logo
আপডেট : ২২ আগস্ট, ২০২৪ ১৮:১৬
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন
আমিরুজ্জামান লেবু

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন

আজ ২৩ আগস্ট। ১৯৭১ সালে বাঙালির মহান মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত প্রতিরোধ যুদ্ধের একটি স্মরণীয় দিন। প্রায় ৫৩ বছর পূর্বে আজকের এদিনে মুক্তিযোদ্ধাদের ১১ নং সেক্টরের বিপরীতে গারো পাহাড়ের পাদদেশে হানাদার পাকিস্তানিদের তাওয়াকোচা ক্যাম্পে সারারাত যুদ্ধ করে দখল নেয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা। দখল করেই সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মুক্ত দখলে নেওয়া পাক হানাদার বাহিনীর তাওয়াকোচা ক্যাম্পে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা প্রথম উত্তোলন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে ১১নং সেক্টরে তাওয়াকোচা প্রথম স্বাধীন হয়। এ সন্মূখ যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর ১ শ’ ৩৭ জন রাজাকার, আল বদরসহ পাক বাহিনীর সদস্য নিহত হয়। অপরদিকে, সারা রাত সন্মুখ যুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে একমাত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবেদ আলী শহীদ হন। এ ক্যাম্প মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসার পর তাওয়াকোচা অঞ্চল বাংলাদেশের বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত মুক্তাঞ্চল ছিল। অন্যদিকে, তাওয়াকোচা যুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একটি অবিস্মরনীয় ঘটনা হিসেবে স্থান পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষন শুনার পরদিন সকালে নকশী ইপিআর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার হাকিম পরদিন ৮ মার্চ ঝিনাইগাতী এসে বড় কাপড় ব্যবসায়ী আরফান খলিফাকে সবুজের মাঝে লাল বৃত্তের মধ্যে পূর্ব বাংলার মানচিত্র অংকিত জয় বাংলার একটি পতাকা তৈরীর অর্ডার দেন। সারাদিন চেষ্টা করে আরফান খলিফা ওই পতাকা তৈরী করেন। পরে ওই পতাকা তিনি নকশী ইপিআর ক্যাম্পে সুবেদার হাকিম সাহেবের কাছে পৌঁছে দেন। জয় বাংলার পতাকা তৈরীর সংবাদ শুনে আরফান খলিফার দোকানে স্বাধীনতাকামী ছাত্র-জনতার পতাকা তৈরীর হিড়িক পড়ে যায়। আরফান খলিফার তৈরী পতাকা আওয়ামী লীগ অফিস ও স্থানীয় সংগ্রাম পরিষদ অফিসে শোভা পায়। তার দোকানে পতাকা কেনার জন্য গ্রাহকের ভীড় পড়ে জমে উঠে। এ অঞ্চলে আরফান খলিফা সর্বপ্রথম স্বাধীন বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা তৈরীর প্রথম কারিগর হিসেবে ‘৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বিশেষ অবদানের খ্যাতি অর্জন করেছেন।

পাক হানাদার বাহিনী ৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে যখন ঢাকার বুকে ঘুমন্ত মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়ে ওই রাতেই ৩.৪৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া স্বাধীনতার ঘোষণার টেলিগ্রাম ম্যাসেজ ঝিনাইগাতীস্থ ভিএইচএফ ওয়ারলেস অফিসে এসে পৌঁছায়। কর্তব্যরত ওয়ারলেস মাস্টার জামান সাহেব বঙ্গবন্ধুর টেলিগ্রাম ম্যাসেজটি হাতে পেয়ে ভোরে অফিসের পিয়ন পাঠিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ীতে সংবাদ দেন। খবর পেয়ে ভোরেই অর্থাৎ ২৬ মার্চ সকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হারুন অর রশিদ মাস্টার, শাহ জালাল ওরফে শাজল মেম্বার,শরীফ উদ্দিন সরকার, সৈয়দ আলী মেম্বার, কাফি মিয়া, সেকান্দর আলী, ছাত্র নেতা আব্দুল মান্নান ও লেখকসহ অনেকেই ওয়ারলেস অফিসে এসে পৌঁছান। ইংরেজিতে লেখা বঙ্গবন্ধুর প্রেরিত টেলিগ্রাম ম্যাসেজটি তৎক্ষনাৎ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ তৎক্ষনাৎ তা শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দের কাছে পৌঁছে দেন।

