সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক ফেরদৌসী বেগমকে খাটের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এঘটনায় পুলিশ বাদশা নামে এক আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে।
আজ রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. হাসিবুল্লাহ মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৩০ জানুয়ারি মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রীর স্বামী আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ সহ ৫-৭ জনতে অজ্ঞাত আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হলেন, সদর উপজেলার রাঙ্গালিয়া গাতী গ্রামে শাকিল, একই গ্রামের মো. অনিক, হযরত আলী, মো. শাকিল, মো. ইব্রাহীম, মো. মনির, মো. হান্নান, নূরে আলম, বাদশা ও ইয়াকুব আলী।
মামলার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, আনোয়ার হোসেন নারায়নগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার নারায়ন জুটমিলে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরী করেন। তার ছেলে যাত্রাবাড়িতে একটি হাফিজিয়া মাদ্রসায় পড়ালেখা করে। একমাত্র মেয়ে বিয়ে হওয়ায় শশুর বাড়িতে থাকে। একারনে আমার স্ত্রী একাই আমার গ্রামের বাড়ি রাঙ্গালিয়াতে বসবাস করে। মো. রাসেল আমার শ্বাশুড়ীর ধর্ম ছেলে। সেই সুবাদে আমাদের বাড়িতে যাতায়াত করে।
উল্লেখিত আসামিরা আমার স্ত্রী ও স্ত্রীর ধর্মভাইকে নিয়ে বিভিন্ন রকম কুরুচিপূর্ণ্য মন্তব্য করে আসছিল।
২৯ জানুয়ারী আমার স্ত্রীর ধর্মভাই আমার বাড়িতে আসলে স্ত্রী তাকে আপ্যায়ন করাকালে আসামীরা বাড়িতে প্রবেশ করে। এসময় আসামীরা আমার স্ত্রী ও তার ধর্ম ভাইকে মারধর শুরু করে এবং বলে তোদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক আছে। আসামীরা ভয় দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। আমার স্ত্রী ও তার ধর্মভাই টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামীরা আমার স্ত্রীকে রশি দিয়ে খাটের সঙ্গে সারা রাত বেঁধে নির্যাতন করে এবং শরীরের কাপড় ধরে নাটা হেচড়া করে। এতে আমার স্ত্রী শারিরীক ভাবে আহত হন।
আসামীরা দাবীকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে ঘরের আসবাপত্র ভাংচুর করে। ঘরে থাকা ৬ আনা ওজনের একজোড়া কানের দুল, ৩ আনা ওজনের একটি আংটি চুরি করে। সকালে স্থানীয় এক ব্যক্তি ৯৯৯ কল দিলে পুলিশ আমার বাড়িতে আসলে আসামীরা পালিয়ে যায়। পরে আমার স্ত্রী ও আমার স্ত্রীর ধর্ম ভাই রাসেলকে সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।
খবর পেয়ে আনোয়ার হোসেন বাড়ি এসে বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। গত ১ ফেব্রুয়ারী রাতে পুলিশ মামলার আসামী বাদশাকে গ্রেপ্তার করে।
নির্যাতিত ফেরদৌসী বেগম সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচন করে পরাজিত হন। তিনি বাগবাটি ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে।
মামলার আসামী বাদশার বাবা ফরজ আলী বলেন, মহিলার স্বামী বাড়ি থাকে না। এলাকার ছেলেরা একই ঘরে দুই জনকে দেখে আটক করে দু-একটা চর থাপ্পর মারে। পরে শুনি আমার ছেলে সহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/ সু