তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এখন চলছে নির্বাচনী আমেজে। যারা মনোনয়ন নিয়েছেন, তাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে ঈদের খুশি বিরাজ করছে। এর ব্যাপকতা এতই- ঢাকা পড়ে যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের মতো বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি। বরিশালে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশীদের হাঁক-ডাক নগরের বিভিন্ন মহল্লায় মহল্লায় শোনা যাচ্ছে।
নির্বাচনী অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার এ বিভাগের ২১ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ২৫৮ জন। প্রতি আসনে গড়ে ১২ জন করে মনোনয়ন নিয়েছেন। কিছু কিছু নির্বাচনী এলাকায় ১৫ বা তার অধিক প্রত্যাশী দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। এবারই প্রথম বরিশালে নির্বাচন করতে চাওয়া প্রার্থীর সংখ্যা এত বেশি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অন্ধ, খোঁড়া যাকেই মনোনয়ন দেবে তাকেই নির্বাচিত করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর নির্বাচনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের মধ্যে মনোনয়ন পাওয়ার আশা বেড়েছে। যে কারণেই বহু নেতা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের টিকিট পেতে চাইছেন দলের কাছ থেকে।
বরিশালের আওয়ামী লীগের জনৈক একজন প্রভাবশালী নেতা ভোরের আকাশকে জানান, দলের তৃণমূল পর্যায়ে সক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে, যে শুধু কর্মী বা সমর্থক নয় প্রতিনিয়ত নেতাও তৈরি হচ্ছে। ফলে জাতীয় সংসদের মতো নির্বাচনের ভোটে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছুকদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২১টি আসনে বিপুল সংখ্যক মনোনয়নপত্র সংগ্রহ হলেও এ নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই বরিশাল আওয়ামী লীগে।
স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের দাবি, বরিশালে দলীয় শৃঙ্খলা থাকায় এ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, আগামীর জন্য যা আশার আলো দেখাচ্ছে। দল যাকেই মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই নেতাকর্মী ও সমর্থকরা কাজ করবে।
তৃণমূল পর্যায়ে নেতাদের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে বলে ভোরের আকাশকে স্থানীয় কিছু নেতারা জানান। এর সঙ্গে একাদশ সংসদের সদস্যরাও জড়িয়ে আছেন।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা নিজেরা নিজেদের প্রতিপক্ষ হচ্ছে এটা স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন একজন বিভাগীয় নেতা। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রমাণ করার জন্যও এটা করা হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও নির্বাচন বিশ্লেষক মো. সোহেল রানা ভোরের আকাশকে বলেন, আওয়ামী লীগ একাধারে দীর্ঘদিন ক্ষমতায়, যে কারণে তাদের কর্মী-সমর্থক বেড়েছে। ফলে প্রার্থী হতে চাওয়ার প্রত্যাশাটা বিগত যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি এটা স্বাভাবিক ব্যাপার।
ভোরের আকাশ/নি