logo
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১৪:৫৮
মেয়াদ শেষ হলেও নির্মাণ হয়নি সেতু, লাখো মানুষের ভোগান্তি
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি

মেয়াদ শেষ হলেও নির্মাণ হয়নি সেতু, লাখো মানুষের ভোগান্তি

বেলীশ্বর-মহিশাষী সড়কে খালের উপর সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়নি

ঢাকার ধামরাইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সেতু নির্মাণ কাজের মেয়াদ ১ মাস আগে শেষ হয়েছে। অথচ এখনও এক-চতুর্থাংশ কাজও সম্পন্ন হয়নি। ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক হতে সাটুরিয়া-বালিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের সংযোগ বেলীশ্বর-মহিশাষী সড়কে খালের উপর গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন ও কয়েকটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

 

স্থানীয়রা বলছেন, প্রায় ৬ মাস আগেই কাজ বন্ধ করে ঠিকাদারের লোকজন চলে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে নির্মাণকাজ শেষ করা যায়নি।

 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ধামরাই উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের (ডিডিআইআরডব্লিউএসপি) ধামরাই-সাটুরিয়া-টাঙ্গাইল সড়কের মহিশাষী বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সংযুক্ত বাথুলি বাসস্ট্যান্ড সড়কের বেলিশ্বর মোহনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন জমির পানি চলাচলের জন্য সড়কে ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২২ সালের জুন মাসে। সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৪৫ লাখ ৩৯৩ টাকা। এলজিইডির বাস্তবায়নে সেতুটি নির্মাণ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নিরাপদ এন্টারপ্রাইজ। ২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও ২৫ ভাগ কাজও হয়নি। প্রায় ৬ মাস আগেই নির্মাণকাজ বন্ধ করে ঠিকাদারের লোকজন চলে গেছে।

 

বেলিশ্বর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সেতুটি দৃশ্যমানই হয়নি। সেতু নির্মাণস্থলে পাইলিংয়ের কাজের নামে কয়েকটি পিলারের কতকগুলো রড দাঁড়িয়ে আছে। পরবর্তী কাজের জন্য ঠিকাদারের কোনো মালপত্র সেখানে নেই। নেই কাজের কোনো সাইনবোর্ডও। পশ্চিম পাশে যে বিকল্প সড়ক করা হয়েছে চলাচলের জন্য, সেটিও অনেক ঢালু। বর্তমানে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা সাধারণ মানুষের চলাচলও অনেক কষ্টকর। নির্মাণস্থলে কোনো শ্রমিককেও পাওয়া যায়নি।

 

এ সময় কথা হয় বেশ কয়েকজন এলাকাবাসীর সঙ্গে। তারা জানান, গত ৬ মাস ধরে কাজ ফেলে রাখা হয়েছে। স্থানীয় মানুষ খুব দুর্ভোগে আছেন। তারা প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। অটোরিকশা-ভ্যানে চলাচলের সময় বিকল্প রাস্তার এক প্রান্তে নেমে অন্য প্রান্তে গিয়ে ওঠেন। বৃষ্টির সময় প্রচণ্ড পিচ্ছিল হয়ে যায়। তখন ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। কয়েকটি দুর্ঘটনাও ঘটেছে। ভানচালক হাসেম আলী জানান, বিকল্প রাস্তায় মালপত্র আনা-নেওয়ার সময় ভ্যান ঠেলে তুলতে হয় ওপরে। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।

 

সুতিপাড়া ইউনিয়নের বেশীশ্বর গ্রামের বাসিন্দা দেওয়ান আনিসুর রহমান শাহজাদা বলেন, এ রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ধামরাই-সাটুরিয়া সড়কের মহিশাষী বাসস্ট্যান্ড থেকে বাথুলি বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সংযুক্ত হয়েছে। ধামরাইয়ের সুতিপাড়া, কুশুরা, গাংগুটিয়া, বালিয়া, আমতা, চৌহাটসহ সাটুরিয়া উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ এ সড়ক দিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চলাচল করে। সেতুটির কাজ বন্ধ থাকায় ভ্যান, রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে প্রচণ্ড সমস্যা হচ্ছে। মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটে। দ্রুত সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানান তিনি।

 

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ধামরাই উপজেলা প্রকৌশলী তরুণ কুমার বৈদ্য জানান, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে নির্মাণকাজ শেষ করা যায়নি। সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে প্রয়োজনে পূর্বের টেন্ডার বাতিল করে নতুন টেন্ডার দেওয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/মি