logo
আপডেট : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১৮:৪৬
শিকলে বাঁধা প্রতিবন্ধী সেলিমের জীবন
নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

শিকলে বাঁধা প্রতিবন্ধী সেলিমের জীবন

ক্যাপশন: হাতে-পায়ে শিকল পরিহিত সেলিম মিয়া

ময়মনসিংহের নান্দাইলে হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে সেলিম মিয়া (২৩) নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে ৮ বছর ধরে পায়ে ও হাতে শিকল পড়িয়ে রেখেছে তার পরিবার। এতে করে মানসিক প্রতিবন্ধকতা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

 

শিকলে বাঁধা মানসিক প্রতিবন্ধী সেলিম মিয়া উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের বীরবাগাইর গ্রামের হতদরিদ্র জালাল মিয়ার পুত্র।

 


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান সেলিম মিয়া ২০১৫ সালের দিকে ঢাকায় একটি গার্মেন্টস্ কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তখন তিনি মানসিকভাবে অসুস্থতা বোধ করায় কিছুদিন পরেই ঢাকা থেকে বাড়ি চলে আসেন। এর ৫ মাস পর থেকে সে কারো সাথে কথা বলতো না। কাউকে না জানিয়ে অন্যত্র চলে যেত। এক পর্যায়ে সে মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে যায়। বাড়ি থেকে একাধিকবার হারিয়ে গেলে পরিবার তাকে খুঁজে বের করেছিল। তাই আর যাতে হারিয়ে না যেতে পারে সেজন্য সেলিমের পায়ে ও হাতে লোহার শিকল পড়িয়ে গাছে ও বাঁশের খুঁটিতে বেধে রাখা হয়েছে। হাত পা বাঁধা অবস্থায় সেলিমকে খাবার মুখে তুলে খাওয়ান তার মা জরিনা আক্তার।

 


সেলিমের মা জরিনা আক্তার বলেন, ‘আমার সন্তানকে দিন রাত শিকলে বাইন্ধা রাখি। এই অবস্থায় তার খাওয়া, ঘুম সবই হয়। ছেলেডার এই কষ্ট দেখতে আর সহ্য হয় না কলিজায় আঘাত লাগে’ বলেও কান্না করতে থাকে।

 


সেলিমের বাবা জালাল মিয়া বলেন, ‘৮ বছর ধইরা ছেলেরে শিকলে বাইন্ধা রাখছি। কি করাম গরীব মানুষ, টেহা-পয়সা নাই। ছেলেডার অবস্থা দেখে বুকটা কষ্টে ফেটে যায়। চিকিৎসা করাইতারিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাই।’

 


স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কাদির জানান, শুনেছি ছেলেটি ঢাকায় কাজ করতে গিয়ে মানসিক সমস্যায় পড়েছিল। তারপর বাড়িতে এসে পুরোপুরি মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে যায়। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান সেলিম। তার নামে একটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়েছে।

 


স্থানীয় খারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসনাত ভূঁইয়া মিন্টু বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবো।

 


নান্দাইল ইউএনও অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো।

 

ভোরের আকাশ/ সু