logo
আপডেট : ৬ জুন, ২০২৪ ১৯:৪৩
বাজেট
ঘাটতি পূরণ লক্ষ্যমাত্রা অস্থিরতা বাড়াবে ব্যাংক খাতে
হেলাল সাজওয়াল

ঘাটতি পূরণ লক্ষ্যমাত্রা
অস্থিরতা বাড়াবে ব্যাংক খাতে

প্রস্তাবিত বাজেটে চলতি অর্থবছর ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় নতুন অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে উপস্থাপনের সময় এই লক্ষ্যমাত্রার কথা জানান অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

 

প্রস্তাবিত বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংকের ওপর চাপ ব্যাংক খাতে চলমান তারল্য সংকট আর বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ সংকট আরো বেড়ে যাবে। ফলে অস্থিরতা বাড়বে ব্যাংক খাতে এমন মন্তব্য করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

 

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এটি দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ বাজেট। দেশের ইতিহাসে বিশাল এ প্রস্তাবিত বাজেটের ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত এ বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এটি মোট জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। সরকার অভ্যন্তরীণ ঋণ নেবে এক লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।


অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যাংক খাত থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এরপর সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। অন্যান্য খাত থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা নেবে সরকার। প্রস্তাবিত বাজেটে বৈদেশিক ঋণ হিসেবে নেবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে যা আছে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।

 

বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে এর লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। কর বহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্য ১৫ হাজার কোটি টাকা, কর ছাড়া প্রাপ্তি ৪৬ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহ হবে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্স এর চেয়ারম্যান মাঈন উদ্দিন দৈনিক ভোরর আকাশকে বলেন, বাজেটের এ লক্ষ্যমাত্রা বেসরকারী খাতের বিনিয়োগের জন্য সংকট তৈরী করবে। বেসরকারী খাতে বিনিয়োগের পরিমান কমে গেলে এ ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বাড়বে ফলে বেড়ে যাবে সুদের হার আর সুদের হার বাড়লে খেলাপির সংখ্যাও বাড়বে। এক কথায় সরকার ব্যাংক খাতে চাপ দিলে এ খাতে অস্থিরতা বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, দরকার ছিলো রাজস্ব আদায়ের পরিধি বাড়ানো। খেলাপি করদাতাদের কর দিতে বাধ্য করতে পারলে রাজস্ব পরিধি বাড়াতে পারবে সরকার।

 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ইকনমিকস এর প্রফেসর ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের যে লক্ষমাত্রা ব্যাংক খাতে নেয়া হয়েছে তাতে বর্তমান অস্থির পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তুলবে। চলমান তারল্য সংকট আরও প্রবল আকার ধারন করবে। সুদের হার বাড়বে বিনিয়োগ ঘাটতিতে অনেক কল কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে এতে কর্মসংস্থান সংকট দেখা দিবে। তিনি বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য যা করার তাই করা উচিত সরকারের তাতে কিছু ঘাটতি পূরন হতে পাওে এছাড়া এগ্রসিভলি যদি কর আদায় করা যায় তাহলে বাজেট ঘাটতি অনেকাংশে পুরন করা সম্ভব হবে।

 

ভোরের আকাশ/মি