বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি থেকে পদ হারানো অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিনের বিরুদ্ধে বাড়ি দখলের অভিযোগটি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন তার ভাইয়ের স্ত্রী বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য মারিয়া আক্তার মুন্নী। নিজেদের অবস্থান জানাতে নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি করেন তিনি।এ সময়ে জমির ওয়ারিশ সঙ্গে ছিলেন। যদিও জমি বিক্রির দালিলিক কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি মুন্নী। প্রমাণ চাইলে সংবাদ সম্মেলন শেষ না করেই উঠে যান বিএনপির জেলা কমিটির এই সদস্য।
মারিয়া মুন্নী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর বরিশাল নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ডে ফজলে আলী খানের সন্তান মহিউদ্দিন খান ও সাদিয়া আক্তার ডালিয়ার উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমি ও ফ্ল্যাট কেনেন তিনি। যার পুরো টাকা দেন মুন্নীর আমেরিকা প্রবাসী বাবা। ভিসা জটিলতার কারণে তার বাবা দেশে ফিরতে পারছেন না
জমি ও ফ্ল্যাট কিনে পাঁচ বছর ধরে নিরাপদে বসবাস করে আসলেও সম্প্রতি মৃত ফজলে আলী খানের আরেক সন্তান এবিএম সালাউদ্দিন দখলের অভিযোগ তুলে বিভিন্ন দপ্তরে এবং গণমাধ্যমে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করাচ্ছেন।
মুন্নী বলেন, সালাউদ্দিন ৪০ বছরেরও বেশি সময় ঢাকায় বসবাস করেন। তার আরেক ভাইয়ের পরিবার ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় বসবাস করছেন। মূলত একটি মহল বিলকিস জাহান শিরিনকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয় করতে এবিএম সালাউদ্দিনকে দিয়ে এই কাজ করাচ্ছেন। ষড়যন্ত্র ও প্রতিহিংসামূলক এই অপপ্রচারের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে সংবাদ মাধ্যমের সহায়তা চান তিনি।
মোট ৩ শতাংশ জমির ছয়জন ওয়ারিশ থাকলেও বণ্টন না হওয়ার আগে এক শতাংশ জমি দুই ভাইবোন কীভাবে বিক্রি করলেন এবং কোন বণ্টননামার সূত্র ধরে জমি ও ফ্ল্যাট মুন্নী কিনেছেন জানতে চাইলে তড়িঘড়ি সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন বিএনপির এই নেত্রী।
তিনি বলেন, বাড়ি সংক্রান্ত সকল তথ্য লিখিত বক্তব্যে দেওয়া আছে। এ ঘটনায় বিলকিস জাহান শিরিনকে কেন জড়ানো হচ্ছে সেটি তার বোধগম্যের বাইরে।
একপর্যায়ে ফ্ল্যাটের বিক্রেতা দাবি করা সাদিয়া আক্তার ডালিয়া বলেন, পাঁচ বছর পরে কেন শিরিনকে জড়িয়ে কথা উঠছে। এ ঘটনাতো ৫ বছর আগের। এর সাথে শিরিন জড়িত নন।
ওয়ারিশের বণ্টননামা করা হয়েছিল কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, স্থানীয়রা মিলে মৌখিকভাবে একটি ভাগ করেছিলেন। এ সময় মুখে হাত ঠেসে বক্তব্য শিখিয়ে দিতে দেখা গেছে মারিয়া মুন্নীকে।
সংবাদ সম্মেলনে কয়েকজন ছাত্রদল ও বিএনপির পদধারী নেতাকে উপস্থিত দেখা গেছে। যদিও এর আগে বিলকিস জাহান শিরিনের পক্ষ অবলম্বন করে বিবৃতি দেওয়ায় মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাকসুদুর রহমান মাসুদ ও সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জাহানকে তিন দিনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় যুবদল। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক নূরুল ইসলাম সোহেল স্বাক্ষরিত নোটিশে বরিশালের যুবদলের কমিটিকে কারণ দর্শাতে বলা হয়।
এর আগে ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের দিন ব্রাউন কম্পাউন্ড এলাকায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের একটি সরকারি পুকুর ভরাট করেন বিলকিস জাহান শিরিন। সেই ঘটনায় দলের সকল পদ স্থগিত করার ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি।
ভোরের আকাশ/মি