ইংরেজিতে লেখা ম্যাসেজটি হাতে পেয়েই শেরপুর সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ শহরের জিকে পাইলট স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক নারায়ন স্যারের শরণাপন্ন হয়ে তা বাংলায় অনুবাদ করে নেন। রাতে ঢাকায় গুলি করে পাকিস্তানি সৈন্যরা অসংখ্য বাঙালি হত্যা করেছে। ২৬ মার্চ সকাল থেকেই বাঁধ ভাঙা জোয়ারের মতো মানুষ চতুর্দিক থেকে শেরপুর শহরে সমবেত হতে থাকে ঢাকার অবস্থা কি তার সর্বশেষ সংবাদ জানতে। শহরের কাকলী মার্কেটে অবস্থিত সংগ্রাম পরিষদের অফিসে মাইক টানিয়ে সকাল থেকেই বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষন প্রচার করা হচ্ছিল। ওই মাইকে ঝিনাইগাতী থেকে প্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি বাংলায় প্রচার করা হলে শহরের নিউ মার্কেট এলাকায় সমবেত জনতা মূহুর্মূহু শ্লোগানে মূখরিত করে তোলে শহরের আকাশ বাতাস। পরদিন ২৭ মার্চ সকালে শেরপুর সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ সর্বজনাব মহসিন আলী মাস্টার,এডভোকেট আ. হালিম এমপিএ ও ছাত্র নেতা ভিপি আমজাদ হোসেন ঝিনাইগাতী এসে পৌছান।স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ তাঁদের অভ্যর্থনা জানান। আলোচনা শেষে সেকান্র আলী ও ছাত্র নেতা জিএস আ. মান্নানকে সাথে নিয়ে নেতৃবৃন্দ নকশী ইপিআর ক্যাম্পে যান।নকশী ক্যাম্পের সুবেদার হাকিম নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসেই বিদ্রোহ ঘোষনা করেন।দেশকে শত্রুমুক্ত করাসহ পাক হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য সকল পরিকল্পনা গ্রহন করা হয় ওই বৈঠকে।ওইদিন রাত সাড়ে ৮ টায় সুবেদার হাকিম একটি হ্যারিক্যান জ্বালিয়ে ৪ জন নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে তাওয়াকোচা ইপিআর ক্যাম্প থেকে সীমান্ত পার হয়ে ভারতের পুরাকাসিয়া বিএসএফ ক্যাম্পে পৌছেন। সেখানে বিএসএফ ক্যাপ্টেন কুমারের সাথে বৈঠক হয়। বৈঠকে ক্যাপ্টেন কুমার যুদ্ধে অস্ত্র সরবরসহসহ সবদিক সাহায্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

শুরু হলো প্রতিরোধ সংগ্রাম। যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে ঝিনাইগাতীর রাংটিয়া কুম্ভি পাতার ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ শিবির স্থাপন করা হয়। শেরপুর শহর থেকে কর্নেল আরিফ, আক্তারুজ্জামান, মন্জু,ফনু,হিমু,অদুসহ ১২ জন যুবককে নিয়ে অস্ত্র ট্রেনিং শুরু করা হয়। এতে মুজিব বাহিনীর সদস্যরাও অংশ নেয়। অপরদিকে ওই গ্রামের জগৎ মাস্টারের বাড়ীতে টেলিফোন স্টেশন স্থাপন করা হয় যোগাযোগ রক্ষার জন্য। ওই বাড়ী থেকে তার টানিয়ে ভারতের সিসিংপাড়া বিএসএফ ক্যাম্প পর্যন্ত নিয়ে টেলিফোন যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা হয়।

