সারা দেশের মত কিশোরগঞ্জের ভৈরবেও প্রচন্ড তাপদাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিংয়ের মাত্রা। ফলে জনবজীন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় সরকারি হাসপাতালের ভর্তি হওয়া রোগীদের বিছানায় ছটফট শুরু হয়।
এছাড়াও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে শহরের বিভিন্ন কল-কারখানায় ব্যহত হচ্ছে উৎপাদন, নষ্ট হচ্ছে মোটর এবং বাসা বাড়ির ফ্রিজ ও এসিসহ বৈদুতিক যন্ত্রপাতি।
জানা যায়, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে দেড় বছর আগে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যার অবকাঠামোগত উন্নতি করা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বিদ্যুৎ চলে গেলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা। কেননা লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে সৌর বিদ্যুৎতের প্যানেল স্থাপনের ৬ মাস না পেরুতেই এক বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এছাড়াও মোটা অঙ্কের টাকায় কেনা জেনারেটরটিও জ্বালানী বরাদ্ধ না পাওয়ায় সেটিও চলছে না। ফলে সরকারি হাসপাতালের সেবা নিতে এসে বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। এ দুই কারণে মশার কামড় আর গরমে অতি কষ্টে সময় পাড় করছেন তারা।
হাসপাতালে ভর্তি রোগী, মকবুল হোসেন ও ইসমাঈল মিয়া জানান, তারা গরিব মানুষ। অনেক আশা নিয়ে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু লোডশেডিং হলে জেনারেটর না থাকায় গরমের কারণে খুব কষ্ট হচ্ছে তাদের।
বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন নার্স ও ডাক্তারা বলে জানালেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা. বুলবুল আহমেদ। বিষয়টি মৌখিক ও লিখিতভাবে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ জানানো হয়ে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ভৈরব কুলিয়ারচরে ৪৬ মেয়াওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ রয়েছে মাত্র ২১ মেগাওয়াট। জ্বালানী সংকটে ভৈরব পাওয়ার লিমিটেড (বিপিএল) ৫৪ মেগাওয়াটের স্থলে ১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। আর আশুগঞ্জ থেকে মাত্র ৩ মেগাওয়াট বরাদ্ধ পাচ্ছেন। ফলে ঘন ঘন লোডশেডিয়ের কারণে কল-কারখানায় ব্যহত হচ্ছে উপাদন, নষ্ট হচ্ছে বাসা বাড়ির ফ্রিজ ও এসিসহ বৈদুতিক যন্ত্রপাতি। এ সুযোগে বেড়েছে ব্যটারী চালিত চার্জার ফ্যান ও আইপিএসের দাম। আবার কেউ কেউ পুরাতন অচল যন্ত্রটিকে সচল করতে ভিড় করছেন মেরামতের দোকানগুলোতে।
বৈদ্যুতিক সামগ্রী বিক্রেতারা জানান, আমরা বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়, তাই ক্রেতাদের কাছেও বেশি দামে বিক্রি করছি। এছাড়া কোন উপায় নেয়। এই ব্যবসায়ীর তথ্য মতে, প্রতিটি ফ্যানে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়ে দিয়েছে কোম্পানিগুলো।
দ্রুত লোডশেডিং সমস্যা সমাধান এবং সরকারি হাসপতালে জেনারেটরটি চালুর ব্যবস্থা করবে সরকার। বৈদ্যুতিক সামগ্রীর দামের দিকে নজর দিবে প্রশাসন। এমনটাই দাবী ভৈরববাসীর।
লোডশেডিং প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভৈরব বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী মো. ইমরান হোসেন তালুকদার বলেন, একদিকে দাবদাহের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। অন্যদিকে জ্বালানি সংকটে পড়েছে বিপিএল। ফলে এ লোডশেডিং সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ সংকট নিরসনকল্পে উদ্ধর্তন কতৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আশা করি দ্রুতই এ সমস্যা সমাধান হবে।
ভোরের আকাশ/মি