নারায়ণগঞ্জের বন্দর ও সোনারগাঁও উপজেলা ভাগ করে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদ। এ নদের দুই তীরঘেঁষে গড়ে ওঠা মিলকারখানাগুলোর বর্জ্যের পানিতে ধ্বংস হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। এতে চার উপজেলার কৃষকসহ সাধারণ মানুষও চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন্দর ও সোনারগাঁও উপজেলার মধ্য দিয়ে মেঘনায় গিয়ে মিশেছে এ নদ।
লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, উত্তর দিক থেকে আসা ব্রহ্মপুত্র নদের পানি একেবারে কালো। নদে পড়ছে মিলকারখানা ও ডায়িং কারখানার বর্জ্যমিশ্রিত পানি। বিষাক্ত হয়ে পড়ার কারণে নদের পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ২০-২২ বছর আগেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দিয়ে হাজার হাজার একর জমিতে বোরো ধানের চাষসহ গৃহস্থালির সব কাজই করতেন এলাকাবাসী।
অভিযোগ উঠেছে, কামতাল এলাকায় টোটাল ফ্যাশনসহ উত্তরাঞ্চলের ডায়িং কারখানার বর্জ্যে নদের পানি দূষিত হচ্ছে। তারা স্থানীয় প্রভাবশালীদের ক্ষমতাবলে কারখানাগুলো চালিয়ে আসছে। এছাড়াও একাধিক কারখানার পোড়া মবিলের দুর্গন্ধে এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
এলাকাবাসীরা জানায়, ‘২০ বছর ধইরা পানি দূষিত হইতাছে। নদে একসময় দেশি অনেক রকমের মাছ পাওয়া যাইত। এখন পাওয়া যায় না।’ বালিগাঁও এলাকার ইউনুছ মিয়া বলেন, ‘কামতালের ডায়িং কারখানার রঙিন পানিতে নদের পানি নষ্ট হইয়া গেছে। এই পানিতে শরীর চুলকায়। আগে পানি দিয়া দুই ধারের জমিতে বোরো ধানের ব্যাপক চাষ হইত। কিন্তু পানি দূষিত হওয়ায় ধানচাষ কল্পনাই করা যায় না।’
মুছাপুর গ্রামের বাসিন্দা স্বপন মিয়া বলেন, ‘একসময় নদের পানি দিয়া গোসল করা, রান্নার কাজসহ সব ধরনের কাজ করত মানুষ। আর এখন পানির পচা গন্ধে কাছে যাওয়া যায় না। বর্ষা মৌসুমে অন্য জায়গা থেকে কিছু মাছ এই নদে এলেও কয়েক দিন থাকার পর মইরা ভাইসা ওঠে। এ নদ রক্ষায় ২০ বছরেও কোনো উদ্যোগ আমরা দেখি নাই। এই নদে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান লাঙ্গলবন্দ। প্রতি বছর মহাতীর্থ স্নান উৎসবে লাখো পুণ্যার্থী এই নদে স্নান করতে আসেন। আর এই দূষিত পানিতে তাদের স্নান করতে হয়।’
ভোরের আকাশ/ সু