logo
আপডেট : ২ অক্টোবর, ২০২৪ ১৩:১৯
আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত গাইবান্ধার কৃষকরা
রিফাতুন্নবী রিফাত, গাইবান্ধা

আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত গাইবান্ধার কৃষকরা

উত্তরের জনপদ গাইবান্ধা। সবজির ভান্ডার হিসাবে বিখ্যাত জেলা বলা হয়ে থাকে এ জেলাকে। চলতি মৌসুমে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এ জেলার কৃষকরা। বর্তমানে তারা ক্ষেতে চারা রোপণ ও গাছে আসা সবজি পরিচর্যায় ব্যস্ত, আবার কেউ সবজি বাজারে বিক্রি করছেন।

গাইবান্ধা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গতবছর জেলার সাতটি উপজেলায় শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯৮২৫ হেক্টর। এর মধ্যে অর্জিত হয়েছিল ৮৯৪৭ হেক্টর। চলতি বছর জেলায় সবজি চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০৬০ হেক্টর। ইতি মধ্যেই আগাম অর্জিত হয়েছে ২০০ হেক্টর।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষক পরিবারগুলোতে ব্যস্ততা বেড়েছে। তারা কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে জমিতে চারা রোপণ, পরিচর্যা, আগাছা পরিষ্কার ও পানি দেওয়াসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। ভালো দাম পেতে আগাম শাক-সবজির চাষে ঝুকছেন কৃষকরা। তাই তো এবছর শীত শুরুর আগেই ফুলকপি, মুলা, বাঁধাকপি, পটল, শিম, টমেটো, করোলা, বেগুন ও লাউসহ অন্য শীতকালীন সবজি চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা।

এ জেলার চাহিদা মিটিয়ে শাক-সবজি যাচ্ছে পাশের জেলাগুলোতে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কৃষি কাজে সহযোগিতা করছেন। জেলার সাত উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন শাক-সবজি।

সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর চাঁদকরিম এলাকার কৃষক বাদল মিয়া বলেন, পুরো শীতের সময়েই বাজারে শীতকালীন সবজির চাহিদা থাকে। তবে মৌসুমের শুরুতে শীতকালীন সবজির ভালো দাম পাওয়া যায়। এ কারণে আমরা শীত শুরু হওয়ার আগেই শীতকালীন সবজির আবাদ শুরু করে দিয়েছি। আমি নিজেই প্রায় ২০-২৫ বছর থেকে আগাম শাক-সবজি চাষ করে আসছি। আগাম শাক-সবজি চাষ করলে চড়া দামেই বাজার জাত করা যায়।

সাদুল্লাপুর উপজেলার খোর্দ্দকোমরপুর এলাকার কৃষক চাঁন মিয়া বলেন, সবজি চাষ করে আমার সংসারে স্বচ্ছলতা এসেছে। আমরা এখন স্বাবলম্বী। এখন আমাদের শাক-সবজি বিক্রির জন্য হাটবাজারে যেতে হয় না। ক্ষেত থেকেই পাইকাররা কিনে নিয়ে যায়। দামও ভালো পাওয়া যায়। আমি শীত কালিন প্রায় সব ধরনের শাক-সবজি চাষ করি।

সদর উপজেলার মধ্যমকুমদপুর এলাকার কৃষক কাসেম ব্যাপারী বলেন, চলতি মৌসুমে আমি ১ বিঘা জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করেছি। সবজি চাষে সব মিলিয়ে ৪০-৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাজার চড়া এবং দাম ভালো পেলে ৮০-৮৫ হাজার টাকার মতো বিক্রি করা যাবে। বর্তমানে ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম ভোরের আকাশকে বলেন, এ জেলায় গোল আলু, মিষ্টি আলু, ডাল জাতীয় ফসল বৃদ্ধির কারণে সবজি চাষে কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। আগাম শাক-সবজি উৎপাদনে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে বিধায় কৃষিবিভাগ পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শাক-সবজি চাষে কি ভাবে বৃদ্ধি করা যায় সে লক্ষ্যে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকদের পাশে আছে।

ভোরের আকাশ/ সু