গতবছরের এই সময়ে ধানে কীটনাশক দেয়ার সময় রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন কৃষক রুহুল আমিন। গুরুতর আহত অবস্থায় অন্যান্য কৃষকরা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও জমিতে ফিরতে সময় লেগেছে প্রায় বছরখানেক। এরমধ্যে সাপের আতঙ্কে চাষাবাদ ছেড়ে দেওয়ার উপক্রম হয়েছে।
কৃষক রুহুল আমিন বলেন, জমিতে কীটনাশক দেয়ার সময়ে হঠাৎ রাসেল ভাইপার সাপে কামড় দেয়। কামড় দেয়ার পরপরই রক্ত বের হতে থাকে। পরে আশেপাশের কয়েকজন কৃষক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সুস্থ হওয়ার পর ভয়ে জমিতে আসতে পারছিলাম না। এখন ভয়ে ভয়ে জমিতে কাজ করতে হয়।
শুধুমাত্র কৃষক রুহুল আমিনই নয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কৃষকরা ভুগছেন রাসেল ভাইপার আতঙ্কে। রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রব বাড়ায় আতঙ্কে দিন পার করছেন কৃষকরা। সাপের কারনে পাঁকা আমন ধান কাটার জন্য পাওয়া যাচ্ছে না ধানকাটা শ্রমিক। এতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা কৃষকদের। শুধু ধানকাটায় নয়, সাপের ভয়ে ধানে ঠিকমতো পরিচর্যাও করতে পারছেন না তারা।
কৃষকদের দাবি, গতবছর থেকেই ধানের জমিতে ব্যাপকহারে বাড়ছে রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রব। প্রায় প্রতিনিয়ত দেখা মিলছে বিষধর এই সাপের। সাপের কামড়ে আহত-নিহতের ঘটনা ঘটছে মাঝে মধ্যেই।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত শুমাত্র এই গ্রামেই রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে মারা গেছেন ৬জন কৃষক। আহত হয়েছেন আরও অনেকেই। সাপের উপদ্রব বাড়ায় ধান কাটতে আসতে চাইছেন না শ্রমিকরা। যারা কাটছেন, তারা রয়েছেন ব্যাপক ভয় ও নিরাপত্তাহীনতায়।
কৃষিতে অধিকহারে যান্ত্রিকীকরণ ও উপজেলা পর্যায়ে এ্যান্টিভেনম সরবরাহসহ সুচিকিৎসা প্রদানকেই সংকট সমাধানের উপায় বলছেন কৃষক নেতারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, এবিষয়ে একটি সমন্বিত ব্যবস্থাপনা দরকার। কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে বনবিভাগের সহযোগিতায় জনবহুল ও ফসলী জমি থেকে এই সাপ সরাতে উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ভোরের আকাশ/নি