logo
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৬:৪৯
বন্যার একমাস পরেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মানুষ, চারপাশ এখনো বালুর নিচে
ফেনী প্রতিনিধি

বন্যার একমাস পরেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মানুষ, চারপাশ এখনো বালুর নিচে

ফেনীর পরশুরামে গত ২০ আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় পাহাড়ি ঢলের পানির স্রোতে ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধের সামনের বাসিন্দারা এখনো মানবতার জীবনযাপন করছেন। বন্যার পানি শুকিয়ে যাওয়ার দীর্ঘ একমাস পরেও তারা  নিজ নিজ বসত ঘরে ফিরতে পারছেন না। কয়েকটি পরিবারের সদস্যরা তাদের নিজেদের বাড়ির ছাদে বসবাস করতে পারলেও বেশ কিছু পরিবার এখনো বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
 
পশ্চিম অলকা গ্রামে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে বেশ কিছু ঘরে তালা লাগানো আশপাশেও কেউ নেই, ঘরের কারো মাঝামাঝি কারো টিন পর্যন্ত বালু জমে আছে। বসত ঘরের ফ্রিজ সহ আসবাবপত্র বাইরে পড়ে আছে। ওই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে গাছ পালা,গরু-ছাগল, পুকুর,রাস্তা ঘাট সবকিছুই যেন অস্তিত্ব হারিয়েছে।
 
বন্যার স্রোতে আসা পলি মিশ্রিত বালি বসতঘরের ছাদের কাছাকাছি পর্যন্ত জমে গেছে। এতে বাসিন্দারা দরজা ও জানালার সামনে বালু কেটে ভিতরে প্রবেশ করলেও ভিতরের বালি পরিষ্কার এবং বাড়ির আশপাশের বালি পরিষ্কার করে এখনো পুরোপুরি বসবাস শুরু করতে পারেননি। বসত ঘরে, সামনে রয়েছে ঘরের ছাদের পরিমাণ সমপরিমাণ বালু। 
 
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের অলকা গ্রামের আব্দুল মালেক তার বসতবাড়ির উঠানে এখনও ছাঁদ ছুই ছুই বালু রয়েছে। শুধুমাত্র বসতঘরের ভিতরে বিভিন্ন কক্ষের বালু সরিয়ে লোকজন আসা যাওয়া শুরু করেছেন।
 
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক আব্দুল মালেক জানান, পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে এখনো নিজ বাড়ির ছাদে ত্রিপল টাঙ্গিয়ে  বসবাস করছেন।
 
আব্দুল মালেক বলেন, তার বাড়ির পিছনে ১২ শতকের একটি পুকুর ছিল পুকুরটির সম্পূর্ণ বালুতে ভরে গেছে। টিউবওয়েলের মাথার উপরে এখনো ৩ ফুট বালু রয়েছে এছাড়া টয়লেট রয়েছে বালির নিচে। গত এক মাস ধরে কোনরকম দরজার সামনে থেকে বালু সরিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করে যাচ্ছেন কিন্তু এখনো শেষ না হওয়ায় ছাদের উপরে বসবাস করছেন, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। তিনি আরো বলেন, তার ঘরের সামনের উঠোন থেকে শুরু করে আশপাশের বালু সরাতে আরো কয়েক মাস সময় লাগতে পারে এখনো পুকুর, টিউবওয়েল, টয়লেট, গোয়াল ঘর সম্পূর্ণ বালুর নিচে রয়েছে। বাইরে থেকে পানি কিনে নিয়ে তারা খাওয়া-দাওয়া করছেন। 
 
পরশুরাম উপজেলার পশ্চিম অলকা গ্রামে এমন দৃশ্য প্রায় প্রতিটি বাড়িতে, ওই এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম, মহি উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল খালেক সহ অন্তত শতাধিক পরিবার একই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তারা প্রতিদিন নিজে  এবং  শ্রমিক দিয়ে বসত ঘরের চারপাশে বালু সরাচ্ছেন। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে তাদের আরও দু এক মাস সময় লাগতে পারে। 
 
পরশুরাম ইউএনও আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, চিথলিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম অলকা গ্রামে বিশাল ভাঙ্গনে ওই এলাকার বসতঘর, পুকুর, রাস্তা-ঘাট. পুল-কালভার্ট ফসলী জমি পলি মিশ্রিত বালুর নিচে তলিয়ে গেছে। গ্রামের সড়ক গুলো খুঁজে বের করতে দীর্ঘ সময় লাগবে। এছাড়াও কয়েকটি পরিবার এখনো ঘরে ফিরতে পারেনি, ঘরের চারপাশে বালুর স্তুপ রয়েছে।
 
ভোরের আকাশ/ সু