শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা। চলনবিলের অধ্যুষিত এ উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলী মাঠজুড়ে ক্ষীরার ব্যাপক ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে ক্ষীরার জমি থেকে ক্ষীরা তুলে বাজার জাত করতে শুরু করেছেন কৃষকেরা। ক্ষীরার ভালো ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুঠে উঠেছে।
স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই এলাকার ক্ষীরা অন্যান্য এলাকার ক্ষীরার চেয়ে অনেক সুস্বাদু হওয়ায় এখানকার ক্ষীরার চাহিদা অনেকটাই বেশি থাকে। পাশাপাশি বোরো ধানের আবাদের চেয়ে ক্ষীরার চাষে খরচ বেশি হলেও লাভের পরিমানটা বেশি হয়। তাই প্রতি বছর বোরো ধানের পাশাপাশি কৃষকেরা ক্ষীরার চাষ করে থাকে।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বারুহাস, সগুনা, মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ফসলী মাঠে এ বছর ব্যাপক ক্ষীরা আবাদ হয়েছে। গত বছর উপজেলায় ২৮০ হেক্টর জমিতে ক্ষীরার আবাদ হলেও চলতি বছর প্রায় ৩২৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
বারুহাস ইউনিয়নের কুমুম্বীরগ্রামের কৃষক আফসার আলী ভোরের আকাশকে বলেন, এ বছর ক্ষীরার ভালো ফলন হয়েছে। এক বিঘা জমিতে ক্ষীরা চাষ করতে খরচ হয়েছে ১৪-১৫ হাজার টাকা, যা বিক্রি করে ৪৫-৫০ হাজার টাকা আয় করা যাবে। ফলে প্রতি বিঘা জমিতে ক্ষীরার আবাদ করে কৃষকের লাভ হচ্ছে ৩৫-৪০ হাজার টাকা।
বিনোদপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস সোবাহান ভোরের আকাশকে বলেন, এবার ক্ষীরার ফলন অনেক ভালো হয়েছে, প্রতি বছরের তুলনায় এ বছর বেশি দামে বিক্রি করতে পারছি। এক বিঘা জমিতে ক্ষীরা চাষে খরচ হয়েছে ১৪-১৫ হাজার টাকা। সব ব্যয় বাদে ৩৫-৪০ হাজার টাকা লাভবান হচ্ছি আমরা।
খড়খড়িয়া গ্রামের আরেক কৃষক মফিজ উদ্দিন ভোরের আকাশকে বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ১০০ মণ ক্ষীরা উৎপাদন হয়। প্রতি মণ ক্ষীরা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার দুইশত টাকা দরে। এতে লাভবান হচ্ছেন চাষি।
উপজেলার স্থানীয় আড়তদাররা ভোরের আকাশকে বলেন, আমাদের এই অঞ্চলের ক্ষীরা খেতে অনেক সুস্বাদু। তাই সারাদেশে এর চাহিদা অনেক বেশি। এ বছর ক্ষীরার ফলন অনেক বেশি হয়েছে। দামও তুলনামূলক বেশি পাচ্ছি। আমরা প্রতিদিন ২০-৩০টি ট্রাক ক্ষীরা ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছি।
এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন ভোরের আকাশকে জানান, চলতি বছর ৩০০ হেক্টর জমিতে ক্ষীরা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৩২৫ হেক্টর জমিতে। গত বছর ২৮০ হেক্টর জমিতে ক্ষীরার আবাদ হলেও এ বছর ৫৫ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। ক্ষীরা চাষিদের ব্যাপক উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি পরিচর্যার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। ফলে ফলন ভালো হয়েছে। সেই সঙ্গে ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কৃষক।
ভোরের আকাশ/মি