logo
আপডেট : ২১ নভেম্বর, ২০২৩ ১৪:৪৬
মিধিলির ধাক্কা
ভোলায় শতকোটি টাকার ক্ষতি ইটভাটা মালিকদের
ভোলা প্রতিনিধি

ভোলায় শতকোটি টাকার ক্ষতি ইটভাটা মালিকদের

পোড়ানোর জন্য রাখা কাঁচা ইট এখন মাটির স্তূপ

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে ভোলার শতাধিক ইটভাটা। নষ্ট হয়েছে প্রায় এক কোটি তৈরি কাঁচা ইট। আর এতে প্রায় শতকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ভাটার মালিকরা। অধিকাংশ মালিকই চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ভাটা প্রস্তুত করছিলেন। এখন চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন মালিকরা।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দ্বীপ জেলা ভোলায় ১২৫টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। আবহাওয়া ও পরিবেশের ওপর নির্ভর করে প্রতি বছর বাংলা আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত ভাটাগুলোতে ইট তৈরির কাজ চলে। সে অনুযায়ী এ বছরও আশ্বিন মাসের ১৫ তারিখের পর ইট তৈরির কাজ শুরু হয়।

 

কিন্তু হঠাৎ ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে একটানা বর্ষণ, জোয়ারের পানিতে পোড়ানোর জন্য রাখা কাঁচা ইট এখন মাটির স্তূপে পরিণত হয়েছে। এতে করে ইট পোড়ানোর আগেই ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে মালিকদের। নতুন ইট উৎপাদন দুই মাস পিছিয়ে গেছে। চলতি মৌসুমে এ ক্ষতির প্রভাব পড়বে ইটের দামের ওপর।

 

ইটভাটার মালিকরা জানান, লাভের আশায় প্রতি বছরের মতো এ বছরও বিভিন্ন ব্যাংক ও স্থানীয়দের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ইটভাটার কাজ শুরু করেন। ঘূর্ণিঝড় তাদের সে আশা পন্ড করেছে। পাশাপাশি চড়া সুদে ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। তাই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছেন তারা।

 

সদর উপজেলার মায়ের দোয়া ও সাবাব ব্রিকসের মালিক ভোরের আকাশকে জানান, ঝড়ে তার দুটি ফিল্ডের ২৫ লাখ কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে। ইট পোড়ানোর জন্য আনা মজুদকৃত কয়লা জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। এতে তার প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

 

মিতালী ব্রিকসের মালিক মামুনুর রহমান জানান, তার ফিল্ডের প্রায় ১০ লাখ কাঁচা ইট মাটিতে পরিণত হয়েছে। এতে অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে তার দুই বছর লাগবে।

 

মুকুল ব্রিকস ও পান্না ব্রিকসের মালিক আরিফ হোসেন ভোরের আকাশকে জানান, ‘দুটি ইটভাটায় ২০ লাখ কাঁচা ইট মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এতে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

 

জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম কায়েদ ভোরের আকাশকে জানান, ‘ঘূর্ণিঝড়ে ভোলার প্রায় ১২৫টি ইটভাটার সবই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এ ক্ষতির পরিমাণ শতকোটি টাকারও বেশি। আমার দুটি ফিল্ডে প্রায় ১৫ লাখ কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে প্রায় ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন সরকার যদি ভাটা মালিকদের আর্থিক সহায়তা, সহজ শর্তে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ও পূর্বের ঋণের সুদ মওকুফ না করে তাহলে পথে বসতে হবে।’ এ ছাড়া ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার জন্য চলতি অর্থবছরে ইটভাটা মালিকদের আয়কর মওকুফের দাবি জানান তিনি।

 

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান ভোরের আকাশকে বলেন, ‘ইটভাটার মালিকরা যদি ক্ষতি নিরূপণ করে আবেদন করে, তাহলে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি তুলে ধরব। যাতে করে তারা সহজ শর্তে দীর্ঘমেয়াদি ঋণসহ আর্থিক সহায়তা পান।

 

ভোরের আকাশ/নি