চট্টগ্রামের শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত পাহাড় আর সমুদ্র বেষ্টিত অপরূপ সীতাকুণ্ড উপজেলা। উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে গড়ে ওঠা ব্যাপক শিল্প বিপ্লবে মাত্রাতিরিক্ত প্রভাব পড়লেও সৈয়দপুর, বারৈয়াঢালা, সীতাকুণ্ড, মুরাদপুর, বাঁশবাড়ীয়া ও কুমিরায় আজও নিবিড় বনায়নে রয়েছে গ্রাম বাংলার শোভা ও ঐতিহ্য। উপজেলার উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পসহ জীব-বিচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে সরকারি-বেসরকারিভাবে বনায়নে রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব।
তারই ধারাবাহিকতায় গ্রামাঞ্চলের অনেকেই নার্সারী পেশার সাথে যুক্ত হচ্ছেন। ফলজ, বনজ, ঔষধি ও ফুলের চারা উৎপাদনে গ্রামীণ নার্সারীগুলোর গুরুত্ব রয়েছে।
উপজেলায় নার্সারী শিল্পে স্বাবলম্বীদের একজন পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড, আমিরাবাদের বাসিন্দা মোজাম্মেল হক ও ছকিনা খাতুনের জ্যেষ্ঠপুত্র জাফর ইকবাল রাজন। অসীম সাহস, শ্রম, মেধা আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে দীর্ঘ ২২ বছর নার্সারী শিল্পে অতিক্রম করা রাজনের পারিবারিক কিংবা ব্যক্তিগত কোন জমি নেই। অন্যের লিজ নেওয়া জমিতেই স্বপ্নের নার্সারী গড়ে তুলেছিলেন রাজন। বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ পিতার সীমাবদ্ধ সামর্থ আর অভাব অনটনের সংসারে চাপে পড়ে লেখাপড়ায় খুব বেশি অগ্রসর হওয়া সম্ভব হয়নি। তবুও নার্সারীর গাছে গাছে ফুল-ফল ও কলির গন্ধে ছড়িয়ে পড়েছে রাজনের সাফল্য।
রাজনের নার্সারীতে চারাগাছ সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকায় ও কলম চারাগাছ ১৫০-২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন নার্সারীতে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ভীড় করছে ফলজ, বনজ, ঔষধি কিংবা ফুলের চারা ক্রয় করতে।
রাজন জানান, বর্ষাকালে সাধারণত বনজ গাছের চারা এবং শীতকালে সবজি ও ফুল গাছের চারা বেশি বিক্রি হয়। রাজনের সংসারে রয়েছে স্ত্রী রহিমা বেগম ও ৫ বছরের শিশু মোহাম্মদ ফুহাদ। রাজনের স্ত্রী সাংসারিক যাবতীয় কাজ দক্ষতার সাথে পরিচালনা করায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নার্সারীতে কাটিয়ে দেয় বৃক্ষমানব রাজন।
নার্সারীতে ফুল ও ফলের চারা কিনতে আসা পূর্ব সৈয়দপুরের বাসিন্দা নূর খান সিহাব বলেন, কর্মমুুখী শিক্ষার্থীরা এখন ভিন্ন আঙ্গিকে নিজেদের কর্মদক্ষতা তুলে ধরার কাজে ব্যস্ত। আমার ষষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছোট বোন জান্নাতুল ফেরদৌস তাসপিয়া বাড়ির আঙ্গিনা ও ছাদে ফল ও সবজির দু‘টি বাগান করেছে। বোন তাসপিয়ার আগ্রহে গাছের চারা কিনতে রাজন নার্সারীতে এসে ফুলে-ফলে মনটা বদলে গেল।
ভোরের আকাশ/ সু