নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর সমুদ্রগামী জাহাজে নাবিকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি না করে ভর্তিবাণিজ্য চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন চাকরিবঞ্চিত সাধারণ নাবিকরা। তারা বলেছেন, অধিদপ্তরের অতিরিক্ত ভর্তিবাণিজ্যের কারণে প্রায় এক হাজার নাবিক এখনো চাকরি না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গতকাল রোববার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে ভুক্তভোগী নাবিকেরা এসব কথা বলেন। মানবন্ধনে চলমান বৈষম্য নিরসনের জন্য নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর ও সরকারি শিপিং অফিসের উচ্চপদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তার অপসারণ এবং এ দুই সংস্থাসহ সমগ্র নৌ-পরিবহন সেক্টর সংস্কারের দাবি জানান তারা।

বৈষম্যবিরোধী নাবিক আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মো. সাব্বির হোসেন ও সমন্বয়ক ইমরান শেখসহ বেশ কয়েকজন নাবিক বক্তৃতা করেন। কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, মেরিটাইম সেক্টর থেকে প্রতি বছর দেশে যে রেমিট্যান্স আসে তার পরিমাণ প্রায় ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তারপরও এই সেক্টর চরমভাবে অবহেলিত। সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষই মেরিন সেক্টরকে পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতা প্রদানের প্রয়োজন মনে করে না।

বৈষম্যবিরোধী নাবিক আন্দোলনের কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে কয়েকজন কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করা হয়েছে। তারা হলেন নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী (সংযুক্তিতে) মনজুরুল কবির, চিফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার-সিএনএস (চলতি দায়িত্বে) ক্যাপ্টেন মো. গিয়াস উদ্দীন আহমেদ, ইজিআইএমএনএস প্রকল্পের পরিচালক ও নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন আবু সাঈদ মোহাম্মদ দেলোয়ার রহমান, নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন আবু সাঈদ আহমেদ এবং সরকারি শিপিং অফিসের শিপিং মাস্টার জাকির হোসেন।

সরকারি ও বেসরকারি নাবিকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টির জন্য নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর ও শিপিং মাস্টারকে দায়ী করে মানববন্ধনে বলা হয়, অনেক নাবিক আছেন, যারা এখনো চাকরি পাননি; দুই-তিন বছর যাবৎ বেকার আছেন। মূলত বেসরকারি মেরিটাইম ইনস্টিটিউটগুলোতে অতিরিক্ত নাবিক ভর্তির কারণে চাকরির বাজারে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারদের এই দুর্দশা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। বক্তারা বলেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের কারিকুলাম এবং সনদের মান এক। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের কোনো শিপিং কোম্পানির দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজে আমরা চাকরি করতে পারি না। ২০১৫ নৌ-অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও শিপিং মাস্টার একটা খসড়া আইন পাস করিয়ে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা নাবিকদের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে বৈষম্য সৃষ্টি করেছেন। এসব অনিয়ম দূর করতে বৈষম্যবিরোধী নাবিক আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা সমগ্র নৌ-পরিবহন সেক্টরের সংস্কার চাই।

ভোরের আকাশ/মি