logo
আপডেট : ১৬ নভেম্বর, ২০২৩ ১০:০৩
শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি

শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

ধামরাইয়ে খেত থেকে সবজি তোলায় ব্যস্ত কৃষক

ধামরাইয়ে বেশি লাভের আশায় শীতকালীন সবজির আগাম চাষ বাড়ছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, মুলা, গাজরসহ বেশকিছু শীতের আগাম সবজি বাজারে উঠেছে। শুধু নিজেদের চাহিদার জন্যই নয়, বাণিজ্যিকভাবেও চাষ হচ্ছে এসব সবজি। অন্যান্য ফসলের তুলনায় শীতকালীন সবজি চাষ লাভজনক হওয়ায় এদিকেই ঝুঁকছেন বলে জানান একাধিক কৃষক। তাই এবার ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।

 

কৃষকরা জানান, যেকোনো ফসল আগাম চাষ হলে বাজারে চাহিদা বেশি থাকে। মুনাফাও বেশি হয়। এ বছর উঁচু জমিতে সবজি চাষে ঝুঁকছেন তারা। কম সময়ে কম খরচে বেশি মুনাফার জন্য ফুলকপি ও বাঁধাকপির জুড়ি নেই।

 

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ধামরাইয়ে ২২৮২ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

এবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নানা জাতের সবজি চাষ শুরু করেছিল কৃষকরা। বিভিন্ন এলাকার মাঠজুড়ে চাষ করা হচ্ছে শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, মুলা, লাউ, লালশাক, পালংশাক ধনিয়াপাতাসহ নানা ধরনের সবুজ শাকসবজি।

 

কৃষকরা জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ অঞ্চলে আগাম জাতের সবজির উৎপাদন ভালো হয়েছে।

 

উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নে কালামপুর গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান ও সাইদুর রহমান বলেন, ১০০ শতাংশ জমিতে ফুলকপি ও শিম সবজি চাষ করেছি। এ বছর শীতকালীন সবজি উৎপাদন করে উপযুক্ত সময়ের আগেই সবজি বাজারে নেয়ার জন্য তুলছি। এজন্য একটু আগেভাগেই চাষ শুরু করেছি।

 

কাওয়াখোলা গ্রামের কৃষক আ. মালেক বলেন, টমেটো, পুঁইশাক, ফুলকপি চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এসব সবজি বাজারেও বিক্রি করতে পারব।

 

অন্যদিকে, বাণিজ্যিকভাবে আগাম সবজি চাষে আলোড়ন তুলেছেন ধামরাই উপজেলার রোয়াইল ইউনিয়নের চরসুঙ্গর গ্রামের বাকি বিল্লাহ। তিনি বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন।

 

তিনি বলেন, শীতকালীন সবজির বাজার ধরতে ফুলকপি ও বাঁধাকপির চারা রোপণ করেছি। কার্তিক মাসের শেষ দিকে সবজি বাজারে উঠবে।

 

এজন্য নার্সারি থেকে সবজি চারা সংগ্রহ করে ২০-২৫ দিন আগে রোপণ করেছি। সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে প্রায় ১০-১৫ হাজার কপির চারা রোপণ করা হবে। প্রতিটি চারার পেছনে খরচ হবে প্রায় ৫-৭ টাকা। আড়াই থেকে ৩ মাসের মধ্যে প্রতিটি কপি ক্ষেতেই বিক্রি হবে ১৫-২০ টাকা মূল্যে। ক্ষেত থেকে ৩ মাসে ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা আয় করার আশা করছি।

 

ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, চলতি বছর ২২৮২ হেক্টর জমিতে শীতের আগাম সবজির চাষ করা হয়েছে। নতুন করে প্রায় ১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে রবি ১৮-১৯ জাতের আগাম সবজি চাষের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

 

তিনি জানান, ধামরাইয়ের কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করেছিল। সেগুলো এখন বাজারে নিয়ে এসেছে। তারা শিম, লাউ, চাল কুমড়া, টমেটোসহ শীতকালীন শাকসবজি চাষ করছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার শীতকালীন সবজি লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এ ছাড়া উপজেলা কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক নজরদারি রেখেছে। আশা করা যায়, এবার কৃষকরা ভালো দাম পাবে।

 

ভোরের আকাশ/নি