logo
আপডেট : ২১ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৬:৫২
বোরো চাষে বাড়তি খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

বোরো চাষে বাড়তি খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বোরো ক্ষেত তৈরি হচ্ছে

ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে বোরো চাষে বিপাকে পড়েছেন সিরাজগঞ্জের কৃষকরা। একই সঙ্গে বেড়েছে সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি। উৎপাদন ব্যয় বাড়ায় এবার বোরো আবাদ তুলতে পারবে কিনা সেটি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে বাড়তি প্রায় ৬ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা।

 


একাধিক কৃষক বলেন, বোরো চাষে খরচ বাড়ছে। কিন্তু মৌসুম শেষে ধানের বাড়তি দাম না পেয়ে তাদের উৎপাদন খরচ উঠবে না। সরকারি সংগ্রহ অভিযানে ধান-চালের দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

 


রায়গঞ্জ উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের কৃষক আকবর আলী বলেন, এ মৌসুমে প্রায় চার বিঘা জমিতে বোরো চাষাবাদ শুরু করি। এ বছর বোরো চাষাবাদে খরচ অনেক বেশি হবে। গত বছর প্রতি বিঘা জমিতে পানি নিতে খরচ পড়ত ১৬০০-১৮০০ টাকা। এ বছর তা বেড়ে হয়েছে ২০০০-২৫০০ টাকা। এ ছাড়া সার, কীটনাশক ও বীজের দামও বেড়েছে।

 


একই উপজেলার জানকিগাঁতী গ্রামের কৃষক আজিজল হক বলেন, এবার দুই বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ শুরু করেছি। তবে বোরো ধান চাষাবাদের প্রতিটি জিনিসের দামের সঙ্গে শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে।

 


কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বোরো মৌসুমে এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে বোরো উৎপাদনের খরচ ছিল প্রায় ১৪ হাজার টাকা। আর এ বছর তা দাঁড়াবে প্রায় ২০ হাজার টাকায়। গত বোরো মৌসুমে প্রতি বিঘা জমিতে সেচের খরচ ছিল ১ হাজার ৪০০ টাকা। এ বছর সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি কেজি বীজ ছিল ২২০ টাকা। এবার তা হয়েছে ৪০০ টাকা। এ ছাড়া সার খরচ দুই হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে চার হাজার টাকা। একই সঙ্গে কীটনাশক ৫০০ থেকে বেড়ে ১ হাজার ২০০ টাকা, ধান রোপণের মজুরি ৮০০ থেকে বেড়ে ২ হাজার টাকা হয়েছে। এছাড়া জমির আগাছা পরিষ্কার ও মাড়াই খরচ তো রয়েছেই।

 


সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের শাহজাহান বলেন, বোরো ক্ষেত তৈরি হচ্ছে। তবে ডিজেলচালিত সেচের খরচ এবার প্রতি শতকে ৮০ টাকার স্থলে দিতে হবে ১২০ টাকা। আর বিদ্যুৎচালিত সেচের দাম প্রতি শতকে ৫০ টাকার স্থলে গুনতে হবে ৭০ টাকা। এছাড়া বীজসহ প্রতিটি জিনিসের দাম তো বেড়েই গেছে।

 


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে জেলার ৯টি উপজেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমি। এখন পর্যন্ত রোপণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৩৪৬ হেক্টর।

 


রায়গঞ্জ উপজেলার কৃষিবিদ কামরুল হাসান বলেন, প্রান্তিক ও বর্গাচাষিদের প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হলে অনেক উপকার হতো। অনেকে ধারদেনা করে এ ধান চাষ করছেন। কিন্তু মৌসুম শেষে ধানের উপযুক্ত দাম পাবেন কি না সেটি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। এ জন্য সরকারি পদক্ষেপ প্রয়োজন।

 


এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, বোরো চাষে সেচ বেশি লাগে। এজন্য কৃষকদের খরচ কমাতে পরিমিত সেচ এবং নিয়ম মেনে সার ও কীটনাশক ব্যবহারে মাঠ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

 

ভোরের আকাশ/ সু