ফেনীতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রোববার বেলা দুইটার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। সকাল থেকে বিক্ষোভকারীরা অসহযোগের সমর্থনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল এলাকায় বিক্ষোভ করছিলেন। তবে দুপুর দুইটার দিকে মহিপাল উড়াল সেতুর নিচে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা মিছিল নিয়ে এলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় মুহুর্মুহু গুলি, ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
সংঘর্ষে নিহত ছয়জন হচ্ছে - ছাইদুল ইসলাম- (১৮),শিহাব উদ্দিন-(১৮),সাইফুল হক-(২০), সাকিব-(২০),ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণ -(২০),আরেকজনের নাম পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া তিন গণমাধ্যমকর্মীসহ প্রায় দুই শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে হতাহত ব্যক্তিদের ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আর এম ও) ডা: আসিফ ইকবাল বিকেল চারটার দিকে বলেন, এ মুহূর্তে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পাঁচজনের লাশ রয়েছে। তাঁরা সবাই মহিপালে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। সবার বয়স ১৭ থেকে ২৫ এর মধ্যে।
এদিকে সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা মহিপালের পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ছাড়াও ইট–পাটকেলের আঘাতে অনেকে আহত হন। বিকেলে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে আহত ও গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রায় ৫০ জনের অধিক ভর্তি হন বলে জানা গেছে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন বাংলাভিশনের জেলা প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের চিত্র সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ জয়,দৈনিক জবাবদিহি পত্রিকার প্রতিনিধি হাসনাত তুহিন, পথচারী সাইফুল ইসলাম ও যুবদল নেতা সাইদুল ইসলাম।
ফেনীতে সকাল থেকে যাত্রীবাহী বাস বা অন্য কোনো যানবাহন তেমন দেখা যায়নি রাস্তায়। সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। সড়ক অবরোধ করে পুলিশকে লক্ষ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। এ সময় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পাল্টা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী মহিপাল উড়াল সেতুর পাশে জড়ো হয়ে স্লোগান শুরু করেন। এ সময় আশপাশে থাকা আরও বহু শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ মিছিলে শামিল হন। এরপর বেলা দুইটার দিকে সেখানে মিছিল নিয়ে আসেন সরকারদলীয় কর্মী–সমর্থকেরা। বর্তমানে পুরো শহর জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ভোরের আকাশ/মি