আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী ভোটারদের পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের সুবিধার্থে রিটার্নিং কর্মকর্তারা ভোটারের আবেদনের ভিত্তিতে ব্যালট পেপার ডাকযোগে পাঠাবেন। এক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রায় অগ্রিম ডাকমাশুল দেবে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিষয়টি দূতাবাস বা হাইকমিশনগুলো অবহিত করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি।
জানা গেছে, ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান এরই মধ্যে নির্দেশনাটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে পাঠিয়েছেন। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ভোটগ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। এক্ষেত্রে ভোটারদের আবেদনের ভিত্তিতে রিটার্নিং অফিসার তাদের কাছে ডাকযোগে পোস্টাল ব্যালট প্রেরণ করবেন।
পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পোস্টাল ব্যালট প্রেরণ করার জন্য যে ডাক মাশুল খরচ করা হবে তা ভোটাররা নিজে বহন করবেন। তবে তার আগে রিটার্নিং অফিসার ডাকযোগে সংশ্লিষ্ট ভোটারদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পেপার প্রেরণ করবেন।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, যেহেতু আন্তর্জাতিক বিধানমতে ডাক মাশুল আদায় স্ব স্ব দেশের আওতাভুক্ত, সেহেতু নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পক্ষে বৈদেশিক মুদ্রায় বিভিন্ন দেশের ডাক মাশুল প্রদান করা সম্ভব নয়। এঅবস্থায় বিষয়টি বিভিন্ন দূতাবাস/হাইকমিশনকে অবহিত করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।
এদিকে অন্য এক নির্দেশনায় ডাক অধিদপ্তর মহাপরিচালককে বলা হয়েছে, রিটার্নিং অফিসার যাতে অগ্রিম ডাক মাশুল পরিশোধ না করে আবেদনকারী ভোটারের কাছে পোস্টাল ব্যালট ডাকযোগে প্রেরণ করতে পারেন তার নিশ্চয়তা বিধানের প্রয়োজন। অনুরূপভাবে ডাকযোগে যারা ভোটদানের সুযোগ গ্রহণ করবেন তারাও যাতে এ সুবিধা পেতে পারেন সে বিষয়টিও নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। এ সুযোগ প্রদান সম্বলিত বিল বুকএডজাস্টমেন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের কোনো জেলখানায় বা অন্য কোনো আইনগত হেফাজতে আটক থাকলে, কোনো ব্যক্তি তিনি যে ভোট কেন্দ্রে ভোট প্রদানের অধিকারী সেই কেন্দ্র ব্যতীত অন্য কোনো ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত থাকলে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন। এছাড়া বিদেশে বসবাসরত কোনো বাংলাদেশি ভোটাররাও নিতে পারেন এ সুযোগ।
এক্ষেত্রে নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন করতে হয়। তিনি যে নির্বাচনি এলাকার ভোটার, সেই এলাকার রিটার্নিং অফিসারের কাছে পোস্টাল ব্যালটে ভোট প্রদানের উদ্দেশে একটি ব্যালট পেপারের জন্য আবেদন করতে হয় এবং অনুরূপ প্রত্যেক আবেদনে ভোটারের নাম, ঠিকানা এবং ভোটার তালিকায় তার ক্রমিক নম্বর সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হয়।
রিটার্নিং অফিসার কোনো ভোটারের আবেদন প্রাপ্তির পর, অনতিবিলম্বে ওই ভোটারের কাছে ডাকযোগে একটি পোস্টাল ব্যালট পেপার এবং একটি খাম প্রেরণ করতে হয়, যে খামের ওপর তারিখ প্রদর্শন করত সার্টিফিকেট অব পোস্টিংয়ের একটি ফরম থাকবে, যা ভোটার ডাকে প্রদানের সময় ডাকঘরের উপযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী পূরণ করবে।
এছাড়া কোনো ভোটার পোস্টাল ব্যালটে ভোট প্রদানের জন্য তার ব্যালট পেপার প্রাপ্তির পর, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, তার ভোট রেকর্ড করার পর ব্যালট পেপারটি তার কাছে পাঠানো খামে ন্যূনতম বিলম্বের মধ্যে রিটার্নিং অফিসারের কাছে ডাকযোগে প্রেরণ করতে হবে। রিটার্নিং অফিসার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাপ্ত ব্যালটের ফলাফল মূল ফলাফলের সঙ্গে যোগ করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করবেন।
এ বিষয়ে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস/হাই কমিশনগুলো প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করবেন। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে প্রার্থী চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে।
ভোরের আকাশ/নি