দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে (বেলকুচি-চৌহালী) স্বতন্ত্রী প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের নির্দেশে বীরমুক্তিযোদ্ধা ও অর্ধশত নৌকা সমর্থকদের মারপিট ও হামলা-মামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে বেলকুচিতে ডজন খানেক মামলা-পাল্টা মামলার ঘটনা ঘটেছে।
এলাকায় শান্তি রক্ষা ও অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে সোমবার দুপুরে বেলকুচি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বেলকুচি উপজেলার বীরমুক্তিযোদ্ধাদের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা দেলখোশ আলী প্রাং ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষে রাজাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান। উপস্থিত ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক, বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছালাম, বীরমুক্তিযোদ্ধা বুলবুল হোসন প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার প্রতীক নৌকায় ভোট দেয়া ও আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মমিন মন্ডলের পক্ষে নির্বাচন করায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের নির্দেশে নির্বাচনের দিন রাজাপুরের সমেশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নৌকার এজেন্ট বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানকে হত্যার হুমকি ও মারপিট করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ বিশ^াসের সমর্থকরা। এছাড়া বেলকুচি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকজন বীরমুক্তিযোদ্ধাকে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। নির্বাচন পরবর্তীতে মেঘুল্লা, তামাই, চালা, গাড়ামাসি, চন্দনগাঁতি, জিধুরী, সুর্বণসাড়া, গোপালপুর, দেলুয়া, রাজাপুর ও বানিয়াগাঁতি এলাকায় নৌকার সমর্থক ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের কুপিয়ে ও মারপিট করে অর্ধশত জনকে আহত করেছে।
আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া নির্বাচনী এলাকার প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকান পাট ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফ বিশ্বাসের সমথর্করা। এ নিয়ে বীরমুক্তিযোদ্ধা সহ দলের নেতাদের নামে ডজন খানেক মামলাও দিয়েছে ঈগল প্রতীকের সমর্থকরা।
এবিষয়ে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) বীরমুক্তিযোদ্ধা দেলখোশ আলী প্রাং, রাজাপুরের বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান জানান, সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস আওয়ামীলীগের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী নির্বাচন করেছে। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে বেসামাল হয়ে বীরমুক্তিযোদ্ধা সহ দলের নেতাকর্মীদের হত্যার উদ্দ্যেশে মারপিট, বাড়িঘর- দোকানপাট ভাঙচুর করছে। এতে আতঙ্কীত হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। দ্রুত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাই।
এবিষয়ে বীরমুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষে রাজাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জানান, লতিফ বিশ্বাস নির্বাচনে পরাজিত হয়ে তার বাহিনী দিয়ে এলাকায় টার্গেট করে হামলা ও মামলা দিচ্ছে। অনেক মানুষ বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। পুলিশকে বারবার অভিযোগ দিলেও কোন কাজ হচ্ছে না।
তবে অভিযোগের বিষয়ে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, সংবাদ সম্মেলনের সকল অভিযোগ মিথ্যা। নির্বাচনের পর থেকে আমার ঈগলের কর্মীদের উপর হামলা ও মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। ভয় ও আতঙ্গে এখন অনেকেই বাড়ি ছাড়া।
এবিষয়ে বেলকুচি থানার ওসি (তদন্ত) আহসানুজ্জামান জানান, বেলকুচিতে নির্বাচন পরবর্তী অধিকাংশ মামলার আসামিরা জামিনে আছেন। তবে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/ সু