logo
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ ১১:৩৯
আটককৃতদের স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বলল যুক্তরাষ্ট্র

আটককৃতদের স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বলল যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে আবারও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে আটককৃত হাজারো বিরোধী নেতাকর্মীর স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আহ্বানও জানিয়েছে দেশটি। এছাড়া বিরোধী দলের সদস্য, গণমাধ্যম কর্মী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

 

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিনের ব্রিফিংয়ে ভারতের প্রভাবের কারণে বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিকাশের ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পিছু হটার অভিযোগও সামনে এসেছে। তবে এই অভিযোগের বিষয়ে ব্রিফিং থেকে সরাসরি কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

 

মঙ্গলবারের এই ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক ভারতীয় প্রভাবে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পিছুহটার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চান। তিনি বলেন, কানাডার একটি তদন্তে জানা গেছে, রাশিয়া এবং চীনের পাশাপশি ভারতও দেশটির নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপেও ভারতের সম্পৃক্ততা প্রকাশ পেয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত সপ্তাহে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো এবারের একতরফা নির্বাচনে বিজয়ের জন্য ভারতের পাশে থাকার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন। সমালোচকদের দাবি, ভারতীয় প্রভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিকাশের নীতি থেকে পিছু হটেছে। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

 

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আপনি যে কানাডিয়ান অনুসন্ধানের কথা উল্লেখ করেছেন সে বিষয়ে আমার কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। এটা কানাডার কথা বলার বিষয়। আমি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিষয়ে কথা বলতে পারি। এর আগেও এই ইস্যুতে অনেকবার কথা বলেছি।

 

তিনি আরও বলেন, এটি (গণতন্ত্র) বাংলাদেশ এবং অন্যান্য স্থানে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তাকে আরও সামনে এগিয়ে নেয়। এটিই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এবং আমরা গণতান্ত্রিক নীতিগুলোকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রেখেছি। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধই সকল বাংলাদেশির জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার চাবিকাঠি।

 


পৃথক এক প্রশ্নে ওই সাংবাদিক বাংলাদেশে বিরোধীদের গণগ্রেপ্তার নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন বাংলাদেশে আটক রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। গত ৭ জানুয়ারির জাল নির্বাচনে কারচুপি করার জন্য সরকার বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা, বিএনপি নেতাসহ ২৫ হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। নির্বাচনের আগে আপনারা ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতির প্রেক্ষিতে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করার জন্য কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?

 

জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই মুখপাত্র বলেন, আপনারা আমাকে আগে বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা বলতে শুনেছেন। এই নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়েছে বলে আমরা দেখতে পাইনি। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে হাজার হাজার রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্যদের গ্রেপ্তার নিয়েও আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।

 

ম্যাথিউ মিলার আরও বলেন, আমি দুটি জিনিস বলব। প্রথমত, গ্রেপ্তারকৃত সকলের জন্য ন্যায্য ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়া বিরোধীদলের সদস্য, গণমাধ্যম কর্মী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এবং একইসঙ্গে নাগরিক জীবনে অর্থপূর্ণভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

 

এই বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার।

টিএম

 

ভোরের আকাশ/মি