সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের কাশিনাথপুর বাজার সংলগ্ন ব্রীজটি গত ২ বছর আগে ভেঙে গেলেও তা সংস্কার না করায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।
যাতায়াতের বিকল্প সড়ক না ব্রীজের ভেঙে যাওয়া অংশে বাঁশের মাচা বসিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ ৮ গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।
সংশ্লিষ্টরা নতুন ব্রীজ নির্মানের আশ্বাস দিয়ে থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে ভেঙে পড়ে আছে ফুলজোড় নদীর উপর নির্মিত কাশিনাথপুর বাজার সংলগ্ন সরাতৈল ব্রীজের পশ্চিম অংশ।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ২০২২ সালের বন্যার পানির তীব্র স্রোতে ব্রীজটির পশ্চিম অংশ ভেঙে পড়ে। সঙ্গে সংযোগ সড়কের কিছু অংশ ধ্বসে যায়। এরপর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর সংস্কারের কোনো উদ্যেগ নেওয়া হয়নি। এ পরিস্থিতিতে বিকল্প সড়ক না থাকায় স্থানীয় এলাকাবাসী ভেঙে যাওয়া অংশে বাঁশের মাচা বসিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ব্রীজটি সংস্কার না করায় ৮ গ্রামের কৃষক ও শিক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছে বেশি।
এই ব্রীজের দুইশ গজের মধ্যে রয়েছে, কায়েমপুর ইউনিয়ন পরিষদ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, ৫টি বিদ্যালয়, দুটি মাদ্রসা, একটি এতিমখানা সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাজারে মালামাল নিয়ে আসতে দুর্ভোগে পড়ে কৃষকরা। সামনে বর্ষা মৌসুমের আগেই ব্রীজটি সংস্কার চায় এলাকাবাসী। তা না হলে পানির স্রোতে ব্রীজের পুরো অংশ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তাদের।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে উপজেলার কাশিনাথপুর বাজারের কাছে ফুলজোড় খালের উপর ৩২ লাখ ২৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪০ ফিট সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কাশিনাথপুর সেতুর দক্ষিন পাশে শাহজাদপুর উপজেলার সড়াতৈল, সায়েস্তাবাদ, চিনাধুকুরিয়া, চক হরিপুর, কুমারগানা, মুরুটিয়া, ভেড়াডাঙ্গা, খলিফাপাড়া সহ ৮টি গ্রাম।
আর উত্তর পাশে উপজেলা শহর, কায়েমপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, ৫টি বিদ্যালয়, দুটি মাদ্রসা, একটি এতিমখানা সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ব্রীজটি ভেঙে যাওয়া ৮ গ্রামের মানুষ যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
কায়েমপুর ইউনিয়নের চককৃষ্ণপুর গ্রামের মাসুদ রানা ভোরের আকাশকে বলেন, ব্রীজটি দিয়ে যাতায়াত করা খুব কষ্ট হয়। যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এই অঞ্চলের কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে হাটে আসতে পারে না। ভাঙা অংশ দ্রুত সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা প্রয়োজন। তা না হলে বৃষ্টি এবং বর্ষায় পুরো ব্রীজ ভেঙে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
বেড়াডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল কাদের ভোরের আকাশকে বলেন, সেতুর সঙ্গে বাঁশের মাচা বসিয়ে তার উপর দিয়ে য়াতায়াত করতে হচ্ছে। বাঁশের মাচাও পুরাতন হয়ে গেছে। বিশেষ করে সেতুর দক্ষিন পাশে স্কুলের কয়েকশ ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে তারা এই ভাঙা সেতু দিয়ে ঝুকি নিয়ে পারাপার হয়। যে কোন সময় ভেঙে পড়তে পারে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে তাই চলাচলের জন্য সেতুটি সংস্কার করা প্রয়োজন।
কায়েমপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মমিন আলী ভোরের আকাশকে বলেন, ফুলজোড় নদীর উপর নির্মিত কাশিনাথপুর বাজার সংলগ্ন ব্রীজ ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। ইঞ্জিনিয়ার এসে মাপ দিয়ে নিয়ে গেছে। কবে বাস্তবায়ন হবে তা জানি না। এই ব্রীজ দিয়ে ২০-২৫ হাজার লোক ও শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। যে কোন মুহুর্তে ব্রীজটি ভেঙে যেতে পারে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। তাই বর্ষার আগেই ব্রীজটি মেরামত করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম ভোরের আকাশকে বলেন, বন্যার পানির স্রোতে ব্রীজটির পশ্চিম অংশে ভেঙে যায়। ভেঙে যাওয়া সেতু দ্রুত অপসারন করা হবে। সেই জায়গান নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যেগ নেয়া হয়েছে। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
ভোরের আকাশ/ সু