সিরাজগঞ্জের তাড়াশ-গুরুদাসপুর মৈত্রি সড়কের মাঝে উপকরণ সামগ্রী ফেলে রেখে মেরামত কাজ করা হচ্ছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও সাধারণ লোকজনের। এদিকে সড়কের কাজ দায়সাড়াভাবে করা হচ্ছে বলে স্থানীয় লোকেরা অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, কুন্দইল বাজার থেকে দিঘীসগুনা বাজার পর্যন্ত ৭ হাজার ২২৫ মিটার মেরামত কাজের প্রক্কলিত মূল্য ২ কোটি ৭৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা। চুক্তি মূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। চুক্তি সম্পাদনের তারিখ ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ। কাজ আরম্ভের তারিখ ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ। চুক্তি মোতাবেক কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের মে মাসের ৩১ তারিখে। চট্টগ্রামের ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজের চুক্তি সম্পাদন হয়। পরে জেলা নওগাঁর ইথিলা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ কাজটি কিনে নেয়। এ ঠিকাদীর প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারী রাসেল আহমেদ কাজটি নাটরের বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. অহিদুল ইসলাম গোকুলের কাছে বেচে দেন।
কুন্দইল গ্রামের অটোভ্যনচালক রুবেল হোসেন, আব্দুল মান্নান, সিলিম হোসেন, সোহাগ হাসান, ব্যটারিচালিত অটোচালক আব্দুল লতিব, আব্দুল হান্নান ও উম্মুর আলী বলেন, কুন্দইল সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। পাথর, বালু ও সিমেন্ট সড়কের মাঝে ফেলে রেখে কাজ করা হচ্ছে। মেরামত কাজের ম্যাশিন সড়কে রেখে উপকরণ সামগ্রী মেশানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ সড়কে যাতায়াতের সময় কিছু গাড়ি উল্টে গেছে। ভুক্তভোগী লোকজন দ্রুততম সময়ের মধ্যে সড়কের মাঝ থেকে উপকণ সামগ্রী সরিয়ে নিয়ে নির্বিঘ্নে যাতায়াত নিশ্চিত করার জোর দাবি জানিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তাড়াশ-গুরুদাসপুর মৈত্রি সড়কের কুন্দইল সেতুর ঢালুতে সড়কের মাঝে পাথর, বালু, সিমেন্ট, মিক্সার ম্যাশিন রেখে দেওয়া হয়েছে। কামারশন গ্রাম এলাকার পাশে সড়কের মাঝেও পাথর ঢেলে রাখা হয়েছে। সড়কের এসব স্থান দিয়ে চলাচলের সময় অধিকাংশ যানবাহন পাথরে আটকে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে যাত্রীসাধারণ গাড়ি থেকে নেমে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি পার করে দিচ্ছেন। তাছাড়া কুন্দইল সেতুর পুর্ব পাশের ঢালুতে কালো পাথরের সাথে সাদা পাথর মিশিয়ে মেরামত কাজ করা হচ্ছে।
অপরদিকে স্থানীয় বেশ কিছু লোকজন কুন্দইল সড়ক মেরামত কাজে অনিয়মের অভিযোগ করে বলেন, মেরামত কাজে কালো পাথরের সাথে সাদা পাথর মেশানো হচ্ছে। পাথর ও সিমেন্ট কম রেখে পরিমাণে বালি বেশী মেশানো হচ্ছে। ঢালাই কাজের শেষে ঢালায়ের উপর পানির ব্যবহারে খুব সল্পতা রয়েছে। বিশেষ করে ঢালাই শুকাতেই সড়কের কোন-কোন স্থানে চিকন ফাটল দেখা দিচ্ছে। তাদের ধারনা এভাবে সড়ক মেরামত করা হলে বেশি দিন টিকবেনা।
অভিযোগকারীরা আরো বলেন, খুব ধীরগতিতে মেরামত কাজ করা হচ্ছে। চলতি মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা। অথচ এখনো পর্যন্ত ৫ ভাগের একভাগ কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার।
ঠিকাদার ও বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. অহিদুল ইসলাম গকুল সড়ক মেরামত কাজে ধীরগতির কথা স্বীকার করে ভোরের আকাশকে বলেন, তিন গাড়ি সাদা পাথর মেরামত কাজের শুরুর দিকে দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকে কালো পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে। পাথর, বালি ও সিমেন্ট ইস্টিমেট অনুযায়ি মেশানো হচ্ছে। পানির ব্যবহারে কিছুটা সল্পতা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজুলল হক ভোরের আকাশকে বলেন, গুরুদাসপুর-তাড়াশ মৈত্রি সড়কের মেরামত কাজ নির্ধারিত সময়ে শুরু করার জন্য ঠিকাদারকে বারবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রকল্প বাস্তয়ন প্রভিষণে সড়কের বাইরে নির্মাণ সামগ্রী রেখে কাজ করার ব্যায়ভার ধরা নাই। অন্যান্য অভিযোগ সত্য নয়।
ভোরের আকাশ/ সু