নীলফামারী জেলার চিলাহাটির দক্ষিণ চন্দখানা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪ প্রার্থীকে নিয়োগদানের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই গোপন তথ্য ফাঁস হওয়ায় ইতিপূর্বে ওই বিদ্যালয় দুইবার নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পুনরায় তৃতীয় ধাপে মনোনীত ৪টি পদে ৪ জন প্রার্থীকে নিয়োগ দানের অপচেষ্টা চলছে।
মনোনীত প্রার্থীরা হলেন, পরিছন্নতা কর্মী পদে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোশারফ হোসেনের মেয়ে শিল্পী আক্তার, অফিস সহায়ক পদে সভাপতির ভাই আতাউর রহমানের স্ত্রী রতনা বেগম, নৈশ প্রহরী পদে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম এর ছেলে নুর আলম ও আয়া পদে পাবর উদ্দিনের মেয়ে জোসনা বানু।
সরেজমিনে গিয়ে দক্ষিণ চান্দখানা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবুল হকের কাছে প্রথম ধাপে কোন পদে কতজন, দ্বিতীয় ধাপে কত জন আবেদন করেছিলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকল কাগজপত্র আমার বাড়িতে আছে। তাই কোনো কিছু বলতে পারব না। আপনারা সভাপতির সাথে যোগাযোগ করেন।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোশারফ হোসেন (ঢোল) জানান, দাতা সদস্যদের ম্যানেজিং কমিটিতে নেওয়া হয়নি বলে তারা পরপর দুইবার পরীক্ষায় এরকম গন্ডগোল করেছে, ফলে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল হয়ে গেছে। যে কেউ আবেদন করতে পারে। ডিজি প্রতিনিধির উপস্থিতিতে নিয়োগের মাধ্যমে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
অপরদিকে নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, মোশারফ হোসেন (ঢোল) তার মেয়ে এবং ভাইয়ের স্ত্রীকে গোপনে নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্ত করেছে।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২৩ সালের ২ ফ্রেবুয়ারী পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৪টি পদে ৩১ জনের আবেদন গ্রহণ করা হয়। তাদের এই সাজানো পরীক্ষা নিতে গিয়ে স্থানীয়দের তোপের মুখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে। দ্বিতীয় ধাপে ১৬-১০-২৩ তারিখে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১০ জনের আবেদন গ্রহণ করে। প্রথম ধাপের ৮১ জন দ্বিতীয় ধাপের ১০ জনসহ মোট ৪১ জন প্রার্থীকে নিয়ে বিদ্যালয়ে সাজানো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় ৪টি পদে তাদের মনোনীত ওই ৪ জনকে নিয়োগ দেওয়ার তথ্য পুনরায় ফাঁস হলে পরীক্ষার পূর্বে স্থানীয়দের চাপে পরে দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্থগিত করে।
এদিকে পুনরায় সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক তাদের প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য ২ এপ্রিল সমকাল পত্রিকায় পূর্ণ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পূর্বের প্রার্থীদের বাতিল করে নতুনভাবে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে সভাপতির মেয়ে শিল্পী আক্তার সহ ৪ জন প্রার্থী, অফিস সহায়ক পদে সভাপতি ভাই আতাউর রহমানের স্ত্রী রতনা বেগম সহ ৬ জন প্রার্থী, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলামের ছেলে নুর আলম সহ ৪ জন প্রার্থী ও পাবর উদ্দিনের মেয়ে জোসনা বানু সহ ৮ জন প্রার্থীর আবেদন গ্রহণ ও যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করে। তারা গোপনে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের মনোনীত প্রার্থীদের নিয়োগ দানের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডোমার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাকেরিনা বেগম বলেন, ইতিপূর্বে অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরপর দুইবার নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। প্রার্থী চূড়ান্ত করার কোন সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে আবারও পরীক্ষা বাতিল করা হবে।
ভোরের আকাশ/ সু