logo
আপডেট : ৫ জুন, ২০২৪ ১৭:৪৩
নদী-খাল-রাস্তা নেই
ধানখেতে নির্মিত হচ্ছে সেতু
শেরপুর প্রতিনিধি

ধানখেতে নির্মিত হচ্ছে সেতু

ক্যাপশন : কৃষিজমিতে চলছে সেতুর কাজ

নদী নেই, খাল-বিলও নেই। রাস্তাও নেই। আছে ফসলি মাঠ। এমন স্থানে অজানা কারণে স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) অর্থায়নে সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ব্রিজ। স্থানীয় জনগণও জানে না ব্রিজটি কেন নির্মাণ করা হচ্ছে।

 

খোলা মাঠে ব্রিজটি নির্মাণের কারণ জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান সরাসরি কোনো উত্তর দিতে পারেননি। শুধু বলছে, ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ হলে রাস্তা নির্মাণ করা হবে।

 

এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের অর্থায়নে ৬৪ মিটার দৈর্ঘ্যের সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে এই ব্রিজ। ইতিমধ্যে ব্রিজের পাইলিংয়ের কাজ চলছে। ব্রিজটি যেখানে নির্মাণ হচ্ছে এটি শেরপুর সদর উপজেলার গাজীরখামার ইউনিয়নের সর্বশেষ প্রান্ত কড়ইতলা গ্রাম। এরপর রয়েছে নালিতাবাড়ী উপজেলা কলসপাড় ইউনিয়নের নাকশি ও গাগলাজানি গ্রাম। নির্মাণাধীন ব্রিজ এলাকা থেকে নালিতাবাড়ী-গাজীরখামার-শেরপুর সড়কের দূরত্ব প্রায় আধা কিলোমিটার।

 

সাধারণত ব্রিজ নির্মাণ করা হয় পানিপ্রবাহ কিংবা যেখানে কোনো জলাশয় বা খাল-বিল এবং নদী-নালা থাকে। কিন্তু শেরপুর জেলার সদর উপজেলার গাজীরখামার ইউনিয়নের কড়ইকান্দা গ্রামের শেষ প্রান্তে এই নির্মাণাধীন ব্রিজটির আশপাশে কোনো জলাশয় বা নদী নেই। আছে শুধু বিস্তীর্ণ ধানখেত। স্থানীয় জনগণ বলছেন, এ যেন ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়া অবস্থা।

 

স্থানীয় গ্রামবাসী নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা জানি ব্রিজ মানে হচ্ছে দুটি গ্রামের মেলবন্ধন বা সেতুবন্ধন, কিন্তু এখানে সেতুবন্ধন তো দূরের কথা, আশপাশে ধানক্ষেত ছাড়া কিছুই নেই। আরেক গ্রামবাসী রুহুল আমীন বলেন, গরু ছাড়া গোয়ালের যেমন মূল্য নেই। ঠিক তেমনি রাস্তা ছাড়া ব্রিজের কোনো মূল্য নেই। খোলা মাঠে এখানে কেন ব্রিজ করা হচ্ছে আমরা গ্রামবাসী জানি না।

 

গাজীরখামার ইউপি চেয়ারম্যান আওলাদুল ইসলাম বলেন, আপাতদৃষ্টিতে ব্রিজের আশপাশে রাস্তা দেখা না গেলেও ভবিষ্যতে রাস্তা করার জন্য পাশের ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে রাস্তা করার জন্য। উনি জমির ব্যবস্থা করে দেবেন।

 

নদী-নালা কিংবা খাল না থাকা সত্ত্বেও ব্রিজ হচ্ছে কেন? প্রশ্ন করা হলে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান এড়িয়ে যান। তিনি জানিয়েছেন, পূর্বে এখানে রাস্তা ছিল। কিন্তু প্রভাবশালী মহল কেটে নিয়েছে। তবে এখানে ব্রিজও হবে, রাস্তাও হবে। এতে সরকারি টাকা অপচয় হবে না।

 

ভোরের আকাশ/মি