খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় ধীরগতির সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাক্সিক্ষত উন্নয়নের সাথে সাথে প্রশাসনিক, একাডেমিক ও গবেষণা কার্যক্রম সঠিকভাবে চালু করতে সমস্যা তীব্রতর হচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণ, দক্ষ চিকিৎসক তৈরি, স্বাস্থ্য খাতে সর্বাধুনিক উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিক গবেষণায় স্বাস্থ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে ২০২১ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রশাসনিক, আর্থিক ও ক্রয় ব্যবস্থাপনাসহ সামগ্রিক কার্যক্রম অটোমেশনের আধুনিক প্রযুক্তির পদ্ধতিতে উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু গত সাড়ে তিন বছরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস ও একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। জমি অধিগ্রহণ, পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাসসহ অবকাঠামো নির্মাণ এবং জনবল নিয়োগ ও আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় অনিশ্চয়তার মাত্রা দিন দিন বাড়ছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উচ্চশিক্ষার এ প্রতিষ্ঠানের। তবে খুলনার নাগরিক আন্দোলনের নেতারা ও সাধারণ মানুষ সব ষড়যন্ত্র ও জটিলতা অপসারণ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের তিন কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা খুলনার শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, খুলনাবাসীর দীর্ঘ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন আইন পাস হয়। পরে ৩ মে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমানকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। উপাচার্য নিয়োগের ৭ মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা (ফিজিবিলিটি) পরিচালনার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজকে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। ইতোমধ্যেই সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা সম্পন্ন শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করাও হয়েছে। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস ও আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন ও মৌলিক অবকাঠামো নির্মাণে একটি খসড়া প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) ২০২৩ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে দাখিল করা হয়। প্রকল্পে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে আধুনিক ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা; দেশের স্বাস্থ্য খাতে উচ্চশিক্ষা এমডি, এমএস, এফসিপিএসসহ উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করা, রোগীদের জন্য আধুনিকমানের ওয়ান-স্টপ সাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা চালু করা; খুলনা বিভাগের সব মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং কলেজ ও ইনস্টিটিউট এবং সমজাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসা, মানসম্মত স্নাতকোত্তর মেডিকেল শিক্ষা এবং গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাসমূহ নিশ্চিত করা, শিক্ষক, ডাক্তার, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের জন্য উন্নত, আধুনিক, নিরাপদ এবং পরিবেশসম্মত অফিস স্পেস, আবাসন এবং যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করার সামগ্রিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০২৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য ৫০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে বটিয়াঘাটা এলাকায় ১,৮৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত প্লানে পরিমার্জন করে ৩টি প্রকল্পে ভাগ করে প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি করা হয়। প্রথম প্রকল্প প্রস্তাবে ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, প্রশাসনিক ভবনসহ ২টি একাডেমিক ও ০১টি ইউটিলিটি ভবন, সীমানা প্রাচীর ও সংযোগ সড়ক স্থাপন করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। দ্বিতীয় প্রকল্প প্রস্তাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বাসভবনসহ হাসপাতাল নির্মাণ এবং তৃতীয় প্রস্তাবে কর্মকর্তা, কর্মচারী অন্যান্য সবার জন্য আবাসিক ভবনসমূহ নির্মাণের পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পরবর্তীতে ডিপিপি চূড়ান্ত পরিমার্জন করে দাখিল করার পর ২০২৪ সালের ৯ মে একনেক সভায় কিছু শর্তসাপেক্ষে অনুমোদিত হয়। একনেক সভায় শর্তের প্রক্ষিতে প্রকল্প প্রস্তাব পরিমার্জন শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। পরিমার্জিত প্রকল্প অনুমোদনের পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জিও জারি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের কাজ শুরু হবে। প্রথম প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রকল্পের আওতায় হাসপাতালসহ অন্যান্য নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রকিবুল ইসলাম জানান, ২০২১ সালে উপাচার্য নিয়োগের পর বিধি অনুযায়ী ২০ সদস্য বিশিষ্ট সিন্ডিকেট গঠন করা হয়। গত সাড়ে তিন বছরে প্রতি তিন মাসের ব্যবধানে মোট সিন্ডিকেটের ১০টি সভার মাধ্যমে নিয়োগ, ক্রয়সহ সব সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি প্রতিরোধ এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় পরিকল্পনা উন্নয়ন দপ্তরসহ সব দপ্তরের কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২২ সাল থেকে সব ক্রয় কার্যক্রম ই-জিপির মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। যে কারণে দল-মত নির্বিশেষে বিধি মোতাবেক উপযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কোনো তদবির ছাড়াই কাজ পেয়েছে, যা এ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় সর্বাধিক স্বচ্ছ ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের স্বীকৃতি পেয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) মোট ৪৬ জন জনবল নিয়োগের অনুমোদন দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বিধি ও সরকারের নির্দেশিত নীতিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ করে সিন্ডিকেটের অনুমোদনে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে মোট ৪০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। এর আগে ইউজিসির