সুবেদার হাকিম স্থানীয় ইপিআর,পুলিশ,আনসার,স্বেচ্ছাসেবক (মুজিব বাহিনী) নিয়ে পাক সেনাদের প্রতিহত করার জন্য মধুপুরে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।পাক বাহিনীর ভারী অস্ত্র ও গুলি বর্ষণে টিকতে না পেরে ১৪ এপ্রিল পিছু হটে প্রতিরোধ বাহিনী দিকপাইতে পিছু হটে আসে।অতপর পিছু হটে জামালপুর ব্রহ্মপুত্র নদের চরে ব্যাংকার তৈরি করে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কিন্তু পাক বাহিনীর প্রচন্ড চাপের মূখে ২৫ এপ্রিল প্রতিরোধ বাহিনী ভারতে আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২৬ এপ্রিল বিকেলে সুবেদার হাকিমের খোলা জীপ এসে দাঁড়ায় ঝিনাইগাতী পাঁচ রাস্তার মোড় আমতলায়। জীপ থেকে নেমে সুবেদার হাকিম সমবেত জনতাকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে অনুরোধ করেন। এসময় সুবেদার হাকিমের চোখের জল ছলছল করছে লক্ষ্য করলেন লেখক। কারন পাক হানাদার বাহিনীর ভারী অস্ত্রের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে না পেরে ব্রহ্মপুত্রের বেরিকেড ভেঙে প্রতিরোধ বাহিনী এদিন সন্ধ্যায় ভারতে চলে যায়। ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ঝিনাইগাতী শত্রুমুক্ত ছিল।

২৭ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনী গোলাবর্ষণ করতে করতে গাড়ী বহর নিয়ে এসে পৌঁছায় ঝিনাইগাতী। ঝিনাইগাতী ঢুকেই স্থানীয় সংগ্রাম পরিষদের অফিস হারুন অর রশিদ মাস্টারের ঘর আগুন দিয়ে পুড়ে দেয়। এদিন কোয়ারী রোড পর্যন্ত গিয়ে গাড়ী বহর নিয়ে পুনরায় পিছনে ফিরে এসে কোয়ারী রোডের কাছাকাছি হাতীবান্ধা - মালিঝিকান্দা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে ক্যাম্প স্থাপন করে। শুরু হলো যুদ্ধ। যা ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

২২ আগষ্ট রাতে যুদ্ধ শুরু: একাত্তর সনের ২২ আগষ্ট সূর্যাস্তের পর সবেমাত্র সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে এসেছে। রাতের আধার শুরুর সাথে সাথে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অত্যান্ত সুরক্ষিত পাক হানাদার বাহিনীর তাওয়াকোচা ইপিআর ক্যাম্পর উপর আক্রমন শুরু করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী স্থানীয় যতীনের টিলা থেকে গোলাবর্ষণ শুরু করে। এ সময় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। কোম্পানি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীনের নেতৃত্বে ৪৭ জন ও প্লাটুন কমান্ডার লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে ৪৭ জন এ যুদ্ধে অংশ নেন। পাক বাহিনী তাওয়াকোচা ক্যাম্প আক্রমণের সংবাদ পেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ১১ নং সেক্টরের বিপরীতে পাক হানাদার বাহিনীর আহাম্মদ নগর হেড কোয়ার্টার থেকে পাক বাহিনী মেজর রিয়াজের নেতৃত্বে একদল পাকি,রাজাকার ও আলবদর সৈনিক নিয়ে ঝিনাইগাতী বাজারে পৌছায়। দুইটি ট্রাক ভর্তি অস্ত্র ও গুলির বাক্স নিয়ে ঝিনাইগাতী এসে পৌঁছায়। এসব গুলি ও অস্ত্র ট্রাক থেকে নামানো হয়। মেজর রিয়াজ ঝিনাইগাতী বাজারে এসে প্রত্যেক বাসা থেকে একজন করে লোক এনে জড়ো করার নির্দেশ দেন স্থানীয় দালালদের। দালালরা লোকজন এনে হাজির করলো।এ সময়ে মেজর রিয়াজ স্থানীয় পাকি দালাল আব্দুর রহমানের বাসায় বিশ্রাম নেন। দালাল আব্দুর রহমান স্থানীয় হিন্দু প্রমেশ্বর চন্দ্র বর্মণের বাড়ী দখল করে বসবাস করছিল। ওই বাড়ীতে বিশ্রাম নিয়ে মেজর রিয়াজ এসে জড়ো করা প্রত্যেক জনের কাধে একটি করে গুলির বাক্স দিয়ে এক লাইনে মেজর রিয়াজের পিছু পিছু হাটতে নির্দেশ দিল। এসব অস্ত্র আর গুলির বাক্স তাওয়াকোচা ক্যাম্পের প্রায় ২শ' গজ দূরে এক জায়গায় জড়ো করে ওইসব লোকদের বিদায় করে দিল।পরে ক্যাম্পের সৈনিকরা এসব অস্ত্র ক্রুলিং করে ক্যাম্পে নিয়ে এসে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে লাগলো।

