ময়মনসিংহ সিটি করর্পোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে বাবার বাড়িতে থাকেন বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগম। স্বামী মারা যাওয়ার পর একমাত্র ছেলে রাজিবুল ইসলামকে নিয়ে সেখানেই থাকতেন তিনি। পরিবারের হাল ধরতে ১৯ বছর বয়সে নগরীর মাসকান্দা এলাকায় জেলা পরিষদ স্কুলের পাশে একটি মুদির দোকান দেন রাজিবুল।
২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২৫ তারিখে দোকানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন রাজিবুল। এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। ছেলের সন্ধানে মা আনোয়ারা ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। কিন্তু ২০ বছর হতে চলল এখনো সন্ধান মেলেনি রাজিবুলের।
নিখোঁজ রাজিবুলের মামা ইয়াকুব আলী বলেন, ‘রাজিবুল নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার মা ঢাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় খোঁজ করেন। কোথায়ও না পেয়ে হাতে রাজিবুলের একটি ছবি নিয়ে প্রায়ই সকালে বাসা থেকে বের হয়ে শহরের অলিগলিতে খোঁজ করেন। এমনকি সেই ছবি হাতে নিয়েই রান্নাবান্নার কাজ, ঘর গোছানোসহ অন্য কাজ করেন আনোয়ারা।’
আনোয়ারা বেগম ভোরের আকাশকে বলেন, ‘ছেলের স্মৃতি নিয়ে বুকে পাথর চেপে রেখেছি, মনে পড়লে কলিজা ফেটে যায়। পাশের বাসার মানুষ যখন তাদের ছেলেকে আদর করে কিছু একটা খাবারের জিনিস হাতে তুলে দেয়, ঠিক তখনি যেন দু’চোখের পানি গড়িয়ে পড়ে। তখন নিজেকে সামাল দিতে পারি না। আমার রাজিবুল একদিন ফিরে আসবে, মা বলে ডাকবে।’
এ বিষয়ে পাশের বাসার ডক্টর নজরুল ইসলাম বলেন, ‘২০ বছর ধরেই দেখছি ছেলের ছবি হাতে নিয়ে এদিক-সেদিক ঘোরাফেরা করেন আনোয়ারা বেগম। ছেলেকে না পাওয়ার যন্ত্রণা কোনোভাবেই যেন ভুলতে পারছে না তিনি। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো তার স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাবে।’
ভোরের আকাশ/ সু