টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দ্রুত বাড়ছে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি। এতে ডুবে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট। ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই লাখেরও বেশি মানুষ। বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি কখনও কমছে আবারও কখনও বাড়ছে। এতে চরম দুশ্চিন্তায় সময় কাটছে সুনামগঞ্জের ২০ লাখেরও বেশি মানুষের। এ দুশ্চিন্তা গতকাল বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। গতকাল সকাল থেকে সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে।

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মেঘালয় রাজ্যার চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পাহাড়ি ঢল নামছে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদ নদীতে। ফলে দ্রুত গতিতে বাড়ছে জেলার সুরমা, বৌলাই, রক্তি ও যাদুকাটা নদীর পানি। এতে বন্যার আশঙ্কায় সময় পার করছেন জেলার বাসিন্দারা। এদিকে পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, ছাতক ও দোয়ারা বাজার সহ বেশ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের শরীফপুর গ্রামের প্রধান সড়ক ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দোয়ারাবাজার উপজেলার সাথে সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে সুরমা, লক্ষীপুর, বাংলাবাজারসহ তিন ইউনিয়নের। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দূর্গাপুর সড়ক ডুবে যাওয়ায় সুনামগঞ্জ জেলা শহরের সাথে তাহিরপুর উপজেলার সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে ছোট নৌকা করে বাড়তি ভাড়া দিয়ে গন্তব্য স্থানে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। পানির কারণে রাস্তার পাশে আটকে পড়েছে ছোট-বড় প্রায় ৫০টি যানবাহন। ঢলের পানিতে নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তি পড়ছেন।

বিশ্বম্ভপুর উপজেলার মাছুম মিয়া জানান, পাহাড়ি ঢলের পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। গন্তব্য স্থানে যেতে আমাদের বাড়তি ভাড়া যেমন গুনতে হচ্ছে তেমন ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘন্টায় ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সেই সাথে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢল অব্যাহত থাকলে সুনামগঞ্জের সকল নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে। এ কারণে মূলত জেলায় স্বল্প মেয়াদি একটা বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

ভোরের আকাশ/মি