logo
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৩:৫৭
গাইবান্ধায় ২৫ দিন পর কবর থেকে গৃহবধূর লাশ উত্তোলন
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধায় ২৫ দিন পর কবর থেকে গৃহবধূর লাশ উত্তোলন

গাইবান্ধা সদর উপজেলায় মৃত্যুর ২৫ দিন পর আদালতের নির্দেশে জান্নাতি বেগম (২৭) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করেছে পুলিশ। সোমবার ( ৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের কবর থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। জান্নাতি বেগম ওই গ্রামের সোহরাব হোসেনের স্ত্রী।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জসিম উদ্দিন ও সদর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক আলম বাদশা, ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার রহমানসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।

মরদেহ উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর থানার ওসি মাসুদ রানা। তিনি জানান, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হবে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল রহশ্য জানা যাবে।

মামলার সুত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে ভালোবেসে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুক কানুপুর ইউনিয়নের তালুককানুপুর গ্রামের সালজার রহমানের মেয়ে জান্নাতি আকতারের সঙ্গে সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের রোস্তম আলীর ছেলে সোহবার মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে আট বছর ও ছয় বছরের দুইটি সন্তান রয়েছে। চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে জান্নাতি বেগম মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারেন তার বাবা। পরে ঘটনাস্থলে এসে জান্নাতির বাবা জানতে পারেন, জান্নাতি বেগমকে নির্যাতন করে হত্যা করে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা গেছে বলে অপপ্রচার চালিয়ে যায় স্বামীর বাড়ির লোকজন। পরে জান্নাতির বাবা সদর থানার পুলিশকে জানায়। ওই সময় পুলিশ মামলা নিতে অপারকতা প্রকাশ করে। নিরুপায় হয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর জান্নাতির মামা ছকু মিয়া বাদি হয়ে স্বামী সোহরাবসহ পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়।

জান্নাতির বাবা সালজার রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে (জান্নাতি আকতার) ছোট থেকে তাঁর মামার বাড়ি বল্লমঝাড় মধ্যপাড়ায় থাকতেন। এসময় সোহরাবকে ভালোবেসে বিয়ে করে জান্নাতি। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে যৌতুকের জন্য প্রায় নির্যাতন করত স্বামী সোহরাব মিয়া। মেয়েকে নির্যাতের ভয়ে জমি, সোনাদানাসহ অনেক টাকা দিয়েছি। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না, আমার একমাত্র মেয়েটাকে মেরেই ফেলল। আমি এর বিচার চাই।

তিনি আরও বলেন, মেয়েটার নামাজে জানাজাও করতে পারিনি। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যু দেখিয়ে তরিঘড়ি করে রাত ২ টার দিকে মরদেহ দাফন করে।

এদিকে, সোহরাব মিয়ার বাড়ির লোকজনের দাবি, টেলিভিশনের সংযোগ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে গুরুতর আহত হয় জান্নাতি বেগম। তাকে বাচাতে গিয়ে কাকলি বেগম নামের এক গৃহবধু আহত হয়েছিল। পরে জান্নাতিকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ভোরের আকাশ/ সু