logo
আপডেট : ২৭ নভেম্বর, ২০২৩ ১৭:৫১
যুবকদের অংশগ্রহণে জলবায়ু ন্যায্যতা আদায় ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইতিবাচক ফল আসবে
নিজস্ব প্রতিবেদক

যুবকদের অংশগ্রহণে জলবায়ু ন্যায্যতা আদায় ও
চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইতিবাচক ফল আসবে

বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং বারসিক এর যৌথ আয়োজনে মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হল, জাতীয় প্রেস ক্লাব ঢাকা-তে “দুবাই জলবায়ু সম্মেলন (কপ২৮): জনগণের প্রস্তাবনা” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

ক্যাপস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার এর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলন মূল বক্তব্য প্রদান করেন বারসিক এর পরিচালক পাভেল পার্থ। বক্তব্য প্রদান করেন বারসিক এর সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম, বারসিক এর প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুজ্জামান সাগর, ক্যাপস-এর লিগ্যাল ডিরেক্টর ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট রাশেদুজ্জামান মজুমদার, পরিবেশ উদ্যোগ এর গবেষণা সমন্বয়ক ইঞ্জি. মো. নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারী, সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কায়সার আহমেদ এবং দৈনিক কালের কণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার নিখিল ভদ্র।

 

সভাপতির বক্তব্যে ক্যাপস এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, জলবায়ু সম্মেলন এমন একটি প্লাটফর্ম, যেখানে সমস্ত দেশই আসে জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় একত্রিত হয়ে কাজ করার জন্য। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নীতিনির্ধারকদের কাছে আমি অনুরোধ করবো আপনারাও দেশের সকল অঞ্চলের মানুষের দাবি গুলো জলবায়ু সম্মেলনে তুলে ধরুন। মূল জলবায়ু সম্মেলন হয়ত কয়েক দিনের কিন্তু ন্যায্যতা আদায়ের জন্য আমাদের সারা বছরই কাজ করতে হবে। জলবায়ু ন্যায্যতা আদায় ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসাবে যুবকদের স্বীকৃতি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণাভিত্তিক সমাধানকে উৎসাহিত করতে হবে।

 

মূল বক্তব্যে বারসিক এর পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, বিশ্বের ধনী ও উন্নত দেশের প্রায় ১ভাগ মানুষ যে পরিমাণ কার্বন নির্গমণ করে সেই পরিমাণ কার্বন নির্গমন করে বিশ্বের প্রায় ৬৬ ভাগ মানুষ। সেদিক থেকে বাংলাদেশের কার্বন নির্গমনের পরিমাণ খুবই নগণ্য। তারপরও প্রতিনিয়ত আমাদের দেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন দুর্যোগ ও বিপদাপন্নতার শিকার হচ্ছে। তাই, এবারের জলবায়ু সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের দেশের জন্য লস এন্ড ড্যামেজ তহবিলের ইকোনমিক এবং নন ইকোনমিক উভয় নিশ্চিত করতে হবে। কারণ ইকোনমিক লসের সাথে ননইকোনমিক লস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এছাড়াও আমাদের নিজেদেরকেও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার সকল পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে তরুণ-যুবদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে নগরের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন, শিক্ষা, নিরাপদ পানি, বিদ্যুৎ ও নিরাপদ জ্বালানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশকে উন্নত রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।

 

ক্যাপস-এর লিগ্যাল ডিরেক্টর অ্যাডভোকেট রাশেদুজ্জামান মজুমদার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ দায়ী না হয়েও ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি যদি একটি জাহাজের সাথে তুলনা করি তাহলে এর নিচ তলায় আছে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশ এবং উপরতলায় আছে উন্নত দেশগুলো, শেষ পর্যন্ত জাহাজডুবি অর্থাৎ ভয়াবহ দূর্যোগ হলে কেউ বাঁচতে পারবে না। তাই সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ নিয়ে জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলা করতে হবে।

 

বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম (বিসিএেএফ) এর সভাপতি কাওসার রহমান তার বক্তব্যে বলেন, উন্নত দেশ গুলোর্ াঅতিরিক্ত কার্বন নি:সরনের কারণে পৃথিবী উত্তপ্ত হচ্ছে আর এর খেসারত দিচ্ছে বাংলাদেশের মতো দেশকে। এর বিরুদ্ধে আমাদের স্বোচ্ছার হতে হবে।

 

দৈনিক কালের কণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার নিখিল ভদ্র বলেন, জলবায়ু ন্যায্যতার অভাবে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই জলবায়ু ন্যায্যতা ও ক্ষতিপূরণের দাবি নিশ্চিত করতে হবে এটি কোন ঐচ্ছিক বিষয় নয়, এটি একটি ন্যায্য অধিকার।

 

বারসিক এর সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত উন্নত দেশগুলোর ভোগ বিলাসের শিকার হচ্ছি। আমাদের দাবি এই জলবায়ু সম্মেলনেই লস এন্ড ড্যামেজ ফান্ড কার্যকর করতে হবে এবং আমাদেরকে আমাদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতে হবে।

 

পরিবেশ উদ্যোগ এর গবেষণা সমন্বয়ক ইঞ্জি. মো. নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বায়ুদূষণ আন্তঃসম্পর্ক সমস্যা। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার কাজ করতে হলে বায়ুদূষণ মোকাবেলার দিকে নজর দিতে হবে। বারসিক এর প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুজ্জামান সাগর বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসগুলোর প্রসার করার বিকল্প নেই।

 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ক্যাপসের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইঞ্জি মারজিয়াত রহমান, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মাহমুদা পারভীন, সিনিয়র লেকচারার মাহমুদা ইসালাম, প্রভাষক হুমায়ুন কবির এবং জলবায়ু কর্মী মোহাইমিনুল ইসলাম জিপাত সহ আরও অনেক পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধিগণ।

 

ভোরের আকাশ/মি