logo
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৮:০৩
তিন সাঁওতাল হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
গাইবান্ধা প্রতিনিধি

তিন সাঁওতাল হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় তিন সাঁওতাল হত্যার বিচারসহ ৭ দফা দাবিতে সমাবেশ করেছেন সাঁওতালরা। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঘন্টাব্যাপি গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর সড়কের কাটামোড় এলাকায় এ সমাবেশ করা হয়।

উপজেলার মাদারপুর ও জয়পুর গ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সাঁওতালরা তীর-ধনুক, ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে খন্ড খন্ড মিছিল সমাবেশে যোগ দেয়। সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও আদিবাসী বাঙালী সংহতি পরিষদের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন এএলআরডি নির্বাহী পরিচালক ও মানবাধিকার কর্মী শামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস, লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ সভাপতি বিচিত্রা তিরকি, সাধারণ সমপাদক নরেন চন্দ্র পাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের গাইবান্ধা সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, সদর উপজেলা আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, ভুমি উদ্ধার কমিটির নেতা স্বপন শেখ, মনির হোসেন সুইট, প্রিসিলা মুরমু প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, হত্যাকান্ডের ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত বিচার কাজ শুরু হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে সাঁওতালদের পুনর্বাসনসহ নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। স্বৈরাচার হাসিনা আমাদের ধোঁকা দিয়েছে। যে আন্দোলনে রক্তপাত হয়, সেই আন্দোলন কখনো ব্যার্থ হয় না। নিজের অধিকার আদায় করতে গিয়ে তিন সাঁওতাল জীবন দিয়েছে। তাই এ আন্দোলনও কোন দিন ব্যর্থ হবে না। সাঁওতালদের হত্যার সাথে সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কামাল আজাদ সরাসরি জড়িত ছিল। তারও কোন বিচার হয়নি। জনরোষানলে ৫ অগাস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তার সকল অপকর্মের সাথে দোসরাও পালিয়ে গেছে। কিন্তু কালামের নেতাকর্মীরা এখনও ঘাপটি মারে আছে। ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণের নামে একটি স্বার্থান্বেষী মহল বাপ-দাদার সম্পত্তি থেকে সাঁওতালদের উচ্ছেদের পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। কিন্তু জমি ছাড়া হবে না বলে সমাবেশে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। বক্তারা বিরোধপূর্ণ জমিতে ইপিজেড নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ, তিন সাঁওতাল হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, সাঁওতাল-বাঙালিদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, বাপ-দাদার জমি ফেরতসহ সাত দফা বাস্তবায়ণের দাবি জানান।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে অবস্থিত রংপুর চিনিকল সূত্র জানায়, সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১ হাজার ৮৪২ একর জমি আছে। ওই জমিতে উৎপাদিত আখ রংপুর চিনিকলে মাড়াই হতো। এক সময় সাঁওতালরা এসব জমি দখলে নেয়।

২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমি উচ্ছেদে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ৩ সাঁওতাল নিহত ও অতন্ত ২০ জন আহত হন। এর পর থেকে সাঁওতালরা দফায় দফায় ওই জমি দখল করেন। জমি উদ্ধারে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়। এ পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন অথরিটি (বেপজা) সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম এলাকায় ইপিজেড স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু স্থানীয় সাঁওতালরা সেখানে ইপিজেড না করার জন্য আন্দোলন করছেন।

ভোরের আকাশ/ সু