময় জানতে চাইলে তিনি জানান, ডাক্তার আসবে সকাল ১০টায়।

 

এ সময় সাংবাদিকের উপস্থিতির বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানায় টিকিট কাউন্টারের এনায়েতুল্লাহ। পরে দেখা যায়, সকাল ৯টা ৪৯ মিনিটে দুজন ডাক্তার তাড়াহুড়া করে ২২ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে। পরে ৯টা ৫৪ মিনিটে ১৬ নম্বর ও ১২ নম্বর কক্ষে আরও দুজন প্রবেশ করেন। এ সময় ১২ নম্বর কক্ষে ডেন্টাল কনসালট্যান্টকে না পেয়ে টেকনোলজিস্ট মাসুদের কাছে দেরি করে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টা কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবেন।

 

উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের বিজয়পুর গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রাশিদ (৫৬) নামে এক রোগী বলেন, ৮টা ৩০ মিনিট থেকে ডাক্তারের রুমের সামনে এসে বসে আছি। অনেক দূর থেকে এসে এভাবে লাইন ধরে বসে আছি ডাক্তারের জন্য। এখন প্রায় ১০টা বাজে কিন্তু এখনো ডাক্তার আসার নাম নেই।

 

সোহাগী ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামের হুসনেহা (৬০) বলেন, আমি বুড়ো মানুষ। সকাল ৮টা থেকে বসে আছি। এখনো ডাক্তার আসে নাই।

 

পার্শ্ববর্তী উপজেলা গৌরীপুরের নগুয়া গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মালেহা (৭০) বলেন, এত দূর থেকে ২ দিন ধরে আসছি। এসে বসে থাকতে হয় ডাক্তরের জন্য। গতকাল এসেছিলাম দিয়েছে টেস্ট, আজ আবার এসেছি। ২ ঘণ্টা ধরে বসে আছি ডাক্তার আসে না।

 

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লোপা চৌধুরী বলেন, আসলে এ বিষয়টি এলাকার প্রভাবে এমন হয়েছে। সকাল ৮টায় ডাক্তার আসার নিয়ম থাকলেও, এ এলাকার রোগীরাই তো এত সকালে আসে না। তবে ডাক্তারদের সময়মতো না আসাটা ঠিক নয়। নিয়ম মেনেই চলা উচিত। বিষয়টি নিয়ে আমি ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করব।

 

ভোরের আকাশ/নি