অনুমোদন নিয়ে ২০২২ সালের ১৯ জুন খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. দীন-উল ইসলামকে মেডিসিন অনুষদ, খুলনা মেডিকেল কলেজের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. বাপ্পা গৌতমকে বেসিক সায়েন্স অ্যান্ড প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদ ও খুলনা মেডিকেল কলেজের হেপাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. কুতুব উদ্দীন মল্লিককে নার্সিং অনুষদের অবৈতনিক অনারারি ডিন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ডা. নাসরিন আক্তার জানান, খুলনা মেডিকেল কলেজ, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ, যশোর মেডিকেল কলেজ, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ, মাগুরা মেডিকেল কলেজসহ পাঁচটি সরকারি এবং খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ, খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ, আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ ও আদ-দ্বীন সাকিনা ওমেনস মেডিকেল কলেজসহ চারটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অধিভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া খুলনা সরকারি নার্সিং কলেজ এবং খুলনার মমতা নার্সিং কলেজ, এশিয়ান নার্সিং কলেজ ও নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কলেজ, বাগেরহাটের নার্গিস মেমোরিয়াল নার্সিং কলেজ, মাগুরার ওয়ার্ল্ড নার্সিং কলেজ ও যশোরের নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কলেজসহ ছয়টি বেসরকারি নার্সিং কলেজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এসব মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং কলেজগুলোর জন্য সিন্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমতি সাপেক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুরূপ পরীক্ষার ফিস নির্ধারণ করা হয়েছে। সিস্টেম অটোমেশনের ফলে এখানে সরাসরি নগদ টাকা লেনদেনের যেমন কোনো সুযোগ নেই- তেমনি অনিয়ম ও দুর্নীতিরও কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া পরীক্ষা মূল্যায়ন পদ্ধতি অটোমেশনের ফলে কোনো বিশেষ কলেজ বা পরীক্ষার্থীর প্রতি পক্ষপাতিত্ব ও স্বজনপ্রীতির সুযোগ নেই।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান জানান, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের বিশেষায়িত স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করণ এবং স্বাস্থ্য-সংশ্লিষ্ট গবেষণাকে উৎসাহিত করা এ তিনটি উদ্দেশ্যেকে সামনে নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য একনেকে একটি প্রকল্পও অনুমোদন হয়েছে। এ অনুমোদিত প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে অতিশীঘ্রই জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হবে এবং অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস সৃষ্টির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। স্থায়ী ক্যাম্পাস হলে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিনধাপে ১৮শ’ বেডের একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। যেখানে এ অঞ্চলের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি খুবই সহজলভ্য হবে, যা ঢাকা কিংবা পার্শ্ববর্তী দেশে যে কয়েক লাখ মানুষ চিকিৎসার জন্য ব্যয় সেটি রোধ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ, ভর্তি ও পরীক্ষা কার্যক্রম, ক্রয় ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক সব কিছুই অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে। খুলনাঞ্চলের মানুষের সার্বিক সহযোগিতায় গত প্রায় চার বছরে কেউ কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতার কথা বলতে পারেনি। এ আঞ্চলের মানুষের আশা আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে অর্থ ছাড় ত্বরান্বিত হলে দ্রুতই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবে রূপলাভ লাভ করবে। বিশেষায়িত উচ্চশিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও গবেষণায় এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মডেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
খুলনা সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সদস্য সচিক অ্যাড. বাবুল হাওলাদার জানান, খুলনায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এ অঞ্চলের জন্য চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে এক নতুন দ্বার উন্মোচন হয়েছে। শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্রেই নয়- একটি মাল্টি ডাইমেনশনাল ফ্যাসিলিটি সৃষ্টি হয়েছে। এ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এ অঞ্চলের ভৌগোলিক অবস্থানকে বিবেচনায় নিয়ে বিশেষ করে লবণাক্ততাসহ জলবায়ু ও পরিবেশগত কারণে ভিন্ন মাত্রার রোগের আবির্ভাবের বিষয়ে গবেষণালব্ধ ফলাফল প্রকৃত সমাধানের পথ তৈরি করবে। কিন্তু আমাদের মধ্যে একটি অপসংস্কৃতির চর্চার প্রবণতা রয়েছে, সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে বিগত সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বন্ধ করার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির দিয়ে বিচার করা। শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও আমরা এ ধরনের প্রবণতা দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করছি। তিনি আরও বলেন, বিগত সরকারের নানাবিধ ঠ্যাগ দিয়ে এবং মিথ্যা প্রচারণা করে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার ও কর্মচারীদের হয়রানি ও হেনস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা দুঃখজনক। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদে বিনা বেতনে সম্মানিত অধ্যাপক হিসেবে কাজ করা একজন ডিনকে জোর করে অপসারণ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ঘটনা। আমরা চাই আমাদের খুলনাঞ্চলের স্বার্থের জন্য, দেশের স্বার্থের জন্য, সাধারণ মানুষের স্বার্থের জন্য এ ধরনের প্রকল্প পেয়েও যেন কোনোভাবে হাতছাড়া না হয় এবং খুলনাবাসীর যেন স্বপ্নভঙ্গ না হয়। এ ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলে খুলনাঞ্চলে আর কোনোদিন হবে কিনা সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। খুলনা নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্পসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনূসের কাছে দ্রুত অর্থ ছাড় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবিও জানান তিনি।
ভোরের আকাশ/রন