সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌর এলাকার চর দেলুয়া যমুনা’র শাখা নদীর উপর সেতু নির্মাণকাজ ৩ বছরেও শেষ হয়নি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অবহেলা এবং কাজের এমন ধীর গতিতে সেতুটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরে রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে চর-দেলুয়া সহ চরাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৫ আক্টোবর মাস থেকে ৫ কোটি ৫৮ লাখ ৯২ হাজার ৬৪৬ টাকা ব্যায়ে ৭২ মিটার দীর্ঘ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে মঈনুদ্দিন বাশি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি সিরাজগঞ্জের উথান নামের একজন ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দেন। তিনি যথা সময়ে সেতুর কাজ শুরু করলেও ২০২২ সালে এসে শেষ করার কথা থাকলেও এখনো কাজটি শেষ করতে পারেনি। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ কাজের বাড়তি সময়ের আবেদন করলে তাও দেওয়া হয়েছিল।
সরেজমিনে ব্রিজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বেলকুচি পৌর এলাকার চর দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক হইতে বক্কার প্রামানিকের বাড়ি পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন ৭২ মিটার দীর্ঘ সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে ধীর গতিতে। প্রায় ৬ মাস কাজ বন্ধের পর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শ্রমিক সংকটের কারণ দেখিয়ে ধীর গতিতে কাজ চালাচ্ছে। এদিকে সাধারণ মানুষ কষ্ট করে পারাপার হচ্ছে নদীপথে।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা বলেন, আমাদের দাবী দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন ব্রিজের কাজ শেষ করা হয়।
চর দেলুয়া গ্রামের আবু সুফিয়ান, মোতালে সরকার, সাজু রহমান সহ একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা হলে তারা ভোরের আকাশকে বলেন, বহু কাঙ্খিত চর দেলুয়া গ্রামে যমুনা নদীর শাখার ওপর দিয়ে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হওয়াতে আমরা বেশ খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ তিন বছরেও শেষ করতে পারেনি। মাঝখানে প্রায় ৬ মাস কাজ অজ্ঞাত কারণে বন্ধ ছিল। এখন আবার কাজ শুরু করেছে। তাও আবার ঠিকমতো শ্রমিক থাকে না। যেভাবে কাজ চলছে তাতে ৫ বছরে কাজ শেষ হবে কি না তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিল শহিদুল ভোরের আকাশকে বলেন, এই গ্রামের জন্য ব্রিজটি সম্পূর্ণ হওয়া জরুরি। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে চরদেলুয়া গ্রাম সহ চরাঞ্চলের মানুষ এর সুফল ভোগ করবে বেশি। কেননা এই সেতুটি যমুনা নদীর শাখার ওপর দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু সঠিক সময়ে সেতু নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় এ এলাকার মানুষের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধীকারী উত্থানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে না পেয়ে তার মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। তবে তার ম্যানেজার মানিক ভোরের আকাশকে বলেন, সেতুর কাজ বন্ধ থাকার পর কয়েক দিন হলো আবার শুরু করা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি কাজটাও তাড়াতাড়ি শেষ করতে।
উপজেলা প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন ভোরের আকাশকে বলেন, সেতুটির কাজ বর্ষা মৌসুমের জন্য বন্ধ ছিল। বর্তমানে কাজ সচল রয়েছে। যদিও যথা সময়ে সেতুটির কাজ শেষ করার কথা থাকলেও নানা জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সময় বাড়তি চেয়ে আবেদন করেছিল। তাকে তা দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রিজটির কাজ শেষ করতে পারবো।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম ভোরের আকাশকে জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে যে সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে সে সময়ের মধ্যে যদি তিনি সেতুর কাজ সম্পূর্ণ শেষ না করতে পারে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভোরের আকাশ/মি