logo
আপডেট : ১১ মার্চ, ২০২৪ ১০:৩৫
মহাসড়কে অবৈধ যানবাহনের দাপট
ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

মহাসড়কে অবৈধ যানবাহনের দাপট

ট্রাফিক বক্সের সামনে অবাধে চলছে অবৈধ তিন চাকার যানবাহন

ভালুকা উপজেলায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দাপটের সঙ্গে চলছে অসংখ্য অবৈধ যানবাহন। এসব তিন চাকার যানবাহনের বেশির ভাগই চলাচল করে উল্টোপথে। যত্রতত্র সড়ক দখল করে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় এসব যানবাহন। যে কারণে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনা, ঝরছে প্রাণ। অথচ মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়ানো এসব নিষিদ্ধ যানবাহন বন্ধের নেই কোনো কার্যকর উদ্যোগ।

 


অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যমতে, নাসির গ্লাস কারখানা থেকে নিশিন্দা পর্যন্ত ভালুকা উপজেলার প্রায় ২৩ কিলোমিটার মহাসড়কের দু’পাশে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় শতাধিক শিল্পকারখানা। এসব শিল্পকারখানার বেশির ভাগই হবিরবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়। এসব কারখানা ঘিরে মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ অটোরিকশা, ইজিবাইক। অথচ বেশির ভাগ কলকারখানার রয়েছে নিজস্ব শ্রমিক পরিবহন।

 


এছাড়া ত্রিশাল থেকে গাজীপুরের মাওনা চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রতি ৫ মিনিট পর পর হাইওয়ে মিনি বাস এবং শালবন নামে পরিবহন যাত্রী বহন করে। এসব বাসে খেয়াল-খুশিমতো ওঠানামা করতে পারেন যাত্রীরা। তবু মহাসড়কে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা ও ইজিবাইক।

 


মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ এসব তিন চাকার যানবাহনের চালকদের অধিকাংশই অপ্রাপ্তবয়স্ক ও অদক্ষ। প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। অকালে ঝরছে প্রাণ। চার লেন সড়কটির প্রতি ৩-৪ কিলোমিটার পরপর যানবাহন পারাপারের জন্য সড়ক বিভাজকের কাটা অংশ রয়েছে। এসব জায়গা দিয়ে উল্টোপথে ঢুকে পড়ে যানবাহন।

 


গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার আমির হোসেন, ত্রিশাল উপজেলার সাইফুল ইসলাম, একই এলাকার সোহেল মিয়া ও বুলবুল হোসেন মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক। তারা জানান, আগে জামিরদিয়া মাস্টারবাড়ি, সিডস্টোর বাজার ও ভালুকা বাসস্ট্যান্ড এই তিন জায়গায় প্রতিদিন ৬০ টাকা চাঁদা দিয়ে মহাসড়কে চলাচল করতেন তারা। ২০-২৫ দিন আগে সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ ভালুকাকে চাঁদামুক্ত ঘোষণা করেন। এখন আর তাদের কোথাও চাঁদা দিতে হয় না। এই সুযোগেই মহাসড়কে দাপটের সঙ্গে চলাচল করছে এসব অবৈধ যানবাহন।

 


পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক আবদুর রাজ্জাক জানান, মহাসড়কে রিকশা চালানোর সমস্যা হলো হাইওয়ে পুলিশ রিকশা আটক করে মামলা দিয়ে দেয়। এতে অনেক ঝামেলায় পোহাতে হয়। আবার মাঝে মধ্যে ৫০০-১০০০ টাকা দিলে ছেড়ে দেয়। কিন্তু এত টাকা তো তাদের কাছে সব সময় থাকে না।

 


টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভরাডোবা হাইওয়ে থানার ওসি আতাউর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করছি মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে। তবে জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন মহল সোচ্চার না হলে মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো কঠিন।’

 


ভালুকা জোনের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামান বকুল জানান, পৌর এলাকা যানজটমুক্ত রাখার দায়িত্ব তাদের। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে শতভাগ সেবা দিতে পারছেন না তারা।

 


পৌর মেয়র ডা. এ কে এম মেজবাহ উদ্দিন কাইয়ুম বলেন, ‘আমরা ওই সব যানকে অভ্যন্তরীণ সড়কে চলার জন্য শুধু ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে থাকি।’

 


ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সুমাইয়া আক্তার জানান, সম্প্রতি জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় অবৈধ যানবাহন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। নির্দেশ পেলে অচিরেই মহাসড়কে চলাচলকারী ওই সব নিষিদ্ধ যান চলাচল বন্ধে অভিযান চালানো হবে।

 

ভোরের আকাশ/ সু