logo
আপডেট : ১০ জুন, ২০২৪ ১২:২৭
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন যাতায়াত বিচ্ছিন্ন 
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন যাতায়াত বিচ্ছিন্ন 

তিনদিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। মিয়ানমারের ওপার থেকে অব্যাহত গুলিবর্ষণের কারণে এই রুটে ট্রলার এবং স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। রোববার (০৯ জুন) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।
 
তিনি বলেন, ৩ দিন ধরে ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। রোববার রাত ৯ টা পর্যন্ত বোট চলাচলের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। যাতায়াত নিয়ে সমস্যা হচ্ছে অনেক। অনেকেই সেন্টমার্টিনে আসতে পারছে না। অনেকেই আছেন যারা সেন্টমার্টিন থেকে যেতেও পারছে না। কিছুটা খাবার নিয়ে সমস্যা  আছে। তবে এখনো খাবার সংকট তৈরি হয়নি। সংকট হতে পারে সবজি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের। আর কয়েকদিন বন্ধ থাকলে খাবার সংকটও তৈরি হতে পারে।
 
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের চলাচলকারী বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, তিনদিন ধরে বোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমার বোটেও গুলি করা হয়েছে মিয়ানমার থেকে। শুক্রবার গুলি করেছে আরেকটি ট্রলারে। লোকজন পারাপার করতে পারছে না। সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে খাদ্য সামগ্রী এবং মানুষ পারাপারের জন্য ৩ টা বোট আসে এবং ৩ টা চলে যায়। আর অন্যান্য মালামাল আনা-নেয়া করার জন্য কিছু ট্রলার চলাচল করে। গতকালও দুটি ট্রলার যাওয়ার চেষ্টা করেছিলো তবে টেকনাফ মোহনায় গুলি করলে আবার সেন্টমার্টিনে ফেরত আসে ট্রলারগুলো।
 
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, মিয়ানমারের গোলাগুলির কারণে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। যার ফলে সেন্টমার্টিনের মানুষজন কষ্টে আছেন।  সেন্টমার্টিনের জনগণকে সমস্ত কিছু টেকনাফ থেকে এনে চলতে  হয়। আমরা এখন কি করবো বুঝতে পারছি না।
 
এদিকে বুধবার (০৫ জুন) সন্ধ্যার দিকে নাফ নদীর মোহনায় সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে বাংলাদেশী নির্বাচনী কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণ করা হয়।
 
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান তখন জানিয়েছিলেন, 'সুষ্ঠু সুন্দর উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন শেষ করে টেকনাফ ফেরার পথে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে গুলি ছুঁড়া হয়। এসময় সহকারী কমিশনার ভূমি, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, পুলিং অফিসারসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের একটি টিমও ছিলো। এসময় ২৫/৩০ জন কোস্ট গার্ডের একটি বুট এবং কয়েকটি ট্রলারে করে টেকনাফে ফেরার পথে ২৫/৩০ রাউন্ড গুলি ছুঁড়া হয় মিয়ানমারের ওপার থেকে।
 
এছাড়া এর আগেও ট্রলার লক্ষ্য করে বারবার গুলি ছুঁড়ে মিয়ানমারের ওপার থেকে। বারবার এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটার কারণে আতঙ্কিত হয়ে ট্রলার এবং স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রেখেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
 
এসব বিষয় নিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ইয়ামিন হোসেন বলেন, সেন্টমার্টিনে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আনা-নেওয়া হয় এপার থেকে। যেহেতু মিয়ানমার থেকে বারবার গুলি করা হচ্ছে একারণে আমরা সেন্টমার্টিন যাওয়ার বিকল্প নিয়ে ভাবছি। নাফ নদীর মোহনায় যেহেতু এঘটনা ঘটছে তাই নাফকে এভয়েড করে আমরা বিকল্প কিভাবে তাদের খাদ্যসামগ্রী এবং যাতায়াতের ব্যবস্থা করা যায় এসব নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
 
ভোরের আকাশ/ সু