logo
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১১:০৯
অরক্ষিত রাজবাড়ীর লেভেলক্রসিং
এক বছরেই নিহত ১২
রাজবাড়ী প্রতিনিধি

অরক্ষিত রাজবাড়ীর লেভেলক্রসিং

লেভেলক্রসিং অরক্ষিত থাকায় বাড়ছে দুর্ঘটনা

রাজবাড়ীতে রেলস্টেশন ও রেলের উন্নয়নে বেড়েছে ট্রেনের সংখ্যা। তবে সেই তুলনায় সুরক্ষা কার্যক্রমে হয়নি তেমন উন্নতি। রাজবাড়ী জেলা অংশের রেলপথে বিভিন্ন স্থানে বৈধ ও অবৈধ মিলে মোট ৫৭টি লেভেলক্রসিং রয়েছে। যার মধ্যে বৈধ ৪৩টি। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ২১টিতে প্রতিবন্ধক (বেরিয়ার) ও লাইনম্যান রয়েছে এবং একটু কম গুরুত্বপূর্ণ ২২টিতে কোনো বেরিয়ার বা লাইনম্যান নেই।

এ ছাড়া অবৈধ ১৪টি লেভেলক্রসিং সম্পূর্ণ অরক্ষিত। আর অরক্ষিত লেভেলক্রসিংসহ সুরক্ষা কার্যক্রমের আধুনিকায়নের অভাবে রেললাইনে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহতের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। গত ৪ ডিসেম্বর দুজনসহ চলতি বছরে ১২ জনের প্রাণহানি হয়েছে।

 


জানা গেছে, ব্রিটিশ শাসনামলে রাজবাড়ী জেলার পাঁচটি উপজেলায়ই রেলপথ স্থাপন করা হয়। বর্তমানে এই রেলপথ ব্যবহার করে পদ্মা সেতু হয়ে রাজধানী ঢাকা যাতায়াত করছে আন্তঃনগর নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস, মধুমতী এক্সপ্রেস, বেনাপোল এক্সপ্রেস এবং সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন। এ ছাড়া এসব রেলপথে প্রতিদিন ঢাকা ছাড়াও খুলনা, রাজশাহী, বেনাপোল, টুঙ্গিপাড়া, দৌলতদিয়া ঘাটসহ নিয়মিত চলাচল করছে বেশ কিছু ট্রেন। রাজবাড়ীর ওপর দিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা টু ঢাকা ও বেনাপোল টু ঢাকা ট্রেন চলাচল করে।

 


এ ছাড়া রাজবাড়ী থেকে ট্রেনে কুষ্টিয়া, পোড়াদহ, রাজশাহী, খুলনা, টুঙ্গিপাড়া, ভাটিয়াপাড়া, ফরিদপুর, ভাঙ্গা, গোয়ালন্দ ঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করা যায়। ট্রেনে যাতায়াত সহজ ও নিরাপদ হওয়ায় দিনদিন বাড়ছে এসব রুটে যাত্রীদের সংখ্যা। কিন্তু সে তুলনায় এখনো রেলরুটে রয়ে গেছে অরক্ষিত লেভেলক্রসিং। যার কারণে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা, হচ্ছে প্রাণহানিও।

 


রাজবাড়ী রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী ও রেলওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ী জেলা অংশের রেলপথে বিভিন্ন স্থানে বৈধ-অবৈধ মিলে মোট ৫৭টি লেভেলক্রসিং রয়েছে। যার মধ্যে বৈধ ৪৩টি। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ২১টিতে বেরিয়ার ও লাইনম্যান রয়েছে এবং একটু কম গুরুত্বপূর্ণ ২২টিতে কোনো বেরিয়ার বা লাইনম্যান নেই। এ ছাড়া অবৈধ ১৪টি লেভেলক্রসিং সম্পূর্ণ অরক্ষিত। যেগুলো স্থানীয়রা তাদের সুবিধার্থে জোরপূর্বক তৈরি করেছেন। চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত রাজবাড়ীর বিভিন্ন স্থানে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত হয়েছেন ১২ জন। এর মধ্যে নারী চারজন ও পুরুষ আটজন রয়েছেন।

 


জেলার পাংশার আবুল কাশেম ও লুৎফর রহমান ভোরের আকাশকে জানান, এক বছরের মধ্যে পাংশার কুড়াপাড়া লেভেলক্রসিং এলাকায় তিনটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মোটরসাইকেলের আরোহীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এই স্থানে কোনো গেটম্যান বা বেরিয়ার নেই, সম্পূর্ণই অরক্ষিত। পাংশা থেকে রাজবাড়ী পর্যন্ত এ রকম অনেক অরক্ষিত লেভেলক্রসিং রয়েছে। ফলে এসব স্থানে বেরিয়ার বা গেটম্যান জরুরি।

 


রাজবাড়ী রেলওয়ে (জিআরপি) থানার ওসি সোমনাথ বসু বলেন, ‘রাজবাড়ী ব্যস্ততম রেলরুট। এখান থেকে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল করে এবং মাঝেমধ্যেই ট্রেনে কাটা পড়ে অনেকেই মারা যাচ্ছেন। ট্রেনে কাটা পড়ে কেউ যেন মারা না যায়, সে জন্য আমরা সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি।’

 


বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশীর সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ ভোরের আকাশকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা অবৈধ লেভেলক্রসিং বন্ধ করে আসছেন এবং ধাপে ধাপে অনেকগুলো বন্ধও করেছেন। অন্যান্য অবৈধ লেভেলক্রসিং বন্ধের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

 

 

ভোরের আকাশ/ সু