অপরদিকে, এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের ফায়াটিংএর দায়িত্বে কোম্পানি কমান্ডার, কাট আপের দায়িত্বে প্লাটুন কমান্ডার এবং রিজার্ভের দায়িত্বে সেকশন কমান্ডার গ্রুপ। মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে তুমুল সন্মূখ যুদ্ধে পাক বাহিনীর সুরক্ষিত ঘাঁটির ব্যাংকার আর অত্যাধুনিক অস্ত্র বাংলার দামাল মুক্তি বাহিনীর কাছে টিকতে পারেনি।পূর্ব আকাশে কখন যে লাল সূর্য উঠে উপরের দিকে যাচ্ছে তা কেউ টেরও করতে পারেনি। সারা রাত জাগা এবং বৃষ্টিতে ভেজা কাঁপুনি শরীরে আর যেন গুলি বের হতে চায় না অস্ত্র থেকে। ক্ষুধায় শরীর নিস্তেজ হয়ে আসছে। কিন্তু বাংলার দামাল মুক্তিযোদ্ধারা মরণপণ কর গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তখন সকাল প্রায় ৮ টা। পাকি ক্যাম্প থেকে আর গুলি ফুটছে না। মুক্তিযোদ্ধারা ভাবলো তবে পাকিস্তানি সৈনিকরা কৌশল অবলম্বন করেছে।একটু সময় থেমে থেকে পুনরায় গুলি বর্ষণ চললো। নাহ! কোন পাল্টা উত্তর নেই।গুলি আর ফুটছে না পাকিস্তানি ক্যাম্প থেকে। মুক্তিযোদ্ধারা সাথী নুরুন্নবীকে পাকি ক্যাম্পে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। কানা ফকির সেজে নুরুন্নবী পাকি ক্যাম্পে গিয়ে দেখে লাশ আার লাশ।ফিরে এসে সংবাদ দেয় ৫/৬ জন জীবিত রয়েছে। এ সংবাদ শুনে ক্ষুধার্ত ও ভন শরীরের মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল হটাৎ কেমন যেন চাঙ্গা হয়ে উঠল।অকস্মাৎ জয় বাংলা ধ্বনি দিয়ে আচমকা সকাল ৯ টার দিকে ঢাকা পড়ল তাওয়াকোচা পাকিস্তানি বিওপি ক্যাম্পে। সারা রাত বৃষ্টির কারণে ক্যাম্পে তখন হাঁটু পানি। ক্যাম্পে ঢুকেই ২ জন পাকিস্তানি সৈন্য ও ৩ জন রাজাকার সদস্যকে জীবিত অবস্থায় আটক করা হয়। ওই ক্যাম্পে প্রায় ৮০/৯০ টি লাশ পাওয়া যায়। ব্যাংকারে পানি ঢুকে পড়ায় এবং গুলি খেয়ে এরা প্রাণ হারায়। ওই ক্যাম্পের পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সমেশ্বরী নদীর পানিতে লাশগুলো ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ওই ক্যাম্প থেকে ৫৭ টি এসএলআর এবং ৫১ টি গুলির বাক্স পাওয়া যায়। ক্লান্ত ক্ষুধার্ত মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ের আনন্দে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনিতে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে পাকি মুক্ত তাওয়াকুচা বিওপি ক্যাম্পে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা প্রথম উত্তোলন করা হয়।এদিন থেকে বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তাওয়াকুচা অঞ্চল হানাদার মুক্ত ছিল।

লেখক: সাংবাদিক

 

ভোরের আকাশ/মি