logo
আপডেট : ১৫ জুলাই, ২০২৪ ১৮:১০
বানের পানি নামলেও তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত
ভোরের আকাশ ডেস্ক

বানের পানি নামলেও তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত

যমুনা নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে মানিকগঞ্জের বাঘুটিয়া চর। বসতবাড়ি, প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি চলে যাচ্ছে নদীগর্ভে

দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর মধ্যে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি কখনো বাড়ছে, আবার কখনো কমছে। নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট, বাড়িঘর থেকে বানের পানি নামলেও অনেক ফসলের ক্ষেত এখনো তলিয়ে আছে। পানি বাড়ছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়ও। এদিকে যমুনা নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে মানিকগঞ্জের বাঘুটিয়া চর। বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি চলে যাচ্ছে নদীগর্ভে।

দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত :


মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া চরে যমুনা নদীতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এক মাসের ব্যবধানে শতাধিক বসতবাড়ি ও শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এলাকাবাসী জানায়, ভাঙনের মুখে রয়েছে পারুলিয়া বাজার, বাঘুটিয়া পুরান বাজার, বাঘুটিয়া ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়, চরকালিকাপুর মাদরাসাসহ তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

গত ১০ বছরে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম ভেঙে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে খুব শিগগির চরটি মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চরাঞ্চলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে আমাদের অনুমোদন নেই। বিশাল এলাকা হওয়ার কারণে ভাঙন ঠেকানো অনেক কঠিন। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের জানাবো।’

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: বাড়া-কমার মধ্যেই আছে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি। এতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, ডাউয়াবাড়ি, সিন্দুর্না ও গড্ডিমারী, কালীগঞ্জের ভোটমারী ও কাকিনা, আদিতমারীর মহিষখোঁচা, পলাশী ও দুর্গাপুর এবং সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, কুলাঘাট ও মোগলহাট ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের অনেক বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট থেকে বানের পানি নেমে গেছে। তবে ওই সব এলাকার অনেক ফসলের ক্ষেত এখনো পানিতে তলিয়ে আছে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার নিচে নেমে গেলেও এখনো দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। নতুন করে বাড়ছে ধরলা ও দুধকুমারের পানি। আটদিন ধরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ওপরে অবস্থান করায় চরে রোপণ করা তিল, তিসি, কাউন ও সবজি একেবারে বিনষ্ট হয়ে গেছে। চারণভূমি ডুবে যাওয়ায় গবাদিপশুর খাবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। টয়লেট ডুবে যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বন্যার্তরা। বিশুদ্ধ পানির অভাবেও ভুগছে তারা। দিনমজুরদের হাতে কাজ না থাকায় খাদ্য ও অর্থ সংকটে পড়েছেন তাঁরা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৫৫টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভার এক লাখ ৪৬ হাজার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের সহায়তায় এ পর্যন্ত ৫৪২ মেট্রিক টন চাল, ৩২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা এবং ২৩ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ছানোয়ার হোসেন জানান, বিভিন্ন এলাকার অন্তত ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এখনো জলমগ্ন। এ ছাড়া পানি উঠে ১০টি কমিউনিটি ক্লিনিকেও সেবাদান ব্যাহত হচ্ছে। যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে আরো বিদ্যালয় পানিবন্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতের ফলে ১০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে। তবে রোগীদের যথাসাধ্য সেবা দেওয়ার জন্য এসব ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপিকে (কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রভাইডর) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শেরপুর প্রতিনিধি: কামারের চর ইউনিয়নের ৬ নম্বর চর, ৭ নম্বর চর, পয়স্তির চর, গোয়ালের চরের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নকিবুজ্জামান খান জানিয়েছেন, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনকবলিত এলাকায় বালুর বস্তা ও জিও ব্যাগ ফেলে প্রাথমিকভাবে ভাঙন রোধের চেষ্টা চলছে। স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/ সু