উজান থেকে নেমে আসা ঢল আর টানা ভারী বৃষ্টিপাতে গাইবান্ধার সব নদ-নদীর পানিই বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল টানা দুই সপ্তাহের ও বেশি সময় ধরে। তবে গত দুই-তিন থেকে কমেছে নদ-নদীর পানি। তবে বেড়েছে বন্যার্তদের দুর্ভোগ। জেলার ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি কমেছে। তবে বেড়েছে তিস্তা নদীর পানি। বৃদ্ধি পেলেও তিস্তার পানি রয়েছে বিপৎসীমার নিচে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর ১২টায় গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ৫ সেমি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘট নদীর পানি ১১ সেমি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ৬৪ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। করতোয়া নদীর পানি ১ সেমি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ১০৩ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, তিস্তা নদীর পানি ২ সেমি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪১ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি কমলেও ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত সদরের কামারজানি, ঘাগোয়া, ফুলছড়ির ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি প্লাবিত এলাকার পানি এখনো পুরোপুরি নামেনি। এতে হতাশ আর দু:চিন্তায় পড়েছে বন্যা কবলিতরা। পানিবন্দি এসব এলাকার মানুষজন শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। প্রকট আকার ধারণ করেছে গো-খাদ্যসহ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা।
সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নের পারদিয়ারা এলাকার কালাম মিয়া বলেন, এবছর পাট লাগাছিলাম ১৫ বিঘা জমিতে সব শেষ বাবা। এখনও বাড়িত উঠপার পাইনাই। কাদোর জন্য বাড়ির থাকা কষ্টকর হয়া গেছে। কি করবেন বুদ্ধি নাই থাকায় লাগবে।
দ্বিতীয় দফায় বন্যায় জেলায় পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে আউশ ধান, পাট, ভূট্টা, বীজতলা ও শাকসবজিসহ ৬ হাজার ৪৩৬ হেক্টর কৃষি জমির ফসল। গত দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় বন্যায় নিমজ্জিত থাকায় ক্ষতি হয়েছে রোপা আমন, পাট, তিল, কালাই, বাদাম, ভূট্টাসহ অন্যান্য শাকসবজিরও। ক্ষতি হয়েছে মৎসখাতেও। সব মিলিয়ে জেলার অর্থনীতিতে ঘাটতি ১০০ কোটি টাকারও বেশি। পানি ওঠায় ১৪৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি দাখিল মাদ্রাসাসহ মোট ১৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রাথমিক ও জেলা শিক্ষা বিভাগ।
এ ব্যপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক ভোরের আকাশকে মুঠোফোনে জানান, গাইবান্ধার সব কয়টি নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে আশা করা যায় দুই-তিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
ভোরের আকাশ/ সু