logo
আপডেট : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১৬:৩৬
র‌্যাবের অভিযান
সবজির ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়, ঢাকায় গ্রেফতার ৫১
নিজস্ব প্রতিবেদক

সবজির ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়, ঢাকায় গ্রেফতার ৫১

বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় সবজি ও অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করে। এ সময় ট্রাক থেকে অবৈধভাবে চাঁদা নেওয়ার সময় ৫১ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। রোববার সকালে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আল আমিন।

 

তিনি বলেন, সড়কে সবজি ও অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাক থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়ের সময় হাতেনাতে ৫১ জন চাঁদাবাজকে ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির লাখ টাকাসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে দুপুরে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান এএসপি আল আমিন।

 

র‌্যাব বলেছে, পণ্যবাহী ট্রাক থেকে বিভিন্ন সংগঠন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে চাঁদাবাজির কারণে অযৌক্তিকভাবে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢাকায় অন্তত পাঁচ থেকে ছয়টি স্থানে পণ্যবাহী ট্রাক থেকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা উত্তোলন করা হয়।

 

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

 

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারা পণ্যবাহী পরিবহনে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। পণ্য উৎপাদনের স্থান থেকে পাইকারি বাজারে পরিবহনের সময় দেশের বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ধাপে ধাপে চাঁদা দিতে হয়। এ কারণে পাইকারি বাজারে এসে সবজির দাম বেড়ে যায়। যার মাশুল গুনতে হয় সাধারণ ক্রেতাদের।

 

সম্প্রতি পণ্যবাহী পরিবহনে চাঁদাবাজির ঘটনায় জড়িত চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার রাতে র‌্যাব-২ ও র‌্যাব-৩ এর দল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাবুবাজার, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা মোড়, ইত্তেফাক মোড়, টিটিপাড়া, কাজলা, গাবতলী ও ডেমরা স্টাফ কোয়াটারসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ পণ্যবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজ চক্রের সক্রিয় ৬৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।

 

এসময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় এক লাখ ১২ হাজার ৩০৬ টাকা, একটি লেজার রশ্মির লাইট, ছয়টি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জ্যাকেট, দুইটি অন্যান্য লাইট, চারটি আইডি কার্ড, ৪১টি মোবাইল ও বিপুল পরিমাণ চাঁদা আদায়ের রশিদ।

 

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কমান্ডার মঈন বলেন, কোনো ড্রাইভার তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদের গাড়ি ভাঙচুর ও ড্রাইভার-হেলপারকে মারধরসহ প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। তারা প্রতিটি ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন হতে ২০০-৩০০ টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে। পণ্যবাহী কোনো গাড়ি দেখলেই তারা লেজার লাইটের আলো নিক্ষেপ করে তা থামিয়ে কৌশলে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদা আদায় করে থাকে।

 

গ্রেপ্তাররা প্রতি রাতে চাঁদা আদায় করে ইজারাদারদের নিকট প্রদান করে। চাঁদা আদায়ের জন্য ইজারাদাররা প্রত্যেককে প্রতি রাতে ৬০০-৭০০ টাকা মজুরি প্রদান করত বলে জানায়। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতি রাতে পণ্যবাহী গাড়ির চালকদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে বলে জানা যায়। কখনো সিটি কর্পোরেশন, কখনো শ্রমিক সংগঠন, কখনো কল্যাণ সমিতি, কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নামে এই চাঁদা উত্তোলন করা হয় বলে উল্লেখ করেন কমান্ডার মঈন।

 

কমান্ডার মঈন বলেন, যারা আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানকে কেন্দ্র করে অবৈধভাবে পণ্য মজুত করে কারসাজির মাধ্যমে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাক্রমে র‌্যাব ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা করবে।

 

র‌্যাব নাগরিক সমাজকে আহ্বান জানাচ্ছে যে, যারা কারসাজির মাধ্যমে নিত্যপণ্যের অবৈধ মজুত করবে, তাদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে র‌্যাবকে সহায়তা করুন, এক্ষেত্রে তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে।

 

ভোরের আকাশ/মি