logo
আপডেট : ১৪ আগস্ট, ২০২৪ ১৪:৫৭
গাইবান্ধায় ল্যাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব; শতাধিক গরুর মৃত্যু
রিফাতুন্নবী রিফাত, গাইবান্ধা

গাইবান্ধায় ল্যাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব; শতাধিক গরুর মৃত্যু

উত্তরের জনপদ গাইবান্ধার বিভিন্ন অঞ্চলে গরুর "ল্যাম্পি স্কিন" রোগের প্রাদুর্ভার দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন পশু খামারিরা। গত একমাসে প্রায় অর্ধলাখ গরু এ রোগে আক্রান্ত ও শতাধিক মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। তবে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে জানিয়েছে গত ২০ দিনে ১৬ হাজার ৩৮৩ গরু ল্যাম্পি রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ৭৫টি গরুর মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (১৪ আগস্ট) সরেজমিনে গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকার গরুর মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হঠাৎ গরুর চামড়ার বিভিন্ন স্থানে ফুলে চাকা-চাকা হয়। গরুর শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মুখে লালা থাকে এবং প্রচুর মাছি পড়তে থাকে গরুর গায়ে। ইতোমধ্যে মাহাবুর রহমান ও ইয়াকুব আলীর তিনটিসহ আরও অনেকের শতাধিক গরু মারা গেছে। ইতোমেধ্য এ রোগটি ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। প্রায় দুই বছর ধরে ল্যাম্পি রোগটি দেখা দেয়। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পশুর মালিক বা খামারিরা।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ জেলায় প্রায় ১৭ হাজার খামার রয়েছে। এছাড়া অধিকাংশ পরিবারের গরু পালন করেন। এখানে গত মাসের ১০ তারিখ থেকে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৩৮৩ গরু ল্যাম্পি রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এসব গরুর চিকিৎসা দেওয়াসহ ৪৭০টি গরুর টিকা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৭৫টি গরুর মৃত্যু হয়েছে।

সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের মাঠেরপাড় এলাকার খামারি আজিজার রহমান বলেন, আমার খামারে ৫টি দেশি জাতের গরু আছে। এর মধ্যে একটি বাছুর হঠাৎ করে ল্যাম্পি রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ রোগে সঠিক কোন চিকিৎসাসেবা পাচ্ছি না। ফলে বাছুরটি দিন দিন মৃত্যুর দিকে যাচ্ছে।

আরেক গৃহস্থ জাহিদুল ইসলাম বলেন, জীবনে চাকুরী করে কিছু করতে পারি নাই। বেসরকারী চাকুরি বাদ দিয়ে এসে বাড়িতে গরু পালন করা শুরু করে দেই। বেশ কয়েক বছর ভালো চলল আমার খামারটা। হঠাৎ কিছুদিন আগে ল্যাম্পি স্কিন রোগে একটি বিদেশী জাতের গরু মারা গেছে। এটির দাম প্রায় দেড় লাখ টাকা।

স্থানীয় পশু চিকিৎসক সিদ্দিকুর রহমান দুলাল বলেন, আক্রান্ত গরুগুলোকে যত্নসহকারে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। একই সঙ্গে এ রোগ প্রতিরোধের বিষয়ে গরুর মালিকদের নানান পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যেন অন্য কোনো পশুর মাঝে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য আক্রান্ত গরুকে মশারি দিয়ে রাখতে হবে। আতঙ্কিত হওয়া বা ভয়ের কোনো কারণ নেই।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহফুজার রহমান বলেন, খামারি ও সাধারণ গৃহস্থদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য উঠান বৈঠক, পথসভা, লিফলেট বিতরণ এবং ফ্রি চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। ল্যাম্পি স্কিন রোগ প্রতিরোধে মাঠে কাজ চলমান রয়েছে।

ভোরের আকাশ/ সু