বেনাপোল স্থলবন্দরের ওপার ভারতীয় অংশের হরিদাশপুর (পেট্রাপোল) থেকে বারাসাত পর্যন্ত ‘যশোর রোড’ দ্রুত সম্প্রসারণ ও মেরামতের দাবি জানিয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। দলটির পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য শান্তনু ঠাকুর এ নিয়ে তার দেশের কেন্দ্রীয় ভূতল পরিবহন (সড়ক পরিবহন) মন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। ক্ষমতাসীন দলের একজন সংসদ সদস্যের হঠাৎ এমন উদ্যোগে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন, শান্তনু ঠাকুর এমন সময় তার সরকারের কাছে দাবিটি তুললেন, যখন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পালিয়ে গিয়ে ভারতে অবস্থান তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দুই দেশের সরকারের মধ্যে কিছুটা টানাপড়েন চলছে। এছাড়া এই টানাপড়েনের মধ্যে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং দেশটির সশস্ত্র বাহিনীকে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং শান্তির জন্য রণপ্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এ অবস্থায় যশোর রোড দ্রুত সম্প্রসারণের দাবি নিয়ে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন বা কৌতূল সৃষ্টি হতেই পারে।
বাংলাদেশের যশোর ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মধ্যে স্থলপথে যোগাযোগ স্থাপনকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক মহাসড়ক ‘যশোর রোড’। এই সড়কের হরিদাশপুর স্থলসীমান্ত থেকে কলকাতার দূরত্ব ৮০ কিলোমিটার (কিমি) ও বারাসাতের দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পক্ষে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী (মিত্র বাহিনী) এই সড়ক দিয়েই যশোর হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল। এ কারণে ভারতের কাছে সড়কটির ঐতিহাসিক গুরুত্বও রয়েছে।
বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী নেতা ও সংসদ সদস্য শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘সড়ক পরিবহনমন্ত্রীর কাছে যশোর রোডের বারাসাত থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার অংশ মেরামত ও প্রশস্তকরণের আবেদন করা হয়েছে। এই বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করারও আবেদন জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, যশোর রোড এখন এক লেনের। সেটি ৪ বা ৬ লেনে উন্নীত করা হোকÑ এটা আমাদের দাবি।
যশোর রোডটি প্রশস্তকরণ কেন জরুরিÑ সে বিষয়ে শান্তনু ঠাকুরের চিঠিতে বলা হয়েছে, পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে দুই দেশের (ভারত-বাংলাদেশ) মধ্যে বছরে প্রায় ২৩ লাখ মানুষ যাতায়াত করে। সড়কপথে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যের প্রায় ৬০ শতাংশ হয় এই সড়কপথে। যশোর রোড সম্প্রসারণ হলে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী যাতায়াত সহজতর ও বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়বে। এতে স্থানীয় মানুষও উপকৃত হবেন।
ভোরের আকাশ/মি